ফাইল চিত্র।
শেষ পর্যন্ত কী হবে কেউ জানে না। তবে চিন ও আমেরিকা প্রথম ধাপের বাণিজ্য চুক্তির দোরগোড়ায় পৌঁছেছে বলে সংবাদমাধ্যমে খবর বেরোতেই, প্রায় সব দেশের শেয়ার বাজার খুশিতে তেতে উঠল সোমবার। বাদ যায়নি ভারতও। সেনসেক্স এক লাফে ৫২৯.৮২ পয়েন্ট উঠে এই প্রথম দাঁড়ায় ৪০,৮৮৯.২৩ অঙ্কের নতুন শিখরে। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, এত দিন ভাবনা ছিল সূচক ৪০ হাজারের উপরে থিতু থাকতে পারবে কি না। এ বার তৈরি হল তার নতুন লক্ষ্য, ৪১ হাজারের ঘরে পা রাখা। নিফ্টি-ও ফের পেরিয়েছে ১২ হাজারের মাইলফলক। ১৫৯.৩৫ অঙ্ক উঠে থেমেছে ১২,০৭৩.৭৫ অঙ্কে।
বেশ কিছু দিন ধরেই ভারতের বাজার ওঠানামা করছে মার্কিন-চিন বাণিজ্য চুক্তি সইয়ের জমি কতটা পোক্ত হল, সেই খবরের উপর ভিত্তি করে। যে চুক্তি হওয়ার উপর নির্ভর করছে লম্বা সময় ধরে চলতে থাকা শুল্ক যুদ্ধে দাঁড়ি পড়া। নির্ভর করছে বিশ্ব অর্থনীতিতে চাহিদা বাড়া ও তার ঘুরে দাঁড়ানোও। আর যেটা না-হলে চাঙ্গা হবে না রফতানি বাণিজ্য। ফলে চুক্তি সইয়ের অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি হলে সেনসেক্স ও নিফ্টির পারদ দ্রুত উপরে উঠে যাচ্ছে। এমনকি অনেক সময় তা হচ্ছে দেশের আর্থিক স্বাস্থ্যকে খানিকটা উপেক্ষা করেই। আবার উল্টোটা হতে দেখলেই গোত্তা খেয়ে পড়ছে তারা।
এ দিন চিনের একটি সংবাদপত্র জানায়, শুল্ক যুদ্ধের অবসানে বেজিং ও ওয়াশিংটনের প্রথম চুক্তিটি সই হওয়া স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। কারণ, চিনা সরকারের ঘনিষ্ঠ বিশেষজ্ঞেরা দাবি করেছেন, আমেরিকার সঙ্গে দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ের শুল্ক চুক্তি নিয়ে কথা চালিয়ে যেতে দায়বদ্ধ বেজিং। যা দ্রুত প্রথম দফার চুক্তি সম্পন্ন করারই ইঙ্গিত। আন্তর্জাতিক শেয়ার বাজার মহলের আশা, আগামী মাসের মধ্যেই আমেরিকা এবং চিনের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি সই হবে। যে খবর বিশ্ব জুড়েই বিভিন্ন শেয়ার বাজারকে চাঙ্গা করেছে। ভারত ছাড়াও সূচক বেড়েছে জাপান, সাংহাই, হংকং-সহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে। ইউরোপের শেয়ার সূচকগুলির মুখও ছিল উপরের দিকে।
উত্থানের আরও কারণ
• দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা করতে আরও কেন্দ্রীয় পদক্ষেপের আশা।
• ভারতের শেয়ার বাজারে নাগাড়ে বিদেশি আর্থিক লগ্নিকারী সংস্থাগুলির বিনিয়োগ।
• চাহিদা বাড়াতে ডিসেম্বরের ঋণনীতিতে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ফের সুদ ছাঁটাইয়ের সম্ভাবনা।
• অবিলম্বে পাঁচ রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বিলগ্নিকরণের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের পরে রাজকোষ ঘাটতি নিয়ন্ত্রণে থাকা নিয়ে লগ্নিকারীদের আস্থা কিছুটা বাড়া।• দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা করতে আরও কেন্দ্রীয় পদক্ষেপের আশা।
• ভারতের শেয়ার বাজারে নাগাড়ে বিদেশি আর্থিক লগ্নিকারী সংস্থাগুলির বিনিয়োগ।
• চাহিদা বাড়াতে ডিসেম্বরের ঋণনীতিতে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ফের সুদ ছাঁটাইয়ের সম্ভাবনা।
• অবিলম্বে পাঁচ রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বিলগ্নিকরণের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের পরে রাজকোষ ঘাটতি নিয়ন্ত্রণে থাকা নিয়ে লগ্নিকারীদের আস্থা কিছুটা বাড়া।
এ দিন অবশ্য ভারতে সূচকের উত্থানে জ্বালানি জুগিয়েছে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলিও। তারা এ দেশের বাজারে উপুড় করেছে ৯৬০.৯০ কোটি টাকা। বিশেষজ্ঞদের অনেকেই মনে করছেন, বেশ কিছু দিন বাদে শেয়ার বাজারের অনুকূলে একাধিক কারণ কাজ করতে শুরু করেছে। যার মধ্যে আছে, গত অক্টোবরে তার আগের বছরের একই মাসের তুলনায় সামান্য হলেও সার্বিক যাত্রী গাড়ির চাহিদা বৃদ্ধি। মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে থাকায় আগামী ঋণনীতিতেও রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সুদ কমানোর সম্ভাবনা। দেশীয় অর্থনীতি চাঙ্গা করতে শীঘ্রই সরকারের তরফে আরও পদক্ষেপের আশা। সেই সঙ্গে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলির টানা বিনিয়োগ তো আছেই।
যদিও বাজার বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, বাজার স্থায়ী ভাবে চাঙ্গা হতে পারে, এমন কোনও পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। স্টুয়ার্ট সিকিউরিটিজের চেয়ারম্যান কমল পারেখের হুঁশিয়ারি, ‘‘বাজারে বিনিয়োগের জন্য দীর্ঘকালীন ভিত্তিতে শেয়ার কেনা হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে না। বরং ফাটকাবাজরাই এখন বেশি সক্রিয়। তাই যে কোনও সময়েই সূচক ফের পড়তে পারে।’’
কমলবাবুর সুরই বাজার বিশেষজ্ঞ এবং দেকো সিকিউরিটিজের কর্ণধার অজিত দে-র গলায়। তিনি বলছেন, ‘‘বাজার এখন এতটাই অনিশ্চিত জায়গায় রয়েছে যে, তার গতিবিধি নিয়ে কোনও মন্তব্য করা কঠিন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy