প্রতীকী ছবি।
মার্চে আমেরিকার শীর্ষ ব্যাঙ্ক ফেডেরাল রিজ়ার্ভ যে সুদের হার বাড়াবে, তা অনেক আগে থেকেই জানা ছিল। পাশাপাশি এই আতঙ্কও ছিল, যে দিন এই বৃদ্ধির ঘোষণা হবে তার পরের দিন হুড়মুড়িয়ে বাজার পড়ে না যায়। গত বুধবার ২৫ বেসিস পয়েন্ট সুদ বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করে আমেরিকা। ব্রিটেনও সুদের হার ২৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়েছে। কিন্তু সে সবের কোনও বিরূপ প্রভাব ভারতের শেয়ার বাজারের উপরে পড়েনি। উল্টে তা আরও চাঙ্গা হয়েছে। বুধবার সেনসেক্স বেড়েছে ১০৪০ পয়েন্ট। আর সুদ বৃদ্ধির পর দিন বৃহস্পতিবার তা আরও ১০৪৭ পয়েন্ট মাথা তুলে ৫৭,৮৬৪ অঙ্কে পৌঁছে যায়। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, আমেরিকা ও ব্রিটেনে সুদ বৃদ্ধি এবং দেশে খুচরো ও পাইকারি মূল্যবৃদ্ধি সত্ত্বেও বাজারের এই উত্থানের কারণ কী? উত্তর খুঁজতে গিয়ে যা পাওয়া যাচ্ছে—
গত ৮ মার্চ ব্যারেল প্রতি ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ১৩৯ ডলারে পৌঁছে গিয়েছিল। কিন্তু এর সাত দিনের মধ্যে তা ১০০ ডলারে নেমে এসেছে। পরে তা ফের বেড়ে ১০৮ ডলার হলেও সর্বোচ্চ দামের চেয়ে অনেক নীচে।
রাশিয়া থেকে তেল কেনার ব্যাপারে আমেরিকার কোনও নিষেধাজ্ঞা ভারতের উপরে চাপছে না। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ভারতের তেল বিপণন সংস্থাগুলিকে দামে মোটা ছাড়ের প্রস্তাব দিয়েছে মস্কো। এই প্রস্তাব লুফে নিয়ে ইতিমধ্যেই দু’টি ভারতীয় সংস্থা ওই দেশ থেকে তেল কিনতে শুরু করেছে।
n রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে সমঝোতা আলোচনা চলছে। যা নিয়ে বাজার আশাবাদী।
n ১৬ মার্চ পর্যন্ত দেশের প্রত্যক্ষ কর সংগ্রহ পৌঁছেছে ১৩.৬৩ লক্ষ কোটি টাকায়। আগাম অনুমানের তুলনায় ১ লক্ষ কোটি টাকা বেশি তো বটেই, সর্বকালীন রেকর্ডও।
n যুদ্ধ নিয়ে বাজারে আতঙ্ক ছড়াতে পারে বলে আশঙ্কা থাকলেও দেশীয় লগ্নিকারীরা তেমন ভাবে শেয়ার বিক্রি করতে নামেননি। বরং ফেব্রুয়ারিতে মিউচুয়াল ফান্ডে লগ্নি বেড়েছে।
n আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে তৈরি হওয়া সমস্যাগুলি যুঝতে ভারতীয় অর্থনীতি সক্ষম, এমনই আশ্বাস দিয়েছে অর্থ মন্ত্রক। বহু সংস্থাও মনে করে, যুদ্ধের তেমন বিরূপ প্রভাব ভারতীয় অর্থনীতি তথা ব্যবসার উপরে পড়বে না।
ভারতীয় অর্থনীতির সামনে এখন প্রধান চ্যালেঞ্জ মূল্যবৃদ্ধিকে নিয়ন্ত্রণে রাখা। খুচরো মূল্যবৃদ্ধির হার দু’মাস ধরে রয়েছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের সহনশীলতার মাত্রার উপরে। এই হার আরও বাড়লে শীর্ষ ব্যাঙ্কের সামনে সুদ বৃদ্ধি ছাড়া হয়তো আর রাস্তা থাকবে না। অর্থনীতির গতি বাড়ানোর লক্ষ্যে যা তারা একেবারেই চায় না। সুদ বাড়লে ঋণ নেওয়ার খরচ বাড়বে। তার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে শিল্পের উপরে। ফলে সুদ না বাড়িয়ে অন্য কোন পথে মূল্যবৃদ্ধির রাশ টানা যায়, সেটাই এখন প্রধান চিন্তা শীর্ষ ব্যাঙ্কের।
২০২১-২২ অর্থবর্ষে শেষ হতে আর মাত্র ১০ দিন বাকি। যুদ্ধ পরিস্থিতি ছাড়া আর যে সব দিকে বাজারের নজর থাকবে, তা হল এপ্রিলে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের ঋণনীতি বৈঠক। সেই সঙ্গে ওই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে প্রকাশিত হতে শুরু করবে বিভিন্ন সংস্থার চতুর্থ ত্রৈমাসিক তথা বার্ষিক ফলাফল। চোখ থাকবে বর্ষার পূর্বাভাসের দিকেও। ১ এপ্রিল থেকে ক্ষুদ্র সঞ্চয় প্রকল্পে সুদ বাড়ানো হয় কি না, তা দেখার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন এই সব প্রকল্পের লগ্নিকারীরা।
(মতামত ব্যক্তিগত)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy