—প্রতীকী চিত্র।
মূল্যবৃদ্ধির প্রেক্ষিতে চলতি মাস থেকে ফের কেব্ল টিভি পরিষেবায় মাসুল বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছে চ্যানেল সংস্থাগুলি। কিন্তু মাল্টি সার্ভিস অপারেটরদের (এমএসও) বক্তব্য, খরচ বাড়লে প্রতিযোগিতার বাজারে গ্রাহক হারাতে হতে পারে। ফলে এতে তাদের আপত্তি রয়েছে। মাসুল বৃদ্ধির বিষয়টি চূড়ান্ত না হলেও এখনও অবশ্য সেই সম্ভাবনা খারিজ হয়নি। এরই মধ্যে কেব্ল টিভি পরিষেবায় গ্রাহক স্বার্থ বজায় না থাকা সংক্রান্ত বক্তব্য উঠে এসেছে যোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির রিপোর্টে। সেখানে বলা হয়েছে, বহু গ্রাহক অপছন্দের চ্যানেল দেখতে কার্যত বাধ্য হচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে চ্যানেল বেছে নেওয়ার বিষয়টি চ্যানেল সংস্থার বদলে মূলত এমএসও-দেরই (ডিস্ট্রিবিশন প্ল্যাটফর্মস অপারেটর্স বা ডিপিও) দায়িত্ব দেওয়ার সুপারিশ করেছে ওই কমিটি।
চলতি মাস থেকেই এমএসও-দের বিভিন্ন চ্যানেলের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়ে চুক্তি করতে বলেছিল চ্যানেল সংস্থাগুলি। যদিও এমএসও-রা তাতে সায় দেয়নি। রাজ্যের অন্যতম এমএসও জিটিপিএল-কেসিবিপিএলের কর্তা বিজয় আগরওয়াল শনিবারও দাবি করেন, চ্যানেল সংস্থাগুলির তরফে ‘চাপ’ থাকলেও এখনও ওই প্রস্তাবে সায় দেননি তাঁরা। এই সমস্যার সমাধানে কেন্দ্র ও নিয়ন্ত্রক ট্রাইয়ের হস্তক্ষেপের আর্জি জানিয়েছে এমএসও-দের জাতীয় সংগঠন এআইডিসিএফ। অন্য দিকে, সংসদীয় কমিটি গোটা কেব্ল টিভি পরিষেবার পর্যালোচনা করতে গিয়ে ট্রাইয়ের পাশাপাশি এআইডিসিএফের সঙ্গেও কথা বলেছে। সবটা খতিয়ে দেখে কমিটির পর্যবেক্ষণ, ট্রাইয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৮ সালে গ্রাহক সংখ্যা ছিল ৯.৮৫ কোটি। ২০২১-এ তা কমে ৬.৭০ কোটি হয়েছে।
কমিটির কাছে এআইডিসিএফের দাবি, চ্যানেল সংস্থাগুলি বোকের দামে ছাড় দিলেও পৃথক ভাবে চ্যানেলের দাম (আলা-কার্ট) বিপলু বাড়িয়েছে। আবার বোকেতে দুই-একটি জনপ্রিয় চ্যানেলে থাকলেও আরও সাত-আটটি তেমন জনপ্রিয় নয় এমন চ্যানেল ঢুকিয়ে তা বিক্রির জন্য এমএসও-দের চাপ দেয়। ফলে অধিকাংশ গ্রাহক হাতে গোনা কিছু চ্যানেলের জন্য গোটা বোকে নিতে বাধ্য হন। কমিটির কাছে ট্রাই অবশ্য দাবি করেছে, মাসুল নির্ধারণ একটি জটিল প্রক্রিয়া। তবুও গ্রাহক স্বার্থ মাথায় রেখেই মাসুল নীতি তৈরি করা হয়। মাথায় রাখতে হয় সংস্থাগুলির ব্যবসায়িক দিকটিও।
এআইডিসিএফ এবং ট্রাইয়ের মধ্যে মতপার্থক্য নিয়ে দু’পক্ষকে সদর্থক আলোচনা করতে বলেছিল সংসদীয় কমিটি। কিন্তু ট্রাই কোনও বৈঠক না করেই এআইডিসিএফ-কে মাসুল নীতির বৈষম্য সম্পর্কে জানাতে বলায় কমিটি হতাশা প্রকাশ করেছে। চ্যানেল সংস্থাগুলির অভিপ্রায় নিয়ে কোনও প্রশ্ন না তুললেও কমিটির বক্তব্যের নির্যাস, চ্যানেল বাছাইয়ের অধিকার সম্পূর্ণ ভাবে গ্রাহকের উপরেই ছেড়ে দেওয়া উচিত। কমিটির সুপারিশ, গ্রাহকদের পছন্দ মতো সেই দায়িত্বের অনুমতি দেওয়া উচিত এমএসও-দের। তারাই সেই অনুযায়ী চ্যানেল সংস্থাগুলিকে উপযুক্ত দাম মিটিয়ে দেবে। এআইডিসিএফের প্রেসিডেন্ট পীযূষ মহাজন সংসদীয় কমিটির পর্যালোচনাকে স্বাগত জানিয়েছেন। কমিটির উল্লিখিত বিষয়গুলি সমাধানের জন্য ট্রাইয়ের কাছে সার্বিক আলোচনার আর্জিও জানিয়েছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy