ছবি রয়টার্স।
সিঙ্গুর থেকে টাটা মোটরস ন্যানো তৈরির কারখানা সরানোর পরে নরেন্দ্র মোদী সাদর অভ্যর্থনা জানিয়ে তাঁদের গুজরাতের সানন্দে নিয়ে গিয়েছিলেন। সেই সানন্দেই আমেরিকার ফোর্ড মোটর কারখানা তৈরির পরে ২০১১-র জুলাইয়ে মোদী সগর্বে ঘোষণা করেছিলেন, আমেরিকার বাইরে এই সংস্থার সব থেকে বড় কারখানার জন্য গুজরাত গর্বিত। এর ফলে ৩৬ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে। ১০ বছর পরে সেই ফোর্ড মোটরই এ দেশে গাড়ি তৈরি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরে সমালোচনার মুখে পড়লেন প্রধানমন্ত্রী। বিরোধীদের অভিযোগ, এক দিকে বেকারত্ব বাড়ছে। অন্য দিকে মোদী সরকারের নীতির ব্যর্থতায় বন্ধ হচ্ছে কারখানা। ডিলারদের অভিযোগ ছিল, সব মিলিয়ে কাজ হারানোর আশঙ্কা ৪০,০০০-এরও বেশি কর্মীর।
বৃহস্পতিবারই সরকারি পরিসংখ্যান জানিয়েছে, গত অক্টোবর-ডিসেম্বরে দেশে বেকারত্বের হার ১০ শতাংশের উপরে ছিল। আজ রাহুল গাঁধী সে দিকে আঙুল তুলে কটাক্ষ করেছেন, দেশের ‘বিকাশ’ করে ‘আত্মনির্ভর’ অন্ধকার নগরী তৈরি করে ফেলেছেন মোদী। কারখানা বন্ধের জন্য বিক্রির অভাবকেই দায়ী করেছে ফোর্ড। কংগ্রেস মুখপাত্র জয়বীর শেরগিল বলেন, “অগস্ট মাসেও বেকারত্বের হার ৮ শতাংশের উপরে ছিল। এ দিকে ফোর্ডের মতো সংস্থা কারখানা বন্ধ করছে। বাজারে চাহিদা নেই বলে অভিযোগ করছে। এর জন্য জ্বালানির আকাশছোঁয়া দামও দায়ী। এটাই ভোটারদের জন্য বিজেপির রিটার্ন গিফ্ট।”
সানন্দের পাশাপাশি চেন্নাইয়েও কারখানা রয়েছে ফোর্ডের। সানন্দের কারখানায় অন্য দেশের গাড়ির জন্য ইঞ্জিন তৈরি হলেও, চেন্নাইয়ের কারখানা পুরোপুরি বন্ধ হচ্ছে। সেখানে কর্মী সংখ্যা প্রায় ২৬০০ জন। আজ তামিলনাড়ু সরকার জানিয়েছে, ফোর্ডের থেকে কারখানা কেনার বিষয়ে অন্য সংস্থার কথা চলছে। রাজ্য সরকার এতে সাহায্য করবে। এতে কর্মীদেরও সুরাহা হবে।
এর আগে জেনারেল মোটরস এবং হার্লে ডেভিডসন ভারতে গাড়ি তৈরি বন্ধ করেছিল। শিবসেনার সাংসদ প্রিয়ঙ্কা চতুর্বেদী বলেন, “গত ফেব্রুয়ারিতেই কেন্দ্র সংসদে জানিয়েছিল, পাঁচটি গাড়ি তৈরির
সংস্থা গত কয়েক বছরে ভারত থেকে বিদায় নিয়েছে। সেই তালিকায় এ বার যোগ দিল ফোর্ডও।”
সরকারি সূত্রের অবশ্য পাল্টা দাবি, ফোর্ডের কারখানা বন্ধ হওয়ার জন্য মোদী সরকার নয়, সংস্থার ভুল কৌশল ও গাড়ি শিল্পের সমস্যা দায়ী। ফোর্ডের বিক্রি যেখানে কমেছে, কিয়া মোটরসের গাড়ির বিক্রি বেড়েছে। ফোর্ড ভারতের বাজারের সঙ্গে খাপ খাইয়ে কম দামের গাড়ি আনতে পারেনি। এখন চাহিদার অভাবকে দায়ী করেছে। একই সুরে সঙ্ঘ পরিবারের অর্থনৈতিক সংগঠন স্বদেশি জাগরণ মঞ্চের নেতা অশ্বিনী মহাজন বলেন, “অন্যান্যরা যেখানে মুনাফা করছে, ফোর্ড পারছে না। এর অর্থ হল, বাজার অর্থনীতিতে যারা প্রতিযেগিতায় এঁটে উঠতে পারবে, তারাই টিকে থাকবে। আমেরিকার সংস্থার তকমা থাকাটাই সাফল্যের জন্য যথেষ্ট নয়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy