খাদ্যপণ্যের পাইকারি মূল্যবৃদ্ধির হার মার্চের ৫.৪৮% থেকে কমে ৩.৫৪% হয়েছে। প্রতীকী ছবি।
এপ্রিলে দেশের খুচরো বাজারে মূল্যবৃদ্ধির হার ৪.৭০ শতাংশে নামার খবর আগেই এসেছিল। সোমবার কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রক জানাল, গত মাসে পাইকারি বাজারে সেই হার শুধু কমেনি, নেমেছে শূন্যের নীচে (-০.৯২%)। অর্থাৎ, গত বছরের এপ্রিলের তুলনায় জিনিসপত্রের পাইকারি দাম সরাসরি কমেছে বা মূল্যহ্রাস হয়েছে। প্রায় তিন বছর পরে এমন ঘটল। ২০২০ সালের জুনে এই হার ছিল -১.৮১%। তবে সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, গত বছর একই সময়ে তা ১৫.৩৮% ছিল। এত উঁচু ভিতের নিরিখে এই উন্নতি অপ্রত্যাশিত নয়। তবু কিছুটা স্বস্তির। গত মার্চে ওই হার ১.৩৪% ছিল।
বিশেষজ্ঞ মহলের ব্যাখ্যা, দীর্ঘ দিন পরে টানা দু’মাস খুচরো মূল্যবৃদ্ধির হার রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক নির্ধারিত সহনসীমার নীচে রয়েছে। এখন তা ১৮ মাসের সর্বনিম্ন। পাশাপাশি, পাইকারি মূল্যবৃদ্ধির হার জমি ছুঁয়েছে। তা ৩৪ মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম। টানা ১১ মাস নিম্নমুখী। বিশ্ব বাজারে কাঁচামালের দাম কমার ফলে আগামী দু’তিন মাস এই হার নিচু থাকারই সম্ভাবনা। সে ক্ষেত্রে খুচরো বাজারেও তার প্রভাব পড়ার কথা। সেই মূল্যবৃদ্ধি শীর্ষ ব্যাঙ্কের ৪ শতাংশের লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি নামারও সম্ভাবনা রয়েছে। যদি সত্যিই তা হয় তবে আরও কিছুটা স্বস্তি ফিরবে সাধারণ মানুষের জীবনে। এই প্রসঙ্গে তাদের আরও বক্তব্য, মূল্যবৃদ্ধি কমায় অনেক দিন পরে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের শেষ ঋণনীতি কমিটির বৈঠকে সুদের হার অপরিবর্তিত রেখেছিলেন সদস্যেরা। ৬-৮ জুন আগামী বৈঠক হওয়ার কথা। প্রয়োজনে সুদ বৃদ্ধির রাস্তা খোলা রাখার কথা বলা হলেও এপ্রিলে বাজার কিছুটা ঠান্ডা হওয়ায় সেই বৈঠকেও তেমন সম্ভাবনা কার্যত নেই। সে ক্ষেত্রে শিল্পের পুঁজি সংগ্রহের খরচও নতুন করে মাথা তুলবে না। বিশেষ করে শিল্পবৃদ্ধির হার ১৮ মাসের তলানিতে পৌঁছনোয় তা গুরুত্বপূর্ণ।
এ দিন কেন্দ্র জানিয়েছে, ধাতু, খাদ্যপণ্য, খনিজ তেল, বস্ত্র, রাসায়নিক ও রাসায়নিক পণ্য এবং কাগজ ও কাগজজাত পণ্যের দাম কমা পাইকারি মূল্যবৃদ্ধিকে মাথা নামাতে সাহায্য করেছে। সরকারি পরিসংখ্যানে আরও জানানো হয়েছে, খাদ্যপণ্যের পাইকারি মূল্যবৃদ্ধির হার মার্চের ৫.৪৮% থেকে কমে ৩.৫৪% হয়েছে। দাম কমেছে আনাজ (-১.৫০%), আলু (-১৮.৬৬%), পেঁয়াজ (-১৮.৪১%), গম, ফল, দুধ, মাছ, মাংস এবং ডিমের। জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির হার ৮.৯৬% থেকে কমে হয়েছে ০.৯৩%। তৈরি পণ্যের দাম ২.৪২% কমেছে।
ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের আশা, এ বার বর্ষা ভাল হতে পারে। তাতে কৃষি উৎপাদন ভাল হলে আগামী কয়েক মাসে বাজারে জিনিসপত্রের দাম আরও কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসতে পারে। তবে অন্য অংশের সতর্কবার্তা, তীব্র তাপপ্রবাহের আশঙ্কা এখনও কাটেনি। দামে তার বিরূপ প্রভাব এখনও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy