Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
Gold

আশা-আশঙ্কার দোলায় নতুন বছরে গয়না শিল্প

এ তো গেল বিদায়ী বছর। কিন্তু নতুন বছরে কী অপেক্ষা করে রয়েছে স্বর্ণ ব্যবসায়ী ও লগ্নিকারীদের জন্য?

—প্রতীকী ছবি

—প্রতীকী ছবি

প্রজ্ঞানন্দ চৌধুরী
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ ০৪:৫৭
Share: Save:

লগ্নির ঠিকানা হিসেবে সোনার কদর হু হু করে বেড়েছে। যার জেরে হলুদ ধাতুটির দামও বেড়েছে রকেটের গতি। মুনাফা এসেছে লগ্নিকারীদের পকেটে। কিন্তু গয়নার ব্যবসায়ীরা? তাঁদের দাবি, এই আগুন দামের ফলে ক্রেতারা ধাতব সোনা বা গয়নায় হাত ছোঁয়াতে পর্যন্ত পারছেন না। আর মরার উপরে খাঁড়ার ঘা দিয়েছে লকডাউন। বছরের একটা গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ব্যবসার ঝাঁপটাই বন্ধ রাখতে হয়েছে।

এ তো গেল বিদায়ী বছর। কিন্তু নতুন বছরে কী অপেক্ষা করে রয়েছে স্বর্ণ ব্যবসায়ী ও লগ্নিকারীদের জন্য? এই প্রশ্নে সংশ্লিষ্ট মহল দু’ভাগ হয়েছে। তাঁদের একাংশ বলছেন, লকডাউন ওঠার পরে গয়নার বিক্রিবাটা শুরু হয়েছে। বিয়ে-সহ বিভিন্ন পারিবারিক অনুষ্ঠান চালু হওয়ায় ব্যবসার পালে ফের হওয়া লাগবে। কিন্তু অনেকের বক্তব্য, আসছে বছর প্রতি ১০ গ্রাম সোনার দাম ৬০,০০০ টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে। তাতে লগ্নিকারীদের পৌষ মাস হলেও চাপ বাড়বে গয়না ব্যবসায়ীদের।

২০২০ সালে কলকাতায় ১০ গ্রাম ২৪ ক্যারাট সোনার দাম বেড়েছে ১১,০৬৫ টাকা। তার চেয়েও তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, বছরের মাঝখানে সোনার দাম ওঠানামা করেছে অত্যন্ত দ্রুত। তাকে কাজে লাগিয়ে লগ্নিকারীদের একাংশ ভাল মুনাফা করেছেন। কিন্তু গয়না ব্যবসায়ী এবং কারিগরদের কাছে বছরটা ছিল দুঃস্বপ্নের। আসছে বছর নিয়ে তাঁদের অনেকে আশাবাদী। বঙ্গীয় স্বর্ণশিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক টগর পোদ্দার বলেন, ‘‘কাজ হারানো কারিগরেরা সকলেই এখন তাকিয়ে নতুন বছরের দিকে।’’

আরও পড়ুন: নতুন স্ট্রেনের মধ্যেই অক্সফোর্ডের টিকা ব্যবহারে অনুমতি দিল ব্রিটেন

সোনার কারবারিদের একাংশ আবার মনে করছেন, অনেক কিছুই নির্ভর করছে করোনার টিকার উপরে। জেম অ্যান্ড জুয়েলারি ডোমেস্টিক কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অনন্ত পদ্মনাভনের কথায়, ‘‘অতিমারি সাধারণ ক্রেতার আত্মবিশ্বাসে আঘাত করেছে। করোনার টিকা প্রয়োগ সেই আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনবে। সে ক্ষেত্রে ২০১৯ সালে দেশে গয়না ব্যবসার যা পরিস্থিতি ছিল, আগামী বছর তার ৮০% ফিরে আসতে পারে।’’ অ্যাসোসিয়েশন অব গোল্ড রিফাইনারি অ্যান্ড মিন্টসের সেক্রেটারি হর্ষদ অজমেরার বক্তব্য, ‘‘গয়না কেনার সামর্থ থাকলেও অনেকেই এখন নগদ টাকা হাতে রাখতে চাইছেন। তবে অতিমারির সমস্যা কমতে শুরু করলে তাঁরা ফের দোকানমুখী হবেন।’’

আরও পড়ুন: অপুষ্টিতে মৃত্যুই কি ভবিষ্যৎ শামিমদের

স্বর্ণশিল্প বাঁচাও কমিটির কার্যকরী সভাপতি বাবলু দে অবশ্য কিছুটা সতর্ক। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আন্তর্জাতিক সোনার খনির মালিকদের ধারণা, ২০২১ সালে প্রতি আউন্স সোনার দাম ২০০০ ডলার ছুঁয়ে ফেলবে। এখন যা ১৮৭৯ ডলার। সে ক্ষেত্রে আগামী বছর দেশে সোনার দাম ৬০,০০০ টাকা ছাড়াবে।’’ অর্থাৎ, গয়নার ব্যবসায়ীদের উপরে চাপ থাকবেই, আর পোয়াবারো লগ্নিকারীদের। ওয়েস্ট বেঙ্গল বুলিয়ান মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক দীনেশ কাবরার বক্তব্য, ‘‘করোনার মোকাবিলায় আমেরিকা এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশ যে ত্রাণ প্রকল্প চালু করেছে, তাতে বাজারে নগদের জোগান দ্রুত বাড়বে। যার একটা অংশ লগ্নি হবে সোনায়।’’

দাম বাড়ার প্রশ্নেও বিপরীত মত রয়েছে। পণ্য লেনদেন বাজার বিশেষজ্ঞ ভিস্তা ইনটেলিজেন্সের ম্যানেজিং ডিরেক্টর অরিন্দম সাহা মনে করেন, ‘‘২০২১ সালে বন্ডের আয় বাড়বে। মূল্যবৃদ্ধি মাথা তোলার সম্ভাবনাও কম। ফলে সোনার দাম যতটা বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে, ততটা না-ও হতে পারে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Gold Jewelry Industry new year
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy