গত ২০২৩ সালের বিজিবিএসে মমতা এবং মুকেশ। —ফাইল চিত্র।
রাজ্যের আসন্ন বিশ্ব বঙ্গ শিল্প সম্মেলনে (বেঙ্গল গ্লোবাল বিজ়নেস সামিট বা বিজিবিএস) ফের শিল্পপতি মুকেশ অম্বানীর আসার জোরালো সম্ভাবনা তৈরি হল। ৫-৬ ফেব্রুয়ারি বসতে চলেছে ওই আসর। সূত্রের অনুমান, ৫ তারিখ উদ্বোধনের দিনেই হাজির থাকতে পারেন রিলায়্যান্স-কর্তা।
এর আগে ২০২৩-এর নভেম্বরে হওয়া বিজিবিএসে যোগ দিয়ে পরবর্তী তিন বছরে ২০,০০০ কোটি টাকা লগ্নির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মুকেশ। ঘোষণা করেছিলেন কালীঘাট মন্দির সংস্কারের দায়িত্ব নেওয়ার কথা। সেই দিক থেকে এ বারের সম্মেলনেও তাঁর থেকে উল্লেখযোগ্য লগ্নি-প্রতিশ্রুতি প্রত্যাশা করছে রাজ্য। মনে করা হচ্ছে, এই সফরে মন্দির সংস্কারের কাজ (যা এখন চলছে) দেখতে কালীঘাটেও যেতে পারেন অম্বানী। সূত্রের দাবি, রাজ্যের শিল্পপতিরা প্রত্যেকেই সম্মেলনে থাকবেন। জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক মহল থেকে আসতে পারেন আইটিসি-কর্তা সঞ্জীব পুরী, হিরানন্দানী গোষ্ঠীর কর্ণধার নিরঞ্জন হিরানন্দানী, গ্লোবাল ফাউন্ড্রিজ়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট অভিজিৎ দাস, ডালমিয়া গোষ্ঠীর পুনীত ডালমিয়া-সহ অনেকে। প্রতি বারের মতোই উপস্থিত থাকবেন বিভিন্ন দেশের বণিকমহলের প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূতেরা। আদানি গোষ্ঠীর তরফেকেউ যোগ দেবেন কি না, সে ব্যাপারে সরকারি ভাবে তথ্য মেলেনি। তবে সূত্রের খবর, গোষ্ঠীর শীর্ষ প্রতিনিধিদের আসার সম্ভাবনা কম। প্রসঙ্গত, তাজপুরে গভীর সমুদ্র বন্দর তৈরির ‘আগ্রহপত্র’ (লেটার অব ইনটেন্ট) আদানিদের হাতে তুলে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সূত্রের খবর, এ বারের সম্মেলনে একাধিক নীতি ঘোষণা করতে পারেরাজ্য। তার মধ্যে থাকতে পারে সেমিকনডাক্টর, গ্লোবাল কেপেবিলিটি সেন্টার (জিসিসি), নতুন উদ্যোগ শুরু (স্টার্ট আপ), ‘ডিফেন্স প্রোকিওরমেন্ট’, বস্ত্র ও চর্মশিল্প নীতি ইত্যাদি।
গত সম্মেলনে বাংলার অভ্যন্তরীণ উৎপাদন (জিএসডিপি) নিয়ে উচ্চাশা প্রকাশ করেছিলেন মুকেশ-সহ শিল্প-কর্তারা। সেই দিকটি এ বার তুলে ধরতেচায় রাজ্য। তাদের দাবি, এই অর্থবর্ষে জিএসডিপি (বাজেট বরাদ্দ অনুযায়ী) পৌঁছতে পারে ১৮.৭৯ লক্ষ কোটি টাকায়। উৎপাদন, তথ্যপ্রযুক্তি, সিমেন্ট,চামড়া, ইস্পাত, বস্ত্র ইত্যাদি ক্ষেত্র অর্থনীতিকে মজবুত করছে। তাই দেশের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি হিসেবেরাজ্যকে লগ্নির উর্বর ক্ষেত্র হিসেবেদেখাতে চায় তারা। আধিকারিকদের একাংশ বলছেন, এখানে ডেটা-সেন্টার তৈরিতে লগ্নির সম্ভাবনা ঊর্ধ্বমুখী। কলকাতায় সেমিকনডাক্টর শিল্প গড়ার ব্যাপারে আমেরিকার প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি জো বাইডেনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বৈঠক পশ্চিমবঙ্গের সম্ভাবনাকে আরও জোরালো করেছে।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, গত বারের সম্মেলনে ক্ষুদ্র-ছোট-মাঝারি শিল্পকে (এমএসএমই) ‘থিম’ করেছিল রাজ্য। খবর, এ বার সামগ্রিক শিল্প ক্ষেত্রকে সামনে রাখার পরিকল্পনা। এই লক্ষ্যে উৎপাদন (এমএসএমই, প্রতিরক্ষা উৎপাদন-সহ), কৃষি ও সহযোগী, বিশ্ব বাণিজ্য ও পণ্য পরিবহণ, পর্যটন, তথ্যপ্রযুক্তি ও সহযোগী, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, চলচ্চিত্র, বিদ্যুৎ-সহ পরিকাঠামোকে আলাদা ক্ষেত্র হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে। সেগুলির উপর আলোচনা, প্রদর্শনী ও বাণিজ্য বৈঠক হবে। কোন দফতর কোন ক্ষেত্রে বণিকমহলের সঙ্গে মউসই করতে পারে, লগ্নির অঙ্ক কী হতেপারে, সেই তথ্য বিভাগীয় প্রধানদের থেকে চেয়ে পাঠিয়েছে নবান্ন।
৫ ফেব্রুয়ারি বিজিবিএসের উদ্বোধন হবে বিশ্ব বাংলা কনভেনশন কেন্দ্রে। ওই দিনই দ্বিতীয়ার্ধে হবে আন্তর্জাতিক আলোচনা। ৬ ফেব্রুয়ারি আলাদা বৈঠক হবে প্রতিরক্ষা, বস্ত্র, চর্ম ইত্যাদি ক্ষেত্র নিয়ে। ক্ষেত্র-ভিত্তিক আলোচনাও হবে। সংশ্লিষ্ট দফতরের সচিব-মন্ত্রী ছাড়াও থাকবেন শিল্পের প্রতিনিধিরা। সম্মেলন শেষ ওই দিনই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy