Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
bank

Bank Fraud: ব্যাঙ্ক প্রতারণায় দৈনিক ১০০ কোটি টাকা হারাচ্ছে দেশ! দাবি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের রিপোর্টে

আরবিআই জানাচ্ছে, গত সাত বছরে ব্যাঙ্ক প্রতারণার শীর্ষে মহারাষ্ট্রে। তার পরে স্থানগুলিতে রয়েছে দিল্লি, তেলঙ্গানা, গুজরাত এবং তামিলনাড়ু।

রিজার্ভ ব্যাঙ্ক।

রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০২২ ১৭:৫০
Share: Save:

নীরব মোদী-মেহুল চোক্সী প্রতারণা-কাণ্ডে পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের (পিএনবি) ক্ষতির অঙ্কে যোগ হয়েছিল প্রায় ১৩,০০০ কোটি টাকা। তার আগে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির প্রায় ৯,০০০ কোটি টাকা পাওনা বাকি রেখে গোপনে দেশ ছেড়েছিলেন বিজয় মাল্য। নরেন্দ্র মোদীর জমানায় ওই দুই ঘটনায় তোলপাড় হয়েছিল সারা দেশ। শুরু হয় রাজনৈতিক তরজা। কিন্তু তার পরেও যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি জালিয়াতি বিশেষ আটকাতে পারছে না, তা স্পষ্ট হল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক (আরবিআই)-এর সাম্প্রতিক রিপোর্টে। সেই রিপোর্টের পরিসংখ্যান বলছে, গত সাত বছরে দৈনিক অন্তত ১০০ কোটি টাকা জালিয়াতির শিকার হচ্ছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি।

আরবিআই-এর তথ্য বলছে, গত সাত বছরে ব্যাঙ্ক প্রতারণার প্রায় অর্ধেক ঘটনাই ঘটেছে মহারাষ্ট্রে। তার পরে স্থানগুলিতে রয়েছে দিল্লি, তেলঙ্গানা, গুজরাত এবং তামিলনাড়ু। ২০১৫-র ১ এপ্রিল থেকে ২০২১-এর ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি মোট আড়াই লক্ষ কোটি টাকা প্রতারণার শিকার হয়েছে। তার ৮৩ শতাংশই (টাকার অঙ্কে প্রায় ২ লক্ষ কোটি) ঘটেছে ওই পাঁচটি রাজ্যে। শীর্ষ ব্যাঙ্কের রিপোর্ট বলছে, ওই প্রতারণার ঘটনাগুলির অধিকাংশের কারণই, নিয়ম ভেঙে দেওয়া ঋণ।

কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের দাবি, গত দু’বছরে দেশ জুড়ে ব্যাঙ্ক প্রতারণার ঘটনা কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে তার নেপথ্যে ‘অন্য কারণ’ দেখতে পাচ্ছেন ব্যাঙ্কিং ব্যবসা সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাঁদের মতে, অতিমারি পরিস্থিতিতে বিভিন্ন শিল্পে ব্যবসা স্তিমিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঋণ নেওয়ার হারও কমেছে। তা ছাড়া করোনা সংক্রমণের সময়ে ব্যাঙ্কের লেনদেন-সহ ব্যবসায়িক কাজকর্মও অনেকটাই গতি হারিয়েছিল। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি থেকে গড়ে দৈনিক ১০০ কোটি টাকার পুঁজি হাতছাড়া হওয়া আটকানো যায়নি। যা ‘উদ্বেগজনক’ বলেই তাঁদের মত।

আরবিআই-এর রিপোর্টে ব্যাঙ্ক প্রতারণার ঘটনাগুলিকে মোট আটটি বিভগে শ্রেণিবদ্ধ করেছে— তহবিলের অপব্যবহার এবং অপরাধমূলক বিশ্বাস লঙ্ঘন, জাল নথিপত্রের মাধ্যমে প্রতারণা, হিসাবের তথ্যে কারসাজি বা কাল্পনিক হিসাবের মাধ্যমে বেআইনি ভাবে সম্পত্তির রূপান্তর, নিয়ম ভেঙে ঋণের সুবিধা পাওয়া, অবহেলা এবং নগদ ঘাটতি, ব্যাঙ্ক জালিয়াতি, বিদেশি মুদ্রার লেনদেনে অনিয়ম এবং অন্য বিভিন্ন ধরনের প্রতারণা।

ব্যাঙ্ক ঋণ সংক্রান্ত একটি সংস্থার পরিচালক সঞ্জয় কৌশিকের মতে, বহু ক্ষেত্রেই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি কোনও জামানত ছাড়াই বিপুল অঙ্কের ঋণের আবেদন মঞ্জুর করেছে। শিল্প এবং বাণিজ্যিক সংস্থাগুলিকে জামানত ছাড়াই দেওয়া ওই বড় অঙ্কের ঋণগুলি পুনরুদ্ধার করাই সবচেয়ে অসুবিধাজনক বলে তাঁর মত।

ব্যাঙ্ক প্রতারণা রুখতে মোদী সরকার বার বার নজরদারিতে জোর দেওয়ার কথা বললেও, গত সাত বছরে তাতে রাশ টানা যায়নি কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করে বলছেন, অনুৎপাদক সম্পদের জেরে নাকাল ব্যাঙ্কগুলিতে পুঁজি নয়ছয় রোখা না গেলে অদূর ভবিষ্যতেই ‘বড় বিপর্যয়’ দেখা দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে সরকারের পক্ষে তহবিল জুগিয়েও পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব হবে না।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy