Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
BSE SENSEX

BSE Sensex: দুর্বল বাজারে চাপ মূল্যবৃদ্ধিরও

ভারতীয় শেয়ার বাজারে ওমিক্রনের প্রথম ধাক্কা লাগে ২৬ নভেম্বর। সে দিন সেনসেক্স ও নিফ্‌টি যথাক্রমে ১৬৮৮ এবং ৫১০ পয়েন্ট পড়েছিল।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

অমিতাভ গুহ সরকার
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০২১ ০৬:২৬
Share: Save:

বহু দিন চাঙ্গা থাকার পরে বছর শেষে বেশ নড়বড়ে দেখাচ্ছে শেয়ার বাজারকে। গত সপ্তাহে ১৭৭৫ পয়েন্ট খুইয়ে সেনসেক্স কোনওক্রমে ধরে রেখেছে ৫৭ হাজারের কোঠা। ৫২৬ পয়েন্ট হারিয়ে নিফ্‌টি নেমেছে ১৭ হাজারের নীচে। বাজারের এই ভাঙনে বড় শেয়ারগুলির তুলনায় দ্রুত জমি হারাচ্ছে ছোট ও মাঝারি মাপের শেয়ার। তবে গত এক বছরের নিরিখে হিসাব কষলে দেখা যাবে, সূচক এখনও যথেষ্ট উঁচুতে। গত বছর ১৮ ডিসেম্বর সেনসেক্স ছিল ৪৬,৯৬১ পয়েন্টে। অর্থাৎ, এখনকার তুলনায় ১০ হাজার পয়েন্ট পিছনে। নিফ্‌টির অবস্থান ছিল ১৩,৭৬১। দুই সূচক এখনও এতটা উপরে থাকায় এই প্রতিকূল পরিস্থিতিতে বাজারের আরও নামার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।

ভারতীয় শেয়ার বাজারে ওমিক্রনের প্রথম ধাক্কা লাগে ২৬ নভেম্বর। সে দিন সেনসেক্স ও নিফ্‌টি যথাক্রমে ১৬৮৮ এবং ৫১০ পয়েন্ট পড়েছিল। অস্থিরতা বজায় রয়েছে তার পরেও। ইউরোপে করোনার তৃতীয় ঢেউ বিশ্ব বাজারকেও চাপে রেখেছে। এরই পাশাপাশি, চাপ বাড়ছে বিভিন্ন দেশের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে। পরিস্থিতি সামাল দিতে সুদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্যাঙ্ক অব ইংল্যান্ড। আমেরিকার শীর্ষ ব্যাঙ্ক ফেডারাল রিজ়ার্ভও ২০২২ সালে তিন দফায় সুদ বাড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছে। অন্য দিকে, বাজারে নগদের জোগান কমানোর লক্ষ্যে করোনাকালে দেওয়া আর্থিক ত্রাণও গুটিয়ে আনার কথা ভাবছে বিভিন্ন দেশ। ফেডারাল রিজ়ার্ভ ঘোষণা করেছে, তারা বাজার থেকে ঋণপত্র কেনা বন্ধ করবে আগামী মার্চের মধ্যে। এর ফলে বাজারে নগদের জোগান কমবে। আবার সুদ বৃদ্ধির ফলে শিল্পের পুঁজির খরচও বাড়বে। অর্থাৎ, দু’টি সিদ্ধান্তই ভাল রকম ভোগাবে শিল্প এবং শেয়ার বাজারকে।

সুদ বৃদ্ধির বাতাবরণ তৈরি হয়েছে ভারতেও। নভেম্বরে পাইকারি মূল্যবৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ১৪.২৩%। একই মাসে খুচরো মূল্যবৃদ্ধির হার পৌঁছেছে ৪.৯১ শতাংশে। বন্ডের ইল্ড বেড়ে হয়েছে ৬.৪১%। ফেব্রুয়ারির বৈঠকে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের ঋণনীতি কমিটি কোন পথে হাঁটে সেটাই এখন দেখার। তবে পরিবর্তনশীল রিভার্স রেপো রেটের মাধ্যমে বাজারের অতিরিক্ত নগদের কিছুটা শুষে নেওয়ার ব্যবস্থা করেছে তারাও। এরই মধ্যে জমা ও ঋণের উপরে সুদ বৃদ্ধির পথে নেমেছে স্টেট ব্যাঙ্ক।

মূল্যবৃদ্ধিকে সামাল দিতে ভারত-সহ বিভিন্ন দেশ সুদ বাড়াতে শুরু করলে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে একুইটির বাজারে। বিশেষ করে আঘাত আসবে ব্যাঙ্ক এবং এনবিএফসি-র শেয়ারে। গত সপ্তাহে তথ্যপ্রযুক্তি বাদে অন্যান্য সব ক্ষেত্রের শেয়ারই নেমেছে। বাজার এতটা নামায় ন্যাভ কমেছে প্রায় প্রত্যেক একুইটি ফান্ডের। বন্ড ইল্ড বাড়ায় ন্যাভ কমেছে ঋণপত্র নির্ভর ফান্ডগুলিরও।

চলতি অর্থবর্ষেই এলআইসির প্রথম শেয়ার ছেড়ে বাজার থেকে মোটা টাকা তুলতে চায় সরকার। অথচ এই মুহূর্তে পরিস্থিতি ততটা অনুকূল নয়। অস্ত্র বলতে কেন্দ্রের হাতে আছে ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের বাজেট। সরকার হয়তো চেষ্টা করবে বাজেটের মাধ্যমে বাজারকে উৎসাহিত করার। অক্টোবর-ডিসেম্বরের জিডিপি এবং সংস্থাগুলির ফলাফলের প্রভাবও থাকবে বাজারে। অর্থনীতির বিভিন্ন সূচক ইতিবাচক ইঙ্গিত দেওয়ায় এখনকার নিম্নমুখী লগ্নিকারীদের উচিত হবে ভাল শেয়ার ধরে রাখা এবং প্রত্যেক পতনে তা আরও কেনা। ন্যাভ নামতে থাকলে ফান্ডে এসআইপি চালিয়ে যাওয়া।

(মতামত ব্যক্তিগত)

অন্য বিষয়গুলি:

BSE SENSEX Share Bazaar Stock Market Inflation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy