রাজ্যে বড় শিল্প স্থাপনের জন্য পরিকাঠামো, জমি, যোগাযোগ ব্যবস্থা ততটা উন্নত নয় বলে দীর্ঘদিনের অভিযোগ শিল্পমহলের একাংশের। এ বার সেই পরিকাঠামো উন্নয়নের লক্ষ্যে একাধিক বৃহৎ প্রকল্প হাতে নিয়েছে রাজ্য। এর মধ্যে দু’টির জন্য এডিবি এবং বিশ্ব ব্যাঙ্কের থেকে সহজ সুদে প্রায় ৪৭৩০ কোটি টাকা ঋণ নিচ্ছে সরকার। বাকি প্রায় ১৭০০ কোটি রাজ্য নিজে দেবে। পশ্চিমবঙ্গ শিল্পোন্নয়ন নিগমের এক কর্তা জানান, প্রকল্প দু’টি কেন্দ্রের ছাড়পত্রের অপেক্ষায় রয়েছে। আশা, দেড়-দু’মাসে তা মিলবে। এর মধ্যে প্রথমটি বিশ্ব ব্যাঙ্কের সহায়তায় পশ্চিমবঙ্গ বুস্টিং লজিস্টিক এফিসিয়েন্সি অ্যান্ড ট্রেড ফেসিলিটেশন প্রোগ্রাম। দ্বিতীয়টি এডিবি-র সাহায্যে রাজ্যে একাধিক আর্থিক করিডর তৈরি।
প্রথম প্রকল্পে রাজ্যের সংস্থাগুলি যাতে কম খরচে পণ্য পরিবহণ করতে পারে, সে জন্য পরিকাঠামো তৈরি করা হবে। যার অন্যতম পর্যাপ্ত সংখ্যায় উন্নত ধরনের গুদাম ও হিমঘর তৈরি। সেগুলি যাতে পরিবেশ সহায়ক হয় এবং সর্বোচ্চ ক্ষমতায় ব্যবহার করা যায়, সেই চেষ্টা করা হবে। পশ্চিমবঙ্গের ভিতরে ও ভিন্ রাজ্যে পণ্য পরিবহণে যাতে সমস্যা না হয়, তা-ও দেখা হবে। প্রকল্পের খরচ প্রায় ২০৭৩ কোটি টাকা। বিশ্ব ব্যাঙ্ক দেবে প্রায় ১২৪৪ কোটি টাকা। রাজ্য ৮২৯ কোটি।
এ দিকে রাজ্যে ছ’টি আর্থিক করিডর তৈরির কথা আগেই বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এর মধ্যে ৪টির প্রাথমিক খরচ ধরা হয়েছে ৪৪০০ কোটি টাকা। এডিবি দিচ্ছে ৩৪৮৫ কোটি। বাকিটা রাজ্যের। করিডরগুলি তৈরি হলে লক্ষাধিক মানুষ কাজ পেতে পারেন। নিগম সূত্রের খবর, এর পরিকল্পনা কেন্দ্রের কাছে ছাড়পত্রের জন্য পাঠানো হয়েছে। আশা, শীঘ্রই তা মিলবে।
শিল্পমহলের একাংশের মতে, বিশ্ব ব্যাঙ্ক ও এডিবি-র টাকা নিয়ে প্রকল্প দু’টি সফলভাবে বাস্তবায়িত করা গেলে সেগুলি শিল্প পরিকাঠামোর দিক দিয়ে রাজ্যকে অনেকটাই এগিয়ে দেবে। এই প্রকল্প দেখে অনেক বেসরকারি সংস্থাও লগ্নিতে আগ্রহী হবে বলে মত নিগমের কর্তাদের।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)