Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
Pijush Goyal

মন্ত্রীর পরামর্শে মন ভাঙল আবাসন শিল্পের

চাহিদার অভাবে নির্মাতারা যখন বিপর্যস্ত, তখন সেই সমস্যার দাওয়াই না-বাতলে খোদ মন্ত্রী এই বার্তা দিলেন কী করে!

পীযূষ গয়াল। ফাইল চিত্র

পীযূষ গয়াল। ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা 
নয়াদিল্লি ও কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০২০ ০৪:৫৩
Share: Save:

চাহিদা চাঙ্গা হওয়ার আশায় অনন্তকাল অপেক্ষা করে লাভ নেই। কারণ, সেই সম্ভাবনা আপাতত দূর অস্ত্। তেমন সুবিধা হবে না নতুন করে সরকারি ছাড়ের প্রত্যাশায় থেকেও। তার বদলে বরং আগে তৈরি বাড়ি বা ফ্ল্যাট কিছুটা কম দামে বেচে ব্যাঙ্কের ধার শোধ করুন আবাসন নির্মাতারা। ওই ঋণের বোঝা ঘাড় থেকে নামিয়ে হাত দিন নতুন প্রকল্পে। করোনা পরবর্তী অধ্যায়ে সমস্যার গলা জলে ডুবে থাকা আবাসন শিল্পকে টেনে তুলতে নির্মাতাদের এই পরামর্শই দিলেন কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়াল।

মন্ত্রীর মন্তব্যে ক্ষুব্ধ নির্মাণ শিল্প মহল। তারা বলছে, চাহিদার অভাবে নির্মাতারা যখন বিপর্যস্ত, তখন সেই সমস্যার দাওয়াই না-বাতলে খোদ মন্ত্রী এই বার্তা দিলেন কী করে! এ রাজ্যে ক্রেডাইয়ের অন্যতম কর্তা সুশীল মোহতা বলেন, ‘‘দাম কমিয়েই ফ্ল্যাট বিক্রি করা হচ্ছে। মন্ত্রী নিজে চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট হয়ে এমন মন্তব্য করলেন! এটা দুর্ভাগ্যজনক।’’ তাঁর মতে, গৃহঋণে সুদ কমানোর ব্যবস্থা করে, আরও ছাড়ের সুবিধা দিয়ে সরকারকেই চাহিদা তৈরি করতে হবে।

নোটবন্দির পর থেকেই বাড়ি-ফ্ল্যাটের চাহিদায় ভাটার কথা বারবার বলেছে আবাসন শিল্প। জানিয়েছে, তুলনায় কম দামের ফ্ল্যাট যা-ও বা বিক্রি হচ্ছে, জোর ধাক্কা খেয়েছে বেশি দরেরগুলি। দিল্লি লাগোয়া নয়ডা হোক বা কলকাতার রাজারহাট— বিভিন্ন শহরেই উপচে পড়ছে তৈরি হয়েও বিক্রি না-হওয়া ফ্ল্যাট। করোনা হানার পরে সঙ্কট বেড়েছে বহু গুণ। ঋণে সুদ কমলেও, অর্থনীতির এই টালমাটাল সময়ে লম্বা মেয়াদের গৃহঋণ নিতে ভরসা পাচ্ছেন না অনেকে। রাজি হচ্ছেন না জমানো টাকা ঢালতে। কিন্তু পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এত কিছু সত্ত্বেও বাড়ি-ফ্ল্যাটের দাম সে ভাবে কমেনি।

আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থাকে সরবরাহ এলাকা বৃদ্ধির পরামর্শ মমতার

এই প্রসঙ্গেই আবাসন নির্মাতাদের সঙ্গে ভিডিয়ো-আলাপচারিতায় মন্ত্রী বলেছেন, ‘‘অনেকে হয়তো মনে করছেন, সরকার এমন ভাবে আর্থিক সহায়তা দেবে যে, তার জোরে আরও অনেক দিন দাম চড়ার অপেক্ষায় ধরে রাখা যাবে বিক্রি না-হওয়া বাড়ি, ফ্ল্যাট। কিন্তু (বুঝে নেওয়া ভাল) খুব দ্রুত চাহিদা চাঙ্গা হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় নেই।… তাই বিক্রি করাই বোধহয় বুদ্ধিমানের কাজ।’’

পীযূষের বক্তব্য, অনেকে প্রত্যাশিত দরের তুলনায় কিছুটা কম দামে ফ্ল্যাট বেচেছেন। তাতে মিটিয়েছেন ব্যাঙ্কের ঋণ। নিষ্কৃতি পেয়েছেন সঙ্কট থেকে। এখন সামনের প্রকল্পে মন দিতে পারবেন। কিন্তু যাঁরা দাম বৃদ্ধির আশায় তৈরি ফ্ল্যাট ধরে রাখছেন, ভবিষ্যতে ধার মেটাতে সমস্যায় পড়তে পারেন।

ক্রেডাইয়ের আর এক কর্তা হর্ষবর্ধন পটোডিয়ার দাবি, কলকাতার বাজার সম্পর্কে এই মন্তব্য প্রযোজ্য নয়। কারণ কলকাতা ফাটকাবাজদের বাজার নয়। এখানে দাম কমই থাকে।

লকডাউন ওঠার পরে অধিকাংশ ক্রেতা যে তৈরি ফ্ল্যাটই কিনতে চাইবেন, তা-ও মনে করিয়েছেন পীযূষ। নির্মাতাদের বলেছেন, প্রকল্প শেষ করে ফ্ল্যাট বিক্রির চেষ্টা করতে। যাতে ক্রেতার টাকা আটকে না-থাকে। মন্ত্রী এ কথা বলার পরে সত্যিই ফ্ল্যাটের দাম কমবে কি না, তা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা। তবে দর কমলেও, অর্থনীতির এই টালমাটাল সময়ে ক’জন নতুন বাড়ি-ফ্ল্যাট কেনার সাহস দেখাবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই।

আরও পড়ুন: দ্রুত এগোতে এ বার ব্লক ধরে বৈঠক

অন্য বিষয়গুলি:

Pijush Goyal Business Finance
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy