Advertisement
৩০ অক্টোবর ২০২৪
Use of Plastic Sacks

শস্যের জন্য প্লাস্টিকের বস্তা, ক্ষোভ চট শিল্পের

খাদ্যশস্য মোড়কজাত করার ক্ষেত্রে ১০০ শতাংশই চটের বস্তা ব্যবহার আইনত বাধ্যতামূলক। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনায় যোগ্য ব্যাক্তিদের ১০ কেজির বস্তায় খাদ্যশস্য দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোদী সরকার।

An image of sack

—প্রতীকী চিত্র।

প্রজ্ঞানন্দ চৌধুরী
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০২৪ ০৮:৫৯
Share: Save:

নির্দিষ্ট আইন রয়েছে। সেই আইনের বলে নতুন ব্যবসার সুযোগ তৈরি হতে পারে চট শিল্পে। বাড়তে পারে কাজ। কিন্তু ইন্ডিয়ান জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (আইজেএমএ) দাবি, শস্য রাখার জন্য কেন্দ্র চটের বদলে প্লাস্টিক বস্তার বরাত দিচ্ছে। নতুন ব্যবসা হারানোর অভিযোগ করে ক্ষুব্ধ চটকল মালিকদের সংগঠনটি কেন্দ্রীয় শিল্প-বাণিজ্য ও বস্ত্রমন্ত্রী পীযূষ গয়ালকে চিঠি দিয়েছে। যদিও কেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, চাহিদামতো সেই ছোট মাপের বস্তা জোগানোর ক্ষমতা আপাতত নেই চটকলগুলির। চটশিল্পের পাল্টা দাবি, যতটুকু ক্ষমতা রয়েছে নিয়ম মেনে সেটুকু বরাত দিতেই বা আপত্তি কোথায়? তাতে কর্মসংস্থানের সুযোগও বাড়তে পারে। এই শিল্পে প্রযোজ্য আইনি সুরক্ষা কবচের তা হলে আর অর্থ কী?

খাদ্যশস্য মোড়কজাত করার ক্ষেত্রে ১০০ শতাংশই চটের বস্তা ব্যবহার আইনত বাধ্যতামূলক। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনায় যোগ্য ব্যাক্তিদের ১০ কেজির বস্তায় খাদ্যশস্য দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোদী সরকার। এ জন্য প্রতি ছ’মাস অন্তর ২০.৩ কোটি ছোট বস্তা প্রয়োজন হবে। কিন্তু প্রথম দফার জন্য চটের বদলে প্লাস্টিকের বস্তার বরাত দিয়েছে খাদ্যমন্ত্রক।

এই প্রসঙ্গে জুট কমিশনার মলয়চন্দন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সরকার খাদ্যশস্যের মোড়কের ক্ষেত্রে ১০০% চটের বস্তা ব্যবহারেরই পক্ষে। কিন্তু ১০ কেজি শস্যের মোড়কের জন্য যে পরিমাণ ছোট বস্তা প্রয়োজন, তা সরবরাহ করার ক্ষমতা আপাতত চটকলগুলির নেই। তাই প্লাস্টিকের বস্তা ব্যবহারের প্রয়োজন পড়ছে।’’ এখনই ওই ছোট বস্তা চাহিদা অনুযায়ী জোগানের ব্যাপারে অনিশ্চয়তার কথা মানছেন আইজেএমএ-র চেয়ারম্যান রাঘবেন্দ্র গুপ্ত ও প্রাক্তন চেয়ারম্যান সঞ্জয় কাজারিয়া। কিন্তু তাঁদের দাবি, আপাতত পাঁচ কোটি বস্তার জোগান দিতেই পারে চটকলগুলি। রাঘবেন্দ্র বলেন, ‘‘আমরা জুট কমিশনারকে জানিয়েছিলাম, আপাতত সেই পরিমাণ বস্তার জোগান দিতে পারব। তার পরে কিছু দিনের মধ্যেই চটকলগুলির উৎপাদন ক্ষমতা বাড়িয়ে পুরো চাহিদাই মেটানো সম্ভব হবে। কিন্তু খাদ্যমন্ত্রক সেই আর্জিতে কর্ণপাত না করে প্রথম দফার বরাতের পুরোটাই প্লাস্টিকের বস্তা (২০ কোটি) ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’’ সঞ্জয় বলছেন, ‘‘কেন্দ্রের আইন চট শিল্পে নতুন কাজের সুযোগ খুলে দিতে পারে। আপাতত চটকলগুলির ক্ষমতা অনুযায়ী জোগানের পরে বাকিটা প্লাস্টিকের বস্তায় মেটানো হলে আপত্তি নেই। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী এই সুবিধা পরেও চট শিল্পেরই পাওয়া উচিত। শুধু তার প্রস্তুতির জন্য কিছুটা সময় প্রয়োজন। নতুন যন্ত্র বসানোর পাশাপাশি নতুন কর্মীও নিয়োগ করতে হবে।’’

মালিকপক্ষের বক্তব্য, এমনিতেই চটকলের নানা সমস্যা রয়েছে। সম্প্রতি বেড়েছে কর্মীদের বেতন। সেই সঙ্গে এ বার পাটের ফলন খুব ভাল হওয়ায় বাজারে ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের (এমএসপি) থেকে কম দামে মিলছে কাঁচা পাট। চাষিদের প্রাপ্য পাটের দামের নিশ্চয়তার জন্য জুট কমিশনার এমএসপির কমে বাজারে পাট বিক্রি বেআইনি ঘোষণা করেছেন। এই পরিস্থিতিতে চটের বস্তার অতিরিক্ত বরাত পেলে শুধু চটকলগুলিই উপকৃত হবে তা নয়, পাটের দাম বাড়লে চাষিরাও লাভবান হবেন।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE