প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং।
বৃদ্ধির অঙ্ক কষতে বারণ করে পীযূষ গয়াল ‘আইনস্টাইন-কাণ্ড’ ঘটিয়ে বসার দিনেই অর্থনীতির সঙ্কট নিয়ে ফের উদ্বেগ প্রকাশ করলেন মনমোহন সিংহ। মোদী সরকারকে তুলোধোনা করে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগ, লম্বা সময়ের জন্য অর্থনীতি ঝিমিয়ে পড়ার মুখে দেখেও কেন্দ্র নির্বিকার, আত্মতুষ্ট। যে গালভরা প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিজেপি ভোটে জিতে এসেছিল, তার সঙ্গে বিস্তর ফারাক বাস্তবেরও।
বৃহস্পতিবার কংগ্রেসের সদর দফতরে হওয়া যে বৈঠকে মনমোহন বেহাল অর্থনীতি নিয়ে কেন্দ্রকে নিশানা করেছেন, সেখানেই দলের বিক্ষোভকে সাধারণ মানুষের দরজায় নিয়ে যাওয়ার ডাক দিয়েছেন দলনেত্রী সনিয়া গাঁধী। তাঁর কথায়, ‘‘অর্থনীতি সঙ্কটে। কাজ হারাচ্ছেন বহু মানুষ। অথচ সরকার দিশাহীন।’’ সাধারণ মানুষের সামনে এই সমস্যার কথা তুলে ধরতে ২০ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর রাজ্যস্তরের কমিটিগুলিকে কনভেনশন আয়োজনের ডাক দিয়েছেন তিনি। জাতীয় স্তরে বিক্ষোভ কর্মসূচি ১৫ থেকে ২৫ অক্টোবর।
এ দিন কংগ্রেসের বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে প্রথমে অর্থনীতির পর্যালোচনা ছিলই না। কিন্তু শুরুতেই বিষয়টি তোলেন খোদ সনিয়া। মুখ খোলেন মনমোহন। তথ্য তুলে ধরে বোঝান, কেন দীর্ঘ মেয়াদি শ্লথ বৃদ্ধির সামনে দাঁড়িয়ে ভারতের অর্থনীতি। কী ভাবে তার ছাপ পড়ছে কৃষি, কল-কারখানা, গাড়ি শিল্প, আবাসন থেকে শুরু করে প্রায় সমস্ত ক্ষেত্রে। ফলে তার বিরূপ প্রভাব পড়ছে কর্মসংস্থান, টাকা, শেয়ার বাজারেও। তাঁর আক্ষেপ, বেহাল অর্থনীতিকে ঘুরিয়ে দাঁড় করাতে যখন ত্রাণ প্রকল্পের দরকার ছিল, প্রয়োজন ছিল বলিষ্ঠ সরকারি সিদ্ধান্ত, তখন সরকার তা না-করে অন্য দিকে নজর ঘোরাতে ব্যস্ত। তাঁর বক্তব্য, পাঁচটি ত্রৈমাসিক ধরে বৃদ্ধির হার কমতে কমতে এপ্রিল-জুনে দাঁড়িয়েছে ৫%। এমন চলতে থাকলে ক্রমশ আরও খারাপের দিকে গড়াবে অর্থনীতির চাকা। কঠিন হবে সেই খাদ থেকে চট করে উঠে আসাও।
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর যুক্তির পাশে দাঁড়িয়ে জেল থেকে পরিবার মারফত প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের টুইট, ‘‘এমন কোনও ক্ষেত্র নেই, যেখানে নিজে থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত স্পষ্ট। তাকে ঘুরিয়ে দাঁড় করাতে পারে একমাত্র সরকারের সাহসী পদক্ষেপই। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তার দেখা নেই।’’
এ প্রসঙ্গে রাহুল গাঁধীর ও কটাক্ষ, ‘‘শুধু পরিকল্পিত প্রচার আর বানানো খবরে পরিস্থিতি শোধরানোর নয়। অর্থনীতির হাল বিগড়ানোর জন্য বোকার মতো নতুন প্রজন্মকে দুষেও লাভ নেই।’’
সম্প্রতি গাড়ি শিল্পের মুখ থুবড়ে পড়ার কারণ বিশ্লেষণ করতে গিয়ে নতুন প্রজন্মের অ্যাপ-ক্যাবের দিকে ঝোঁকার কথা বলে বিতর্ক বাঁধিয়েছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। পাঁচ বছরে ৫ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতির স্বপ্ন ফেরি করলেও, অর্থনীতির বেহাল দশা নিয়ে কার্যত মুখে কুলুপ প্রধানমন্ত্রীর। এই ছবিই আমজনতার দরজায় নিয়ে যেতে কোমর বাঁধতে চাইছে কংগ্রেস।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy