গত সপ্তাহে বড় মাপের উত্থান-পতন দেখল শেয়ার বাজার।
মার্কিন কর্মসংস্থানে উন্নতি ও বিশ্ব বাজারের আচমকা উত্থানে প্রভাবিত হয়ে সোমবার হঠাৎ সেনসেক্স লাফিয়ে বাড়ে ৬১১ পয়েন্ট। নিফ্টি ১৯৫ অঙ্ক। আগের দু’বছরের মধ্যে একটি কাজের দিনে এটিই সবচেয়ে বড় উত্থান।
এত বড় উত্থান দেখে অনেকেই ভাবছিলেন, এ বার হয়তো চাকা ঘুরল। তা মনে করার কারণও ছিল। পরপর ভাল খবর আসতে শুরু করেছিল অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্র থেকে। এ সব সত্ত্বেও উত্থান কিন্তু স্থায়ী হল না। দেশ-বিদেশ থেকে সাঁড়াশি আক্রমণে শুক্রবার সেনসেক্স ও নিফ্টি খুইয়েছে যথাক্রমে ৫১০ ও ১৬৫ অঙ্ক। এক দিনে ১.৮৬ লক্ষ কোটি টাকার সম্পদ মুছে যায় বাজারে নথিবদ্ধ সব শেয়ারের মোট মূল্য থেকে।
যে-দু’টি কারণকে এই পতনের জন্য দায়ী করা হচ্ছে, সেগুলি হল: প্রথমত, ট্রাম্পের হুমকিতে বাণিজ্য যুদ্ধের আশঙ্কা বৃদ্ধি পাওয়া। দ্বিতীয়ত, তেলুগু দেশম পার্টির কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ও এনডিএ ত্যাগ ও সংসদে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করায় ভারতের রাজনীতিতে অস্থিরতা। পাশাপাশি, লোকসভার ৩টি গুরুত্বপূর্ণ আসনে উপনির্বাচনে বিজেপি জোট এনডিএ-র পরাজয় উসকে দেয় বিরোধী ঐক্য। এতে কিছুটা হলেও নড়বড়ে কেন্দ্রে এনডিএ সরকারের ভিত।
দেশের রাজনৈতিক দলগুলি এখন দু’ভাগে বিভক্ত। এতে সরকারের সঙ্গে সংঘাতের পথও প্রশস্ত হল। বাজারের জন্য সম্ভবত এটা খুব একটা ভাল নয়। এর প্রভাবে মাঝেমধ্যেই দুর্বলতা দেখা দিতে পারে। অর্থাৎ অর্থনীতি কিছুটা ভাল করলেও বাজারে অস্থিরতা কিন্তু থেকেই যাবে।
এ বার একটু তাকানো যাক অর্থনীতির দিকে। গত সপ্তাহে যে সব খবর পেয়েছি, সেগুলি কিছু ক্ষেত্রে ভাল ইঙ্গিত দেয়:
• ফেব্রুয়ারিতে পাইকারি মূল্যবৃদ্ধি নেমেছে ২.৮৪ শতাংশে, যা আগের সাত মাসের মধ্যে সব থেকে কম। এক বছর আগের হার ৫.৫১%।
• গত মাসে খুচরো মূল্যবৃদ্ধিও কমে হয়েছে ৪.৪৪%। আগের মাসে ছিল ৫.০৭%। এতে সুদ না কমলেও, তা বাড়বে না বলে মনে করা হচ্ছে।
• জানুয়ারিতে শিল্প বৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৭.৫%। আগের বছরের তুলনায় ৪% বেশি। ভরসার দিকটি হল, মূলধনী পণ্যের ১৪.৬% উৎপাদন বৃদ্ধি।
• ফেব্রুয়ারিতে গাড়ি বিক্রি বেড়েছে ২২.৭৭%। আশার বিষয়, আকর্ষণীয় হারে বাণিজ্যিক যানের বিক্রি বৃদ্ধি। এপ্রিল থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এই ধরনের গাড়ির বিক্রি বেড়েছে ১৯.৩%, জিএসটি চালু হওয়া সত্ত্বেও। যার ইঙ্গিত, দেশে বাণিজ্য বাড়ছে।
এ বার তাকানো যাক লগ্নি সংক্রান্ত অন্যান্য খবরের দিকে।
• বছর শেষে নতুন ইস্যুর বাজার এখন জমজমাট। গত সপ্তাহে মোটামুটি ভাল উতরে গিয়েছে ভারত ডায়নামিক্সের আইপিও। ব্যাঙ্ক শিল্পের দুর্দিনেও ভাল লগ্নি টানছে বন্ধন ব্যাঙ্ক। ইস্যু বন্ধ হবে আজ। এ ছাড়া খোলা আছে হিন্দুস্তান এরোনটিক্স-এর ইস্যু।
এ ছাড়া সামনে দেখব বেসরকারি ক্ষেত্র থেকে দু’টি ইস্যু। এগুলি হল, এইচডিএফসি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি এবং আইসিআইসিআই সিকিউরিটিজ-এর পাবলিক ইস্যু।
• রেকর্ড সংখ্যক ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে চলতি অর্থবর্ষে। গত ১১ মাসে সেই সংখ্যা ৩১.৬১ লক্ষ। বৃদ্ধির হার ১৩.৫০%। ব্যাঙ্ক সুদে পতন এবং টানা তেজি শেয়ার বাজার এই বৃদ্ধির কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।
• ফেব্রুয়ারি মাসে জীবন বিমা সংস্থাগুলি নতুন বিমার উপর প্রথম বছরের প্রিমিয়াম হিসাবে সংগ্রহ করেছে মোট ১৩,৭২৫ কোটি টাকা। এই সংগ্রহ আগের বছরের একই মাসের তুলনায় ২৭% বেশি।
• ফেব্রুয়ারির শেষে মিউচুয়াল ফান্ড পরিচালিত মোট সম্পদ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২.২০ লক্ষ কোটি টাকা। কিছু ফান্ডের হাতে থাকা সম্পদের পরিমাণ সঙ্গের সারণিতে দেওয়া হল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy