চেন্নাইয়ে সাংবাদিক বৈঠকে নির্মলা সীতারামন। ছবি: পিটিআই
গাড়ি থেকে শুরু করে এফএমসিজি— কর্মী ছাঁটাইয়ের আতঙ্কে ভুগছে সব শিল্প ক্ষেত্র। তার মধ্যেই শুক্রবার রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে সংযুক্তিকরণের ঘোষণায় একই শঙ্কার মেঘ দানা বেঁধেছিল ব্যাঙ্কিং সেক্টরেও। কিন্তু সেই আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, ‘‘এক জন কর্মীও বাদ পড়বেন না।’’ নির্মলা সীতারামনের ঘোষণায় কিছুটা হলেও স্বস্তিতে ব্যাঙ্ক কর্মীরা। ‘দেশে কি আর্থিক মন্দা চলছে— এই প্রশ্ন কার্যত এড়িয়েই গিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।
তীব্র সঙ্কটে গাড়ি শিল্প। ফাস্ট মুভিং কনজিউমার গুডস থেকে প্রায় সব শিল্প ক্ষেত্রে আশঙ্কার কালো মেঘ। অধিকাংশ ক্ষেত্রে কর্মী ছাঁটাই করে পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা চলছে। তার মধ্যেই শুক্রবার রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সংযুক্তির ঘোষণা করেছিলেন নির্মলা সীতারামন। জানিয়েছিলেন ১০টি ব্যাঙ্ক একত্রিত করে চারটি ব্যাঙ্কে পরিণত হবে। অর্থমন্ত্রীর যুক্তি ছিল, এর ফলে ব্যাঙ্কগুলির ধার দেওয়ার ক্ষমতা বাড়বে। তাতে আর্থিক ক্ষেত্রে কিছুটা গতি আসবে।
শুক্রবার ঘোষণার সময়ও বলেছিলেন, সংযুক্তিকরণের ফলে কর্মীদের কোনও সমস্যা হবে না। কাউকে ছাঁটাই করা হবে না। কিন্তু তার পরেও এই সব ব্যাঙ্কগুলির কর্মী মহলে ব্যাপক উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়ে। ছাঁটাইয়ের আতঙ্ক জাঁকিয়ে বসে কর্মীদের মধ্যে। সেই শঙ্কা থেকেই ব্যাঙ্ক কর্মী-অফিসারদের ইউনিয়ন এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করেছে, আন্দোলনে নামার প্রস্তুতিও চলছে। কিন্তু শুক্রবারের সেই আশ্বাস আরও একবার স্পষ্ট করে কর্মী মহলের শঙ্কা দূর করার চেষ্টা করলেন সীতারামন।
আরও পড়ুন: ‘প্রতিহিংসার রাজনীতি ছাড়ুন’, জিডিপি বৃদ্ধির হার নিয়ে মোদী সরকারকে কটাক্ষ মনমোহনের
রবিবার চেন্নাইয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন অর্থমন্ত্রী। কর্মী সংগঠনগুলির আন্দোলনের প্রসঙ্গে প্রশ্ন তুলতেই অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমি এই ব্যাঙ্কগুলির প্রতিটি কর্মী ইউনিয়নকে আশ্বস্ত করছি, আমার শুক্রবারের বক্তব্যের কথা মনে রাখুন। যখন ব্যাঙ্কগুলির সংযুক্তিকরণের ঘোষণা করেছিলাম, তখন আমি স্পষ্ট করে এটা বলছিলাম যে একজন কর্মীকেও বাদ দেওয়া হবে না। এক জনও না।’’ কিন্তু তাতেও কর্মীদের আস্থা ফিরবে কতটা, তা নিয়ে সন্দিহান কর্মী-অফিসার ইউনিয়নের নেতাদের একাংশ।
জিডিপি বৃদ্ধির হার তলানিতে। ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে ছ’বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। বৃদ্ধির এই অধোগতির জন্য মোদী সরকারকেই দায়ী করেছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ও অর্থনীতিবিদ মনমোহন সিংহ। রবিবারই তিনি বলেছেন, সব ক্ষেত্রে মোদী সরকারের চূড়ান্ত অব্যবস্থার জন্যই জিডিপি বৃদ্ধির হার পাঁচ শতাংশে নেমে এসেছে। মোদী সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসার রাজনীতির অভিযোগও তুলেছিলেন ইউপিএ জমানার পর পর দু’বারের প্রধানমন্ত্রী। স্বভাবতই এ নিয়ে সাংবাদিকরা অর্থমন্ত্রীকে প্রশ্ন করেন। কিন্তু সেই প্রশ্ন কার্যত উপেক্ষাই করলেন সীতারামন। তিনি বলেন, ‘‘ডক্টর মনমোহন সিংহ কি এটা বলেছেন যে প্রতিহিংসার রাজনীতি ছেড়ে সুস্থ মস্তিষ্কের পরামর্শ নিতে? ঠিক আছে, ধন্যবাদ। আমি এ বিষয়ে ওঁর মতামত নেব। এটাই আমার উত্তর।’’
FM on being asked 'Are we witnessing economic slowdown, Is govt acknowledging there is slowdown?': I'm meeting industries&taking their inputs,suggestions on what they would want&expect from govt, I'm responding to them.I have already done this twice.I will do it more no. of times pic.twitter.com/JY88oTr6Vx
— ANI (@ANI) September 1, 2019
আরও পড়ুন: অসম এনআরিসতে বাদ ১ লাখ গোর্খা, কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ মমতার
গাড়ি শিল্প থেকে ফাস্ট মুভিং কনজিউমার গুডস (এফএমসিজি), উৎপাদন শিল্প, আর্থিক সংস্থা থেকে পরিকাঠামো— সব ক্ষেত্রেই কার্যত অশনি সঙ্কেত। ঘুরে দাঁড়াতে সাময়িক উৎপাদন বন্ধ, কর্মী সংকোচন, বিক্রি ধরে রাখতে লোভনীয় অফারের মতো নানা পন্থা নিচ্ছে বেসরকারি শিল্পক্ষেত্র। বিশেষজ্ঞরা বলছেন কার্যত মন্দাই চলছে শিল্পক্ষেত্রে। কিন্তু বিভিন্ন সময়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী সে কথা কার্যত মানতে চাননি। বরং বিশ্ব অর্থনীতির ধীর গতির দিকে ইঙ্গিত করেছেন। রবিবার নির্দিষ্ট করে এই প্রশ্নটিই করেন সাংবাদিকরা— দেশে কি ‘স্লো-ডাউন’ চলছে, সরকার কি এ কথা মেনে নিচ্ছে?
জবাবে তিনি বলেন, শিল্পমহলের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের কাছ থেকে তথ্য নিচ্ছি, পরামর্শ নিচ্ছি। সরকারের কাছে তারা কী চায় এবং সরকারের কাছ থেকে কী পদক্ষেপ আশা করে। আমি তাদের সঙ্গে কথা বলছি। ইতিমধ্যেই দু’বার কথাও বলছি। আরও একাধিক বার কথা বলব।’’ অর্থাৎ সরাসরি জবাব এড়িয়ে শিল্পে ধীরগতির কথা যেমন স্বীকার করেননি, তেমন অস্বীকারও করেননি সীতারামন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy