রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। ফাইল চিত্র।
প্রত্যাশা ছিল। শুক্রবার তা পূরণ করে রেপো রেট (স্বল্প মেয়াদে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলি যে সুদে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছ থেকে ঋণ নেয়) ২৫ বেসিস পয়েন্ট (০.২৫ শতাংশ বিন্দু) কমাল শীর্ষ ব্যাঙ্ক। গত ফেব্রুয়ারি থেকে এই নিয়ে টানা পাঁচ বারে মোট ১৩৫ বেসিস পয়েন্ট কমল রেপো রেট।
ব্যাঙ্কগুলি কম সুদে ঋণ পাওয়ায় তারা শিল্পসংস্থা বা আমজনতাকে যে সুদে টাকা ধার দেবে, তার হারও কমার কথা। ফলে চাঙ্গা হওয়ার কথা বাজারের। কিন্তু এ দিন অন্তত শেয়ার বাজারে খুশির হাওয়া লাগেনি। উল্টে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক নয়া ঋণনীতি ঘোষণার পরেই ৪৩৪ পয়েন্ট পড়ে যায় মুম্বইয় শেয়ার বাজারের সূচক সেনসেক্স।
এর কারণ হিসেবে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সুদ ছেঁটেছে ঠিকই, কিন্তু একই সঙ্গে কমিয়ে দিয়েছে চলতি অর্থবর্ষে বৃদ্ধির পূর্বাভাস।এত দিন পর্যন্ত শীর্ষ ব্যাঙ্কের পূর্বাভাস ছিল চলতি অর্থবর্ষে অর্থনীতির বৃদ্ধির হার হবে ৬.৯%। এ দিন তা কমিয়ে ৬.১% করা হয়েছে। আর তাতেই উদ্বেগ বেড়েছে লগ্নিকারীদের।
শুধু তাই নয়, শিল্প মহলের অনেকে সুদ কমানোর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেও, ব্যাঙ্কিং মহলের একাংশ বলছে, এতে চাহিদা কতটা বাড়বে, তা নিয়ে সংশয় আছে। তাঁদের যুক্তি, টানা চার বার সুদ কমানোর পরেও যখন বাজারে বিক্রিবাটা বাড়ার লক্ষণ দেখা গেল না, তখন পঞ্চম বারের পরেই ছবি পাল্টানোর নিশ্চয়তা কোথায়! রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অগস্ট পর্যন্ত ১১০ বেসিস পয়েন্ট সুদ কমালেও বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলি সুদ কমিয়েছে গড়ে মাত্র ২৯ বেসিস পয়েন্ট। ফলে বাজার চাঙ্গা হয়নি। নতুন নিয়মে সুদ ছাঁটাইয়ের সবটুকু সুযোগ গ্রাহকদের দিতে হবে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলিকে। কিন্তু তার ফল ফলতে যে সময় লাগবে, তা কবুল করেছেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস নিজেই।
রেপো রেট কমার প্রভাব অর্থনীতিতে কতটা পড়বে তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে স্টেট ব্যাঙ্কের গবেষণা শাখা ইকোর্যাপ। কারণ, তাদের হিসেব গত ছ’মাসে ব্যাঙ্ক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলির ঋণ নেওয়ার পরিমাণ আগের তুলনায় কমেছে। আর ঋণ না বাড়লে বাজারে নগদের জোগান বাড়ে না। যা আদতে চাহিদা চাঙ্গা করার অন্যতম শর্ত।
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের অবশ্য আশা, বৃদ্ধির পূর্বাভাস ছাঁটলেও অর্থবর্ষের দ্বিতীয়ার্ধে তাতে গতি আসবে। শক্তিকান্ত বলেন, মূল্যবৃদ্ধি নয়, চিন্তা এখন আর্থিক বৃদ্ধি নিয়ে। ঋণনীতি কমিটি মনে করেছে অর্থনীতি যে রকম শ্লথ, তাতে বৃদ্ধিতে গতি আনতে গেলে আরও কোমর বেঁধে চেষ্টা করতে হবে। তাই ফের সুদ কমেছে। একই সঙ্গে তাঁর আশা, কেন্দ্র যে সব পদক্ষেপ করেছে, তাতে চাহিদা ও লগ্নি বাড়বে।
যদিও অনেকেরই প্রশ্ন, বৃদ্ধির পূর্বাভাস যদি কমাতেই হয়, তা হলে অর্থনীতির ‘অসুখ’ সারার লক্ষণ কই? অর্থমন্ত্রীর একের পর এক দাওয়াইয়ে লাভই বা কী হল? কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী ও সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি এ দিন মোদী সরকারকে কাঠগড়ায় তুলে বলেছেন, অর্থনীতিকে ধ্বংস করছে কেন্দ্র। পাশাপাশি বাজার বিশেষজ্ঞদের একাংশের অভিযোগ, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক বৃদ্ধি কমার যে পূর্বাভাস দিয়েছে, তার সঙ্গে সাযুজ্য রেখে সুদ ছাঁটেনি। তাঁদের মতে, ২৫ বেসিস পয়েন্ট নয়, আরও বেশি সুদ কমানো উচিত ছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy