Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
State Government

অচলাবস্থার মুখে ক্যাল-টেল, দ্বারস্থ রাজ্যের

আমপানের ধাক্কায় অন্যান্য টেলি সংস্থার মতো বেহাল হয়েছিল তাদের পরিষেবাও।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০২০ ০৬:২৫
Share: Save:

ঠিকাদার নিয়োগের নতুন পদ্ধতিকে ঘিরে প্রায় অচলাবস্থা তৈরি হওয়ার জোগাড় বিএসএনএলের শাখা ক্যালকাটা টেলিফোন্সে (ক্যাল-টেল)। কলকাতা, হাওড়া, হুগলি ও দুই ২৪ গরগনার একাংশে যারা টেলিফোন পরিষেবা দেয়।

আমপানের ধাক্কায় অন্যান্য টেলি সংস্থার মতো বেহাল হয়েছিল তাদের পরিষেবাও। এখনও প্রচুর লাইন খারাপ হয়ে পড়ে রয়েছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, তাঁরা গ্রাহক স্বার্থে সময় মেনে মেরামতির নতুন নিয়ম চালু করতে চাইলেও, বাধা দিচ্ছেন ঠিকা কর্মীদের একাংশ। তাঁরা কাজে যাচ্ছেন না। এক্সচেঞ্জ বন্ধ করে দিচ্ছেন। স্থায়ী কর্মী-অফিসারেরা হেনস্থা ও নিগ্রহের মুখে পড়ায়, অনেকে কাজ ছাড়তে বা বদলি হতে চাইছেন। এমন চললে পরিষেবা দেওয়া নিয়েই সংশয় প্রকাশ করে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিবকে চিঠি দিয়েছেন ক্যাল-টেল কর্তৃপক্ষ।

তবে হেনস্থা করা, নিগ্রহ ও এক্সচেঞ্জ বন্ধ করার অভিযোগ অস্বীকার করেছে ঠিকা কর্মীদের ডান-বাম, সব সংগঠনই। তাদের পাল্টা অভিযোগ, বিএসএনএল ১৪ মাসের বকেয়া বেতন মেটায়নি ঠিকাদারদের। আবার ছাঁটাইয়েরও ছক কষছে। ঠিকা কর্মীদের দাবি, তাঁদের নিয়োগের নয়া বিধি এলে কর্মী অনেক কমবে। আয় হবে অর্ধেক। কাজে ঝুঁকি সত্ত্বেও পিএফ, ইএসআইয়ের সুবিধা মিলবে না। তাই বকেয়া বেতন, গ্র্যাচুইটি ইত্যাদি না-পেলে ওই নিয়মের বিরুদ্ধে আন্দোলন চলবে। অনেকে না-ও যেতে পারেন কাজে।

আর্থিক সঙ্কট ও গ্রাহক পরিষেবার মান নিয়ে অভিযোগে জেরবার বিএসএনএল স্থায়ী কর্মীদের একাংশকে স্বেচ্ছাবসর দেওয়ার পাশাপাশি অস্থায়ী ও ঠিকা কর্মী কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল গত বছর। ঠিকা কর্মীদের অনেক দিনের বেতন বাকি। এক মাস বকেয়া স্থায়ীদের। কাটছাঁট হয়েছে অন্য কিছু সুবিধাও।

এই অবস্থায় খারাপ লাইন সারাতে দেরি হচ্ছে বলে অভিযোগ গ্রাহকদের। তাঁদের ধরে রাখতে তাই নতুন করে ঠিকাদার নিয়োগের ক্ষেত্রে সময় বেঁধে দিচ্ছে বিএসএনএল। যেমন, অভিযোগ জানানোর ১২ ঘণ্টার মধ্যে ল্যান্ডলাইন সারাতে হবে বা ৮ ঘণ্টার মধ্যে সাধারণ ব্রডব্যান্ড। না-পারলে জরিমানা হবে ঠিকাদারের। ক্যাল-টেলের গোটা এলাকাকে ৩১টি ক্লাস্টারে ভেঙে ঠিকাদার নিয়োগ হচ্ছে। এর মধ্যে ৮টিতে নিয়োগ চূড়ান্ত।

ক্যাল-টেলের সিজিএম বিশ্বজিৎ পালের বক্তব্য, ল্যান্ডলাইন ১৫ লক্ষ থেকে নেমেছে ৪ লক্ষে। তাই সব স্তরেই কর্মী কমেছে। তবে পুরনো ঠিকা কর্মীদের কাজে রাখাকে অগ্রাধিকার দিতে বলছেন তাঁরা। বকেয়া বেতনের কথা মানলেও, বিশ্বজিৎবাবুর দাবি, ২০১৯ সালের জুন থেকে ঠিকাদারেরা কর্মীদের প্রাপ্য টাকার বিলই জমা দেননি। যদিও ধাপে ধাপে টাকা মেটানোর আশ্বাস দেন তিনি। বলেন, এ বার নতুন নিয়মে বেতন দেবে কর্পোরেট অফিস।

তাঁর দাবি, শুধু ক্যাল-টেলেই নয়, এই নতুন নিয়ম কেরল, তামিলনাড়ু, গুজরাত, অন্ধ্রপ্রদেশের মতো সব সার্কলেই চালু হচ্ছে। কেরলে ঠিকা কর্মীর সংখ্যা ৯০০০ থেকে কমে এখন হয়েছে প্রায় ৩০০০। সর্বত্রই বেতন দীর্ঘ দিন বকেয়া।

ঠিকা কর্মীদের তৃণমূল সমর্থিত ইউনিয়নের সম্পাদক পাপ্পু চৌধুরি ও বাম ইউনিয়নের সম্পাদক অরূপ সরকারের পাল্টা দাবি, সংস্থার বেহাল দশার দায় স্থায়ী কর্মী-অফিসারদের এড়িয়ে তাঁদের উপর চাপানো হচ্ছে। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজন ঠিকা কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। বকেয়া বেতন ও এককালীন সুবিধা না-দিলে তাঁরা নতুন নিয়ম চালু হতে দেবেন না, স্পষ্টই জানিয়েছেন দু’জনেই।

অন্য বিষয়গুলি:

State Government Calcutta Telephones BSNL
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy