—প্রতীকী ছবি।
খরিফ মরসুমের খাদ্যশস্য ভরে রাখার কাজ ধাপে ধাপে শুরু হয়ে গিয়েছে বিভিন্ন রাজ্যে। কিন্তু জোগানে ঘাটতি থাকায় চাহিদা মতো চটের বস্তা পাওয়া যাচ্ছে না। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, এই পরিস্থিতিতে সেই ঘাটতি মেটাতে এ বার কেন্দ্রীয় খাদ্য মন্ত্রকের পক্ষ থেকে ২ লক্ষ বেল (১ বেল মানে ৫০০টি বস্তা) প্লাস্টিকের বস্তা কেনার জন্য অনুমোদন চাওয়া হয়েছে বস্ত্র মন্ত্রকের কাছে। আর তাতেই উদ্বেগ বেড়েছে পশ্চিমবঙ্গের চটকলগুলির। কারণ সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, শেষ পর্যন্ত এই প্রস্তাবে সায় মিললে সব থেকে বেশি ক্ষতি গুনতে হবে তাদেরই। উল্লেখ্য, দেশের বেশির ভাগ চটকল এ রাজ্যেই অবস্থিত।
বস্ত্র মন্ত্রক অবশ্য ইতিমধ্যেই দেশের সমস্ত চটকলগুলিকে দ্রুত উৎপাদন বাড়িয়ে অক্টোবরের মধ্যে বস্তা সরবরাহের নির্দেশ দিয়েছে। যাতে শেষ পর্যন্ত এত বস্তার বরাত হারিয়ে বিপাকে না পড়তে হয় চট শিল্পকে।
এ বছর খরিফ মরসুমে কৃষি প্রধান রাজ্যগুলি প্রায় ১৯.০৪ লক্ষ বেল চটের বস্তার প্রয়োজন হবে বলে জানিয়েছিল। যার মধ্যে চটকলগুলিকে ১৩.১০ লক্ষ বেল বস্তা তৈরির বরাত দেওয়া হয়। রাজ্যের জুট কমিশনার অফিস সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত মাত্র ৯.৭৭ লক্ষ বেল বস্তা পাওয়া গিয়েছে। ঘাটতি ৩.৩৩ লক্ষ বেল। ফলে চিন্তায় পড়েছে খাদ্য মন্ত্রক।
এক নজরে • খাদ্যশস্য ভরার ক্ষেত্রে ভারতে ১০০% চটের বস্তার ব্যবহার বাধ্যতামূলক। • ওই বস্তার মোট বরাদ্দের ৮৫% জোগান দেওয়ার কথা পশ্চিমবঙ্গের। • কারণ চটকলের সংখ্যা এ রাজ্যেই সবচেয়ে বেশি। পশ্চিমবঙ্গ, অন্ধ্রপ্রদেশ, বিহার, উত্তরপ্রদেশ, অসম, ওড়িশা, ছত্তীসগঢ় ও ত্রিপুরা মিলিয়ে মোট ৮৯টি। আর এর মধ্যে ৬৬টিই এ রাজ্যে। যার বেশ কয়েকটি বড় চটকল। • বস্তা কিনতে কেন্দ্র বছরে গড়ে খরচ করে ৬,০০০ কোটি টাকা। • তবে চটের ঘাটতি মেটাতে অনেক মরসুমেই এখন প্লাস্টিকের বস্তা কিনতে হচ্ছে খাদ্য মন্ত্রককে। সূত্র: শিল্প মহল
রাজ্যের চটকল মালিকদের একাংশের দাবি, নানা কারণে শ্রমিকের অভাবে বহু মিলে সব শিফ্টে বস্তা তৈরির কাজ চালানো যাচ্ছে না। আর তার ফলেই সরবরাহে সমস্যা দেখা দিয়েছে। অন্য দিকে জুট কমিশনারের অফিসের এক কর্তা জানিয়েছেন, উৎপাদন বাড়ানোর উপরে চটকলগুলিকে বারবার জোর দিতে বলা হচ্ছে। কিন্তু তাতে বিশেষ লাভ হচ্ছে না। বাধ্য হয়েই তাই খাদ্য মন্ত্রককে বিকল্প উপায়ের কথা ভাবতে হচ্ছে।
উল্লেখ্য, খাদ্য শস্য ভরার জন্য চটকলগুলির কাছ থেকে বাধ্যতামূলক ভাবে চটের বস্তা কেনার যে নিয়ম রয়েছে, কেন্দ্রের মন্ত্রিসভার আর্থিক বিষয়ক কমিটি গত কয়েক বছর ধরেই তা ধাপে ধাপে কমিয়ে আনার কথা বলছে। কেন্দ্রীয় অর্থ ও খাদ্য মন্ত্রকও একই পথে হাঁটতে চায়। কেন্দ্রীয় সচিব পর্যায়ের কমিটির প্রস্তাব ছিল, গমের ক্ষেত্রে দশ বছরে ধাপে ধাপে চটের বস্তা কেনার বাধ্যতামূলক নিয়মের পুরোটাই বাতিল করা হোক।
কিছু রাজ্যও বাধ্যতামূলক ভাবে চটের বস্তা ব্যবহারের বিরুদ্ধে। কিন্তু বস্ত্র মন্ত্রক পাটশিল্পের সঙ্গে জড়িত কয়েক লক্ষ কৃষক, শ্রমিকের স্বার্থ রক্ষার কারণ দেখিয়ে তা আটকে রেখেছে। যদিও একটি সূত্রের দাবি, চাহিদা মতো বস্তার জোগান না দিতে পারায় অনেক মরসুমেই অন্তত কিছু প্লাস্টিকের বস্তা কেনার জন্য খাদ্য মন্ত্রককে অনুমোদন দিতে হয়। কিন্তু খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্লাস্টিক ব্যবহারের বিরুদ্ধে। দেশবাসীকে এক বার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বর্জনের ডাক দেওয়া হচ্ছে। এই প্রেক্ষিতে এ বছর শস্য ভরতে প্লাস্টিক বস্তা ব্যবহার হোক, তা চাইছেন না বস্ত্র মন্ত্রকের কর্তারা। তাই ঘাটতি পূরণের লক্ষ্যে চেষ্টা চলছে চটকলগুলিকে দিয়ে দ্রুত ও বেশি বস্তা উৎপাদন করানোর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy