Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Automobile Industry

কম দামি গাড়ির বাজারে এখনও বহাল ভাটার টান

চলতি অর্থবর্ষের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) দেশে যাত্রিবাহী গাড়ির পাইকারি বিক্রি (সংস্থা ডিলারদের যে গাড়ি বিক্রি করে) ১০ লক্ষ ছাড়িয়ে গিয়েছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০২২ ০৭:০০
Share: Save:

প্রদীপের তলায় এখনও বেশ খানিকটা আঁধার।

চলতি অর্থবর্ষের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) দেশে যাত্রিবাহী গাড়ির পাইকারি বিক্রি (সংস্থা ডিলারদের যে গাড়ি বিক্রি করে) ১০ লক্ষ ছাড়িয়ে গিয়েছে। কিন্তু এর আড়ালে গাড়ি বাজারের অন্য যে দিকটি নিয়ে উদ্বেগ বহাল তা হল, সার্বিক যাত্রিবাহী (সব রকম দামের ছোট, বড় গাড়ি ধরে) ছাড়া দু’চাকা, তিন চাকা এবং বাণিজ্যিক গাড়ির বিক্রি এখনও বেশ কয়েক বছর পিছিয়ে। গাড়ি সংস্থাগুলির সংগঠন সিয়ামের পরিসংখ্যান বলছে, শুধু কম দামি যাত্রিবাহী, দু’চাকা, তিন চাকার হিসাব করলে বিক্রি ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষের ওই তিন মাসের তুলনায় এ বার অনেকটাই কমেছে।

দেশ জুড়ে অভিযোগ, কোভিড দেশে আর্থিক বৈষম্য বাড়িয়ে দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের ধারণা, কম দামি গাড়ি বিক্রি কমাও আসলে সমাজের সেই বৈষম্যকেই তুলে ধরছে। অতীতে এগুলির ক্রেতাদের অনেকেই আর অতিমারির পরে এই খরচ বইবার অবস্থায় নেই। অথচ বেশি দামের গাড়ি বিক্রি আগের থেকে বেড়ে গিয়েছে। সিয়ামও বলছে, জ্বালানি-সহ বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির পাশাপাশি বিমার মতো নানা খাতে গাড়ি কেনার খরচ বেড়ে যাওয়ায় সস্তার গাড়ির চাহিদা ধাক্কা খাচ্ছে।

বস্তুত, দামি ও বড় চার চাকার, বিশেষ করে ‘স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিক্‌ল’ (এসইউভি)-এর চাহিদা ক্রমশ বাড়ছে। কিন্তু সার্বিক বাজারে এমন সব গাড়ির অংশীদারি ছোট ও কম দামি গাড়ির (মূলত হ্যাচব্যাক) তুলনায় অনেক কম। দু’চাকার চাহিদার ক্ষেত্রেও বিষয়টি একই। গাড়ি শিল্প সূত্রের খবর, সেই বাজারে চাহিদায় এখনও রীতিমতো ভাটার টান। তাদের দাবি, অতিমারি যেমন অনেকের কাজে কোপ ফেলেছে, তেমনই অনেকের কাজ চলে না গেলেও রোজগার কমেছে। উপরন্তু কাঁচামালের চড়া দরের জেরে সংস্থা গাড়ির দাম বাড়িয়েছে। বিমা-সহ নানা খরচ বাড়ায় তা কেনার খরচ আরও বেড়েছে। সব মিলিয়ে কোপ পড়ছে কম দামিগুলির চাহিদায়।

সিয়ামের প্রেসিডেন্ট বিনোদ আগরওয়াল বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘কম দামি চার চাকা এবং দু’চাকার বাজারে চ্যালেঞ্জ অব্যাহত।’’ সংগঠনের ডিজি রাজেশ মেননের মতে, গ্রামীণ বাজারের চাহিদা মাথা না তোলাই এর কারণ। ক্রেতার খরচে রাশ টানতে এই ধরনের গাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে নতুন নিয়মকানুন আপাতত বন্ধ রাখতে সরকারের কাছে আর্জি জানিয়েছে শিল্পমহল।

এ দিন সিয়াম জানিয়েছে, চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ছ’মাসে দেশে যা দু’চাকার গাড়ি বিক্রি হয়েছে, তা ২০১৬-১৭ সালের চেয়ে কম। তিন চাকার ব্যবসা পিছিয়ে রয়েছে ২০০৯-১০ সালের চেয়ে। আর বাণিজ্যিক গাড়ির ক্ষেত্রে ২০১৮-১৯ সালের থেকে পিছিয়ে পাইকারি বিক্রি। জুলাই-সেপ্টেম্বরের হিসাবেও ছবিটা কম-বেশি এক। তবে দুই ক্ষেত্রেই সার্বিক যাত্রিগাড়ির বিক্রি বেড়েছে।

চড়া মূল্যবৃদ্ধির হার, ঋণের চড়া সুদ, সিএনজির দাম বৃদ্ধি, ভূ-রাজনৈতিক সঙ্কট— বাজারের চ্যালেঞ্জ হিসেবে চিহ্নিত করছেন বিনোদ। তাই অনিশ্চয়তা বহাল থাকার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না তাঁরা। তবে সেপ্টেম্বরে উৎসবের মরসুমের সূচনাকালে শো-রুমে গাড়ি কেনার চাহিদা কিছুটা বেড়েছে বলে জানিয়েছে শিল্পমহল। তাদের আশা, এ মাসে দশেরার পরে দেওয়ালির সময়ও চাহিদা বজায় থাকবে এবং সরকার আর্থিক উন্নয়নে জোর দেওয়ায় আগামী দিনে গাড়ি বাজারেও চাহিদা বাড়বে।

অন্য বিষয়গুলি:

Automobile Industry
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy