Advertisement
১৮ ডিসেম্বর ২০২৪
Tax Structure

কোন কর কাঠামোয় লাভ, হিসাব কষুন তাড়াতাড়ি

একটা কথা মনে রাখা দরকার— একটি থেকে অন্য কাঠামোয় সরে যাওয়ার সুযোগ প্রত্যেক বছরই থাকবে, যদি না সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ব্যবসা অথবা পেশাগত আয় থাকে। এই দুই সূত্র থেকে আয় থাকলে মাত্র এক বারই তার কর কাঠামো বদলানো যাবে।

An image of calculation

— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

অমিতাভ গুহ সরকার
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০২৪ ০৭:৩৬
Share: Save:

চলতি অর্থবর্ষ (২০২৩-২৪) শেষ হতে বাকি আর ঠিক আড়াই মাস। তবে হাতে সময় আছে বলে বসে থাকলে চলবে না। নতুন নাকি পুরনো, কোন আয়কর কাঠামোয় থাকতে চাইছেন, সে ব্যাপারে চটজলদি ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এ বার থেকে নতুন কাঠামোই হবে মূল কাঠামো। ফলে যে ব্যবস্থায় নাম লিখিয়ে আয়কর কাটাতে চাইবেন করদাতা, সেটা আগেভাগে জানিয়ে দিতে হবে নিয়োগকারীকে। সেই অনুযায়ী উৎসে কর কাটবে তারা। একটা কথা মনে রাখা দরকার— একটি থেকে অন্য কাঠামোয় সরে যাওয়ার সুযোগ প্রত্যেক বছরই থাকবে, যদি না সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ব্যবসা অথবা পেশাগত আয় থাকে। এই দুই সূত্র থেকে আয় থাকলে মাত্র এক বারই তার কর কাঠামো বদলানো যাবে।

এখন প্রশ্ন হল, কোন কাঠামো কার জন্য বেশি সুবিধাজনক তা কী করে বুঝবেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি? এর জন্য সব থেকে আগে দুই কাঠামোর মূল বৈশিষ্টগুলি জানতে হবে। যেমন—

  • পুরনো কাঠামোয় আয়কর আইনের বিভিন্ন ধারায় একগুচ্ছ ছাড় পাওয়া যায়। নতুন কাঠামোয় তা মেলে হাতে গোনা কয়েকটি ক্ষেত্রে।
  • পুরনোটিতে ৮৭এ ধারায় রিবেট সমেত বছরে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত রোজগার পুরোপুরি করমুক্ত। আর নতুনে করমুক্ত আয়ের সীমা ৭ লক্ষ টাকা। যাঁদের আয় বছরে ৭.২৭ লক্ষ টাকার বেশি, তাঁদের ক্ষেত্রে আয়করের হিসাব কষা হবে ৩ লক্ষ টাকারপর থেকে।
  • পুরনো কাঠামোয় করের স্তর চারটি, নতুনে ছ’টি।
  • নতুনে অধিকাংশ ক্ষেত্রে করছাড় পাওয়া না গেলেও, ১৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত রোজগারে করের হার খানিকটা কম। আয় ১৫ লক্ষ টাকার বেশি হলে দুই কাঠামোতেই কর গুনতে হবে ৩০ শতাংশ হারে।
  • পুরনো এবং নতুন, দু’টি কাঠামোতেই চাকরিজীবী এবং পেনশন প্রাপকেরা স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন বাবদ ৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত ছাড় পান।
  • যে সমস্ত ছাড় পুরনো কাঠামোয় পাওয়া যাবে কিন্তু নতুনে নয়, তার মধ্যে রয়েছে— আয়কর আইনের ৮০সি ধারায় ১.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লগ্নি, বাড়ি ভাড়া ভাতা, গৃহ ঋণের সুদ, স্বাস্থ্য বিমার প্রিমিয়াম, শিক্ষা ঋণের সুদ, ভ্রমণ ভাতা, ৮০ সিসিডি (১বি) ধারা অনুযায়ী এনপিএস প্রকল্পে জমা।
  • তবে নিয়োগকর্তা যদি আয়কর আইনের ৮০ সিসিডি (২) ধারা অনুযায়ী, কর্মীর এনপিএস অ্যাকাউন্টে নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা জমা দেন, তার দরুণ ছাড় পাওয়া যায় দুই কাঠামোতেই।
  • একটি হিসাব থেকে দেখা যাচ্ছে, মোট প্রাপ্য ছাড়ের পরিমাণ যদি ৩.৭৫ লক্ষ টাকার বেশি হয়, তা হলে নতুনের তুলনায় পুরনো কাঠামোটিকেই বেশি লাভজনক বলে মনে হবে।

তাই সমস্ত হিসাব কষে দ্রুত কর কাঠামো বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং আগেভাগেই নিয়োগকর্তাকে তা জানিয়ে দেওয়া জরুরি। কোন সংস্থা কী ভাবে গোটা বিষয়টি পরিচালনা করবে, সেটা তাদের ব্যাপার। তবে কাঠামো পছন্দের বিষয়টি করদাতাকেইকরতে হবে।

যাঁরা মোটা বাড়ি ভাড়া ভাতা পান, গৃহ ঋণ অথবা শিক্ষা ঋণ নিয়েছেন, ৮০সি ধারায় পুরো ১.৫ লক্ষ টাকা এবং এনপিএস অ্যাকাউন্টে ৫০,০০০ টাকা লগ্নি করতে চান, তাঁদের ক্ষেত্রে পুরনোটি বেশি লাভজনক বলে মনে হতে পারে। তবে এই কাঠামোয় থাকার সিদ্ধান্ত নিলে তাড়াতাড়ি করে সেরে ফেলতে হবে বিনিয়োগের কাজও। নতুনটিতে থাকতে চাইলে অবশ্য তেমন কিছু করণীয় নেই করদাতার।

যে সমস্ত মানুষের বার্ষিক রোজগার ৫ লক্ষ থেকে ৭ লক্ষ টাকার মধ্যে, তাঁদের জন্য অবশ্য নতুন কাঠামো বেশি লাভজনক বলে মনে হয়। তাঁদের কোনও কর দিতে হবে না। অর্থাৎ, মাসে ৫৮,৩৩৩ টাকা পর্যন্ত আয়ে কোনও কর বসবে না। এর সঙ্গে স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন ধরলে ৬২,৫০০ টাকা পর্যন্ত করমুক্ত। তবে পুরনো কাঠামোতেও বছরে ৭ লক্ষ টাকা পর্যন্ত রোজগার করমুক্ত হতে পারে, যদি ২ লক্ষ টাকা কিংবা তার বেশি ছাড় পাওয়া যায়।

(মতামত ব্যক্তিগত)

অন্য বিষয়গুলি:

tax structure New Income Tax Structure Indian Econo
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy