রফতানি।
তাইল্যান্ড সফরে ষোলো দেশের প্রস্তাবিত মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (আরসিইপি) নিয়ে আলোচনায় বসবেন নরেন্দ্র মোদী। চিনে রফতানি বাড়ানোর রাস্তা খুঁজতে তিনি হালে চিনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলেছেন মমল্লপুরমের একান্ত বৈঠকে। প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্পের লক্ষ্যও বিশ্বের অন্যতম পণ্য রফতানি কেন্দ্র হয়ে ওঠা। কিন্তু বাণিজ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট যে, গত সাতটি অর্থবর্ষে পণ্য রফতানি বেড়েছে মাত্র ৮.১৭%। আর বিশেষজ্ঞদের মতে, পরিকাঠামো ঢেলে সাজানো, পণ্য উৎপাদন ও পরিবহণ খরচ কমানো, নতুন বাজার খোঁজা, উদ্ভাবনে মন দেওয়ার মতো গোড়ার বিষয়ে জোর না-দিলে অসম্ভবই থেকে যাবে দ্রুত রফতানি বৃদ্ধির লক্ষ্যভেদ।
ভারতকে ৫ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতি করে তুলতে রফতানি যে ১ লক্ষ কোটি ছোঁয়া জরুরি, তা একাধিক বার বলেছেন মোদী। বিশেষত পণ্য রফতানিতে জোর দিতে চায় দিল্লি। কারণ, কল-কারখানায় তৈরি পণ্যের বিদেশেও বাজার বাড়লে, সেখানে লগ্নি আসবে। বাড়বে কর্মসংস্থান। এই চেষ্টাকে স্বাগত জানিয়েও অর্থনীতির গবেষক সুগত মারজিৎ বলেন, ‘‘রফতানিতে বহু সমস্যাই বহু পুরনো। পরিকাঠামোর অভাব, পণ্য উৎপাদন ও পরিবহণের চড়া খরচ, লাল ফিতের ফাঁসে প্রকল্পে দেরি, প্রশিক্ষণের অভাবে কর্মীদের দক্ষতার ঘাটতি ইত্যাদি। এগুলি না-মিটলে, বিশ্ব বাণিজ্যের গলাকাটা প্রতিযোগিতায় কল্কে পাওয়া শক্ত।’’
দিল্লি স্কুল অব ইকনমিক্সের অর্থনীতির অধ্যাপক দিব্যেন্দু মাইতি আবার কাঠগড়ায় তুলছেন নতুন বাজার খোঁজা ও উদ্ভাবনে অনীহাকে। রফতানি সংস্থাগুলিও মানে, বহু দিন ‘পূবে তাকাও’ নীতির কথা বললেও, এখনও আমেরিকা, ইউরোপের মতো প্রথাগত বাজারে বেশি জোর দেওয়া হয়। দিব্যেন্দুর প্রশ্ন, ‘‘মরিশাস, ফিজি থেকে শুরু করে বিশ্বের নানা প্রান্তে ভারতীয় পণ্যের চাহিদা আছে। কিন্তু তাদের পছন্দ বুঝে সেখানে রফতানির মাটি শক্ত করার তাগিদ কম।’’
তথ্য বলছে, বিশ্বে আমদানিতে কর ছাড়া অন্য বাধার দেওয়াল ভারতেই অন্যতম উঁচু। শাস্তি-শুল্ক বসানোতেও এক নম্বরে। দিব্যেন্দুর বক্তব্য, ‘‘দেশীয় শিল্পকে বাঁচাতে করের রক্ষাকবচ চাই। কিন্তু প্রতিযোগিতা, উদ্ভাবনের উঠোনে নামতে নারাজ সংস্থার চাপে নিজেদের বাজার বন্ধ করে রাখলে, অন্য দেশই বা তা ভারতের জন্য খুলবে কেন?’’
শুধু উৎপাদন খরচ কমানোই নয়। অনেক ক্ষেত্রে বিশ্ব বাজারে বিপণন ও ঠিকঠাক ব্র্যান্ডের মোড়কে পণ্য তুলে ধরায় খামতি আছে। রয়েছে দরের লড়াইয়ে জুঝতে নাস্তানাবুদ হওয়াও। আইআইএম-ক্যালকাটার অর্থনীতির অধ্যাপক মৃত্যুঞ্জয় মোহান্তি বলেন, ‘‘ভাল মানের পোশাক বিশ্ব বাজারে ঠিক ভাবে পেশ করতে না- পেরে বস্ত্র রফতানিতে বাংলাদেশ, ভিয়েতনামের চেয়ে পিছিয়ে পড়ছে ভারত। বহুজাতিক সংস্থার সস্তার জেনেরিক ওষুধ চাপে ফেলেছে দেশীয় শিল্পকে।’’ বিশেষজ্ঞদের মতে, তাই রফতানিতে গতি আনতে আগে এই সব সমস্যার সমাধান জরুরি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy