কেন্দ্রের মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা ভি অনন্ত নাগেশ্বরনের। — ফাইল চিত্র।
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান দফতর জানিয়েছে, গত অর্থবর্ষে দেশের আর্থিক বৃদ্ধি ৭ শতাংশের প্রত্যাশা ছাপিয়ে দাঁড়িয়েছে ৭.২%। শনিবার কলকাতায় বণিকসভা ভারত চেম্বারের সভা মঞ্চ থেকে কেন্দ্রের মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা ভি অনন্ত নাগেশ্বরনের ইঙ্গিত, আসলে ওই হার আরও বেশি হতে পারে। তাঁর দাবি, অর্থবর্ষে বৃদ্ধির হিসাব কষা হয় ছ’দফায় প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী আপাতত ৭.২% বৃদ্ধির হার (প্রভিaশনাল) প্রকাশিত হয়েছে। আরও অনেক পরিসংখ্যান সামনে আসার পরে সংশোধিত হতে হতে গত বারের আর্থিক বৃদ্ধির চূড়ান্ত হার জানা যাবে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে। যেটা ৭.২ শতাংশের তুলনায় বেশি হবে বলেই তাঁর বিশ্বাস।
বিজেপি তার পর থেকেই পূর্বাভাস ছাপানো বৃদ্ধিকে তাদের সাফল্য হিসাবে প্রচার করছে। তবে বিরোধী এবং অর্থনীতিবিদদের একাংশের মতে, বাস্তবে মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্বে ভুগে অর্থনীতির হাল বেশ খারাপ। সম্প্রতি অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসুও দাবি করেন, ৭.২% বৃদ্ধি দেখতে ভাল লাগলেও আসলে হতাশাজনক। কারণ যার উপরে পা রেখে এই তুলনা, সেই ভিতটাই নিচু ছিল। তাঁর ইঙ্গিত, প্রকৃত বৃদ্ধি অনেক কম। এ দিন নাগেশ্বরন বলেন, গত অর্থবর্ষের অক্টোবর-ডিসেম্বরের বৃদ্ধি ৪.৫ শতাংশে নেমেছিল তার আগের অর্থবর্ষে সংশোধিত উঁচু বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে। ফলে জানা ছিল, পরের তিন মাসে তা বাড়বে। মুখ্য উপদেষ্টার কথায়, ‘‘সেটাই হয়েছে। পূর্বাভাস ছাপিয়ে জানুয়ারি-মার্চের (গত অর্থবর্ষের চতুর্থ ত্রৈমাসিক) বৃদ্ধিও ছুঁয়েছে ৬.১%।’’
তিনি বলেন, ‘‘বিশ্বে ভারতের আর্থিক অগ্রগতিই দ্রুততম। অতিমারির পরে গত অর্থবর্ষ থেকে বৃদ্ধির চাকা ঘুরতে শুরু করেছে। পণ্য ও পরিষেবার রফতানি বাণিজ্যও জিডিপির ২৩.৫% ছিল। যা ২০১৫-র পরে সর্বোচ্চ। বৃদ্ধির জরুরি উপাদানগুলির উন্নতি স্পষ্ট হচ্ছে চলতি অর্থবর্ষের গোড়া থেকে।’’ তবে চলতি অর্থবরষে ৬.৫% বৃদ্ধির পূর্বাভাস প্রসঙ্গে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের সঙ্গে একমত তিনি। সংশ্লিষ্ট মহলের প্রশ্ন, সব কিছু ছন্দে ফেরার পরেও ৬.৫% কম নয় কি?
দেশে বেকারত্বও দ্রুত কমছে, দাবি নাগেশ্বরনের। বলেছেন, এক সময়ে তা ২০% হয়েছিল। এখন নেমেছে ৬.৮ শতাংশে। এই প্রসঙ্গে পিএফ তহবিলে দেয় অঙ্কের পরিমাণ বৃদ্ধিকে প্রমাণ হিসাবে তুলে ধরেন তিনি। দাবি করেন, চাকরির নিরাপত্তাও বেড়েছে। এ দিনই উপদেষ্টা সংস্থা সিএমআইই-র দাবি, কাজ খোঁজার ভিড় কমেছে। তাই মে মাসে বেকারত্বের হার কমে হয়েছে ৭.৭%। সম্প্রতি বিশ্ব ব্যাঙ্ক প্রকাশিত ২০২২ সালে বেকারত্বের পরিসংখ্যানে দেখা গিয়েছে, যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে বেকারত্ব চড়া যে সব দেশে, ২৩.২% হার নিয়ে তার অন্যতম ভারত। কৌশিকের মতো অর্থনীতিবিদও বলেছেন, অর্থনীতি সার্বিক ভাবে বাড়ছে ঠিকই। তবে সেটা একাংশের হাত ধরে। কিছু ধনী আরও বিত্তবান হচ্ছেন বলে। বাকিরা কার্যত ‘মন্দায়’। বেকারত্বের সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান দেশের বড় অংশে থেমে যাওয়া বৃদ্ধিকেই প্রকট করছে।
যদিও নাগেশ্বরনের মতে, সংস্থাগুলি ভাল ফল করছে। শহর-গ্রামে বাড়ছে চাহিদা। তৈরি হয়েছে লগ্নির পরিসর। ব্যাঙ্কও ঋণ দিতে প্রস্তুত। ফলে দ্রুত লগ্নি বাড়বে দেশে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy