নতুন অর্থবর্ষের প্রথম মাসেও দেশে যাত্রিবাহী গাড়ি বিক্রিতে ভাটার ছবি। টানা ১০ মাস ধরে অধিকাংশ গাড়ি সংস্থারই এক হাল। গাড়ি শিল্পের কর্তাদের দাবি, গাড়ি কেনার চাহিদা এখনও তেমন নেই। অনেকের আশা, নির্বাচন পর্ব মিটলে ও নতুন সরকার তৈরি হলে হয়তো চাহিদার পালে কিছুটা হাওয়া লাগবে।
দেশের উৎপাদনমুখী শিল্পের অন্যতম হল গাড়ি। সেই শিল্পের হাল দেশের আর্থিক অবস্থার একটা ইঙ্গিত দেয় বলে বরাবরের দাবি সংশ্লিষ্ট মহলের। এর আগে দেশের আর্থিক অবস্থার উন্নতির উদাহরণ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও সেই দাবিই করেছিলেন। তখন অবশ্য গাড়ি শিল্পের পক্ষে সুসময় ছিল। কিন্তু নোট বাতিল আর তড়িঘড়ি জিএসটি চালুর পর থেকে কার্যত খুঁড়িয়ে চলছে ওই ক্ষেত্র। সদ্য শেষ হওয়া অর্থবর্ষে (২০১৮-১৯) যাত্রিবাহী গাড়ি বিক্রি বেড়েছিল মাত্র ২.৭%। যা গাড়ি শিল্পের পূর্বাভাসের (৬%) চেয়েও কম।
গত এপ্রিলে দেশের বৃহত্তম গাড়ি সংস্থা মারুতি সুজুকি-সহ হুন্ডাই, টাটা মোটরস, মহীন্দ্রা অ্যান্ড মহীন্দ্রা, টয়োটা কির্লোস্কার মোটরের মতো বিভিন্ন সংস্থার যাত্রিবাহী গাড়ির বিক্রি কমেছে। ২০১৮ সালের এপ্রিলের চেয়ে গত এপ্রিলে মারুতি সুজুকির যাত্রিবাহী গাড়ি বিক্রি ১৮.৭%, হুন্ডাইয়ের ১০%, টাটা মোটরসের ২৬%, মহীন্দ্রার ৮.৯%, টয়োটার ২২.৪% কমেছে।
টাটা মোটরসের সংশ্লিষ্ট ব্যবসার প্রেসিডেন্ট ময়াঙ্ক পারীক বলেন, ‘‘টানা ১০ মাস গাড়ি শিল্পের ব্যবসা কমেছে। ক্রেতাদের চাহিদা অনেক কম। তার প্রভাব পড়েছে আমাদের সংস্থাতেও।’’
টয়োটা কির্লোস্কারের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর এন রাজার মতে, নির্বাচনের অনিশ্চয়তার জন্য গাড়ি ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। নতুন সরকার তৈরি না হওয়া পর্যন্ত তা চলবে বলেই তাঁর আশঙ্কা। নির্বাচনের জন্য চাহিদা কমার কথা বললেও মহীন্দ্রার সংশ্লিষ্ট ব্যবসার প্রেসিডেন্ট রাজন ওয়াধেরার দাবি, ‘‘স্বাভাবিক মরসুমের হাত ধরে এই অর্থবর্ষে বিক্রি বাড়বে, আশাবাদী আমরা।’’
তবে গত মাসে কিছু দু’চাকার গাড়ি সংস্থার বিক্রি বেড়েছে। যেমন বজাজ অটোর বিক্রি বেড়েছে ২.৫%। ৩% বিক্রি বেড়েছে টিভিএস মোটরের।
তবে গাড়ি সংস্থাগুলির এই হিসেব পাইকারি ব্যবসার। সংস্থাগুলি তাদের ডিলারদের এই সংখ্যায় গাড়ি বিক্রি করেছে। কিন্তু শো-রুম থেকে শেষ পর্যন্ত কত জন ক্রেতা তা কিনছেন সেটাও খতিয়ে দেখা জরুরি। গত কয়েক মাসের ছবিটা বলছে, পাইকারি বিক্রির চেয়েও সরাসরি ক্রেতার গাড়ি কেনার সংখ্যা আরও কম। ডিলারদের সংগঠনের হিসেব প্রকাশিত হলে বোঝা যাবে, এপ্রিলেও একই ধারা বজায় ছিল কি না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy