প্রতীকী ছবি।
পশ্চিমবঙ্গ-সহ পাঁচ রাজ্যে ভোট পর্ব মেটার সঙ্গে সঙ্গেই টানা তিন দিন বেড়ে কলকাতায় লিটার পিছু ৯১ টাকা পেরিয়ে গেল পেট্রল। ডিজেল পেরোল ৮৪ টাকার ধাপ। মঙ্গলবার, বুধবারের পরে আজ, বৃহস্পতিবারও দেশ জুড়ে পেট্রল-ডিজেলের দাম বাড়াল তেল সংস্থাগুলি। ফলে কলকাতায় আইওসি-র পাম্পে এক লিটার পেট্রল ২২ পয়সা বেড়ে হল ৯১.১৪ টাকা। ২৮ পয়সা বেড়ে ডিজেল ৮৪.২৬ টাকা। মুম্বইতে বুধবারই লিটারে পেট্রল ছাড়িয়েছিল ৯৭ টাকা। ডিজেল মুম্বই এবং চেন্নাইতে যথাক্রমে ৮৮ ও ৮৬ টাকার বেশি। করোনা সঙ্কটের সময়ে জ্বালানির এই দর বৃদ্ধির দৌড়ের তীব্র প্রতিবাদ করে অল ইন্ডিয়া মোটর ট্রান্সপোর্ট কংগ্রেসের (এআইএমটিসি) দাবি, এখনও পেট্রল ও ডিজেলের দর লিটারে ৪০ টাকা করে হ্রাস করা সম্ভব। কেন্দ্র ও রাজ্য, উভয়পক্ষই কর ছাঁটাই করুক। না-হলে সব ক্ষেত্রের উপর চাপ বাড়বে। ভুগবেন আমজনতা।
কলকাতায় ২১ ফেব্রুয়ারি সর্বোচ্চ দর ছুঁয়েছিল পেট্রল, ৯১.৭৮ টাকা। সে দিনই রেকর্ড ৮৪.৫৬ টাকা হয়েছিল ডিজেল। প্রশ্ন উঠছে, সাড়ে তিন লক্ষ পার সংক্রমণের রেকর্ডের পাশাপাশি দেশবাসীকে কি তেলের নতুন রেকর্ড দরের মুখেও পড়তে হবে? কারণ ভোটের পরে তেলের দৈনিক দর বৃদ্ধির হারও বাড়তে দেখা যাচ্ছে। আর সেটা হলে মানুষ ও শিল্পের সঙ্কট আরও বাড়তে পারে, আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের। বিশেষত উৎপাদন ও পরিবহণের খরচ বাড়লে যেহেতু পণ্যের দামও বাড়বে। তার উপর এমনিতেই বিভিন্ন রাজ্য স্থানীয় লকডাউনের পথে হাঁটায় সঙ্কটে পরিবহণ ক্ষেত্র। যার জেরে পণ্যের জোগান-শৃঙ্খল ধাক্কা খেলে মূল্যবৃদ্ধির মাথা তোলার ভয় থাকছেই। তেল যে পণ্যমূল্যের দামে চাপ বাড়াতে পারে, সেই ইঙ্গিত দিয়েছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কও।
ফলে করোনা পরিস্থিতি সত্ত্বেও দুই জ্বালানির দর ক্রমাগত মাথাচাড়া দিতে থাকবে কি না, তা নিয়ে চিন্তিত সকলে। সব মহলেরই প্রশ্ন, সংক্রমণ, প্রিয়জনের মৃত্যু আর আর্থিক সঙ্কটে বেহাল মানুষ তা সামলাবে কী করে?
কেন্দ্র অবশ্য দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের চড়া দরকে দায়ী করলেও, বিপুল হারে বাড়ানো উৎপাদন শুল্ক কমিয়ে সুরাহা দেওয়া নিয়ে রা কাড়ছে না। সূত্রের খবর, সৌদি আরব এশিয়ার দেশগুলিকে জুনের জন্য বিক্রি করা তেলের আগাম দর কমিয়েছে। তবে বিশ্ব বাজারে আগেই ব্রেন্ট ক্রুড ৬৯.৫০ ডলার হয়েছে। এআইএমটিসি-র দাবি, এই দরও ২০০৭ সালের অগস্টের দরের চেয়ে কম (৭০ ডলার)। তখন দেশে পেট্রল ও ডিজেল ছিল লিটারে যথাক্রমে ৪৩ ও ৩০ টাকার কিছু বেশি।
বস্তুত, ভারতে পেট্রলের দামের প্রায় ৬০ শতাংশই কেন্দ্রের শুল্ক ও রাজ্যের কর (ভ্যাট)। ডিজেলে তা প্রায় ৫৪%। কেন্দ্র এর আগেই কর হ্রাসের জন্য রাজ্যগুলির কোর্টে বল ঠেলেছে। তবে রাজ্য না কেন্দ্র, কে কতটা করের ভাগ ছাড়বে তা নিয়ে ভাবতে নারাজ সংশ্লিষ্ট মহল। তাদের বার্তা, জ্বালানির খরচ বৃদ্ধি যখন নানা ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে নাগরিকদের জীবনযাত্রায় আরও সঙ্কট ডেকে আনতে পারে, তখন অবিলম্বে তা নিয়ে মাথা ঘামাক কেন্দ্র ও রাজ্যগুলি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy