শক্তিকান্ত দাস, আরবিআই গভর্নর। ফাইল চিত্র।
মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে আশঙ্কা স্পষ্ট চলতি অর্থবর্ষে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রথম ঋণনীতিতে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে অর্থনীতি নিয়ে যে চিন্তা বেড়েছে, পরিষ্কার সেটাও। যে কারণে বহু দিন বাদে আর্থিক বৃদ্ধিতে গতি আনার তুলনায় মূল্যবৃদ্ধির চড়তে থাকা হারে রাশ টানার উপরে বেশি গুরুত্ব দিল তারা। সুদের হার (রেপো রেট) এক রাখলেও, পণ্যের দামে লাগাম পরাতে ইঙ্গিত দিল আগামী দিনে তা বাড়ানোর। আগের থেকে বাড়িয়ে দিল চলতি অর্থবর্ষে মূল্যবৃদ্ধির পূর্বাভাসও। কিন্তু কমাল আর্থিক বৃদ্ধির অনুমান। আগের ঋণনীতিতে তা কিছুটা ছেঁটে ৭.৮ শতাংশে নামিয়েছিল আরবিআই। এ দিন আরও কমিয়ে করল ৭.২%।
শুক্রবার রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের ঋণনীতি ঘোষণা শেষ হতেই ফের মোদী সরকারকে নিশানা করেছে বিরোধী কংগ্রেস। টুইটে দলের মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সূরজেওয়ালার কটাক্ষ, নতুন অর্থবর্ষের আট দিন পেরোতে না পেরোতেই বৃদ্ধির পূর্বাভাস কমল। মূল্যবৃদ্ধি ৪.৫% থেকে বেড়ে ৫.৭% হওয়ার ইঙ্গিত এল। এটাই কি তা হলে ‘‘অত্যন্ত অচ্ছে দিন’’-এর লক্ষণ?
বেশ কিছু দিন ধরেই দেশে মূল্যবৃদ্ধির হার উঁচুতে। রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের বেঁধে দেওয়া ৬ শতাংশের সহনসীমাও পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু অর্থনীতির উন্নতির স্বার্থে সুদ বাড়ায়নি আরবিআই। এমনকি আমানতকারীরা ব্যাঙ্কে টাকা রেখে যে সুদ পাচ্ছেন, মূল্যবৃদ্ধির নিরিখে তার থেকে আয় শূন্যের নীচে নামলেও। বরং আর্থিক বৃদ্ধিতে চোখ রেখে শিল্পে মূলধন জোগানোর পথ সহজ করতেই দেখা গিয়েছে তাদের। যে কারণে ১১টি ঋণনীতিতে সুদ স্থির। কিন্তু এ বার গভর্নর শক্তিকান্ত দাসের বার্তা, চড়া মূল্যবৃদ্ধির ঝুঁকি কমাতে তাঁদের লক্ষ্য অবস্থানগত বদল। যার মানে, সুদ কমানোর বদলে লক্ষ্য হবে তা বৃদ্ধি।
এর কারণ হিসেবে প্রধানত দু’টি বিষয়ের উল্লেখ করেছেন শক্তিকান্ত। এক, অশোধিত তেলের দাম, যা দেশে জ্বালানির দর বাড়িয়ে প্রায় সমস্ত প্রয়োজনীয় পণ্যকে দামি করেছে। দুই, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে কাঁচামাল-সহ বিভিন্ন পণ্যের জোগান সঙ্কট। দাম বেড়েছে এতেও।
ইউনাইটেড ব্যাঙ্কের প্রাক্তন সিএমডি ভাস্কর সেন বলেন, “মূল্যবৃদ্ধি বাদ দিয়ে ব্যাঙ্ক-ডাকঘরে সুদ বাবদ প্রকৃত আয় নেমেছে শূন্যের নীচে। তাই সুদ বৃদ্ধি জরুরি। আরবিআই-ও এটা বুঝতে পারছে। তারা সুদ না বাড়ালে আমানতকারীদের লোকসানের বহর চওড়া হবে। যা অর্থনীতির পক্ষে ভাল নয়।’’ বিশেষজ্ঞদের অনেকেরই দাবি, মূল্যবৃদ্ধিতে লাগাম পরাতে বাজারে নগদের জোগান কমাতে হবে। এই জন্য ব্যাঙ্কে টাকা রাখায় উৎসাহ দেওয়া দরকার। সুদ বাড়লে সেটা হতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy