—প্রতীকী ছবি।
বছর ঘুরলেই লোকসভা নির্বাচন। তার ঠিক আগে পেট্রল-ডিজ়েলের দাম কমার সম্ভাবনার কথা শোনা যাচ্ছে রাজধানীর ক্ষমতার অলিন্দে কান পাতলেই।
আজ দীর্ঘদিন ধরেই বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের (ব্রেন্ট ক্রুড) দর ব্যারেলে ৮০ ডলারের নীচে। এক সময়ে যা পৌঁছে গিয়েছিল ১২০ ডলারের আশেপাশে। সরকারি সূত্রের খবর, এই ‘সুযোগের সদ্ব্যবহার’ করেই ভোটের মুখে দাম কমতে পারে জ্বালানি তেলের। যার ‘সেঞ্চুরি’ পার দরে অনেকদিন ধরেই নাভিশ্বাস সাধারণ মানুষ, কেন্দ্রকে নিশানা করছেন বিরোধীরাও। সূত্রের দাবি, উৎপাদন শুল্ক ছাঁটাই করলেই লিটারে তেলের দাম কমতে পারে অন্তত ৪ থেকে ৬ টাকা। এ নিয়ে ইতিমধ্যে কথাও হয়েছে তেল ও অর্থ মন্ত্রকের। এই ভাবনার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দফতরও অবহিত বলে সূত্রের দাবি।
দেশে ২০২২ সালের ২২ মে শেষ বার সামান্য কমেছিল পেট্রল-ডিজ়েলের দাম। কিন্তু তার পরেও কলকাতা-সহ সারা দেশের বাজারে দু’টি জ্বালানির দামই এখনও যথেষ্ট চড়া। পেট্রলের লিটার ১০০ টাকার উপরে। ডিজ়েল ৯০ টাকার বেশি। অথচ বিশ্ব বাজারে যে অশোধিত তেলের (ব্রেন্ট ক্রুড) দামকে দেশে জ্বালানির চড়া দরের জন্য দায়ী করে কেন্দ্র, তার ব্যারেল এ বছরের বেশির ভাগ সময় জুড়েই ৮০ ডলারের নীচে। এক-এক সময়ে তা ৭০-৭২ ডলারেও ঠেকেছে। কিন্তু দেশের মানুষ তার কোনও সুবিধা পাননি। তেলের দর কমাতে এক পয়সাও শুল্ক ছাঁটাইয়ের ব্যবস্থা করেনি মোদী সরকার।
উল্টে বিশেষজ্ঞেরা সতর্ক করেছেন যে, চড়া তেলের দর ঠেলে তুলেছে মূল্যবৃদ্ধিকে। অনেকে মনে করেছিলেন, সম্প্রতি হওয়া পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটের আগে হয়তো সুরাহা মিলবে। বাস্তবে তা হয়নি। ফলে তেল-গ্যাসের দাম নিয়ে ক্ষোভ বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে সরকারি সূত্রের ইঙ্গিত, নতুন বছরে সেগুলির উপরে উৎপাদন শুল্ক ছাঁটাই করে তেলের দাম কমানোর ব্যবস্থা করতে পারে কেন্দ্র। সে ক্ষেত্রে লিটার পিছু দর কমতে পারে ৪-৬ টাকা। বিরোধী শিবিরের কটাক্ষ, ভোটের আগে হাজার টাকা পেরনো রান্নার গ্যাসের দাম মাত্র ২০০ টাকা কমানোর রাস্তায় হেঁটেছে কেন্দ্র। এ বার দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ব বাজারে সস্তায় বিকোনো অশোধিত তেলের সুবিধার নামমাত্র ভোটের মুখে আমজনতার ঘরে পৌঁছে ফের কৃতিত্ব নিতে চাইছে তারা। অথচ সুবিধা হিসাবে মানুষ যা পাচ্ছেন, সেটা মূল্যবৃদ্ধির নিরিখে কিছুই নয়। এখনও গ্যাসের সিলিন্ডার হাজার টাকার কাছাকাছি (কলকাতায় ৯২৯ টাকা)।
তেলের দাম বিনিয়ন্ত্রণের পরে তেল-গ্যাস সংস্থাগুলিই বাজারের গতিপ্রকৃতির নিরিখে দর স্থির করে। কিন্তু উৎপাদন শুল্ক ছাঁটাই কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত। তা ছাড়া, এর আগে যে ভাবে বিভিন্ন সময়ে নানা রাজ্যে ভোটের মুখে তেলের দর কমেছে কিংবা দীর্ঘদিন থমকে থেকেছে, তাতে সরকারি অঙ্গুলিহেলনের সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না বলে বিরোধী শিবিরের অভিযোগ। সরকারি সূত্রের খবর, এ বারও ভোটের আগে তেলের দর কমানোর বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মহলে আলোচনা চলছে। সেই বোঝা সরকার ও তেল সংস্থাগুলির মধ্যে সমান ভাবে ভাগ করারও প্রস্তাব রয়েছে। তেল ও অর্থ মন্ত্রক এ নিয়ে আলোচনার পরে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের কাছে বিভিন্ন সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে। মূল্যবৃদ্ধিতে আরও লাগাম পরাতে লিটার পিছু শুল্ক ছাঁটাই ১০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে বলেও চর্চা বিভিন্ন মহলে। যদিও এ নিয়ে সরাসরি কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি এখনও।
বছর দুয়েক আগে পেট্রল-ডিজ়েলের দাম ১০০ টাকা পেরিয়ে গড়েছে সর্বকালীন নজির। কলকাতায় জ্বালানি দু’টির দর (আইওসির পাম্প) বিভিন্ন সময়ে ওঠে যথাক্রমে ১১৫.১২ ও ১০১.৫৬ টাকা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy