ছবি: পিটিআই।
রাজ্যে কিছু বিদ্যুতের খুঁটি মজুত আছে। কিন্তু ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় প্রয়োজনের তুলনায় কম। তাই ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা থেকে খুঁটি আনার কথা ভাবছে বিদ্যুৎ দফতর। লোকবল বাড়াতে লকডাউনে বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশায় চলে যাওয়া ঠিকা কর্মীদের কাজে ফেরানোর চেষ্টাও শুরু করেছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা। যাতে ক্ষতিগ্রস্ত জেলায় দ্রুত খুঁটি পুঁতে, টাওয়ার তুলে বিদ্যুতের তার টানার কাজ করা যায় আরও দ্রুত। কারণ ঝড়ে বিদ্যুৎ পরিষেবার যে ক্ষতি হয়েছে, তাতে গ্রামীণ এলাকায় ন্যূনতম পরিষেবাটুকু চালু করাই এখন সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন রাজ্যের বিদ্যুৎ কর্তারা। বিশেষত, ঝড় সরার পাঁচ দিন বাদেও যেহেতু বহু এলাকা অন্ধকারে ডুবে।
আমপান যে বণ্টন সংস্থা ও সিইএসসি-কে কঠিন পরীক্ষার মধ্যে ফেলেছে, তা মানছেন দুই সংস্থার কর্তারাই। ফলে এখনও জল-বিদ্যুৎহীন বহু মানুষের ক্ষোভের মুখে দাঁড়িয়ে কাজের কাজ করতে ব্যর্থ হওয়া ও পরিকল্পনার অভাবের দুর্নাম ঘোচাতে মরিয়া তাঁরা। কলকাতার অনেক জায়গায় বিদ্যুৎ ফেরেনি এখনও। নাগাড়ে প্রশ্ন তুলছেন গ্রাহকেরা। কেন সিইএসসি, বণ্টন সংস্থা বা প্রশাসন আগাম প্রস্তুত ছিল না, কেনই বা এত পরিকল্পনার অভাব? অনেকের অভিযোগ হেল্প লাইনে ফোন করেও দুঃসময় পাওয়া যায়নি কাউকে।
সিইএসসি-র দাবি, তাদের ৯৫% এলাকাতেই বিদ্যুৎ এসেছে। তবে আপাতত প্রাথমিক পরিষেবাটুকু চালু হচ্ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তা পোক্ত করার কাজ শুরু হবে।
পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলিতে কাজের অগ্রগতি নিয়ে এ দিন কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎমন্ত্রী আর কে সিংহ ভিডিয়ো বৈঠকে কথা বলেন দুই রাজ্যের বিদ্যুৎ সচিব-সহ বণ্টন সংস্থাগুলি এবং পাওয়ার গ্রিডের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে। রাজ্যের বিদ্যুৎ দফতরকে সাহায্য করতে এনটিপিসি ও পাওয়ার গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ মন্ত্রককে বাড়তি কর্মী দেওয়ার নির্দেশ
দিয়েছেন সিংহ।
প্রশ্ন যেখানে
• এত বড় ঝড় আসার পূর্বাভাস থাকা সত্ত্বেও তা সামলানোর যথাযথ প্রস্তুতি ছিল না কেন?
• গাছ কাটাই হোক বা বিদ্যুতের লাইন সারানো, কেন আগে থাকতেই বাড়তি কর্মীর ব্যবস্থা করে রাখা হয়নি? বিশেষত করোনার জন্য এমনিতেই যেখানে লোক অনেক কম।
• বিদ্যুৎ সংক্রান্ত অভিযোগ জানাতে হেল্পলাইন আছে, অথচ অনেকেই সেখানে ফোন করে কাউকে পাননি। কারণ কী?
• ভেঙে পড়া গাছ কেটে বা উপড়ে পড়া খুঁটি সরিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ ফেরানোর কাজ পুরসভা ও বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থার একযোগে করাটাই দস্তুর। সেই সমন্বয় ছিল না কেন?
• ১০০ ঘণ্টা পেরিয়ে যাওয়ার পরেও জল-বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে আছে বহু এলাকা, চেষ্টা করলে এই ভোগান্তি কি কমানো যেত না?
রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় জানান, পরিস্থিতি সামলাতে কিছুটা সময় লাগবে। তা-ও চ্যালেঞ্জ নিয়েই কাজ করছেন কর্মীরা। সোমবার আরও কিছু অঞ্চলে বিদ্যুৎ গিয়েছে। কিন্তু দক্ষিণ ২৪ পরগনার জলে ভেসে যাওয়া অঞ্চলগুলির সাবস্টেশনে বিদ্যুৎ দেওয়া যাচ্ছে না।
বিদ্যুতের দাবিতে এ দিনও বিক্ষোভ-অবরোধ হয়েছে বিভিন্ন জেলা ও কলকাতার বহু অঞ্চলে। পরিস্থিতির চাপে কলকাতার কিছু জায়গায় বণ্টন সংস্থা ও সিইএসসি-র কর্মীরা যৌথ ভাবেও কাজ করছেন।
সিইএসসি-র ভাইস প্রেসিডেন্ট (ডিস্ট্রিবিউশন) অভিজিৎ ঘোষ জানান, বিদ্যুৎহীন এলাকায় ওয়ার্ড ধরে কাজ হচ্ছে। আগাম প্রস্তুতি না-থাকার অভিযোগ প্রসঙ্গে সিইএসসি-র দাবি, লাইন সারানোর জন্য অসংখ্য দল তৈরি ছিল। গ্রাহকদের অভিযোগ জানানোর জন্য হেল্পলাইন নম্বরগুলিতেও একসঙ্গে অসংখ্য ফোন গ্রহণের ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু ফোন এত বেশি আসে যে, তাতেও লাভ হয়নি। এ দিন বণ্টন সংস্থারও দাবি, মানুষের ভোগান্তি কমাতে আগাম প্রস্তুত ছিল তারাও। কিন্তু আমপানের তীব্রতায় শেষে তা-ও শেষে কম পড়ে গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy