ফাইল চিত্র।
কর ছেঁটে কর্পোরেটকে বিপুল সুবিধা দেওয়ার পরেও লগ্নির কথা এখনও সে ভাবে মুখে আনছেন না বিনিয়োগকারীরা। বিভিন্ন ক্ষেত্রকে চাঙ্গা করতে সরকার একের পর এক প্রকল্প ঘোষণার পরেও সেই ঝিমিয়ে বৃদ্ধির হার। চাহিদা বাড়ন্ত। অথচ রাজকোষ ঘাটতি লক্ষ্যমাত্রায় বেঁধে রেখে সরকারি ব্যয় বিপুল বাড়ানোর রসদও ক্রমে কমে আসছে কেন্দ্রের ভাঁড়ারে। এই পরিস্থিতিতে অর্থনীতিতে প্রাণ ফেরাতে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের আরও সুদ কমাবে এমন আশা নিয়েই বসে কেন্দ্র ও শিল্পমহল। কিন্তু এ বার মূল্যবৃদ্ধি মাথা চাড়া দিতে শুরু করায়, সেই সুযোগও আর কত দিন মিলবে, উঠছে সেই প্রশ্ন।
এমনিতে এখনও খুচরো বাজারের মূল্যবৃদ্ধি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের লক্ষ্যমাত্রার (৪%) নীচে। কিন্তু সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের সমীক্ষা অনুযায়ী, সেপ্টেম্বরে তা পৌঁছতে পারে ৩.৭ শতাংশে। যা গত এক বছরে সব থেকে বেশি। অনেকে বলছেন, এতে আগামী ঋণনীতিতেও আর এক দফা সুদ ছাঁটাই হয়তো আটকাবে না। কিন্তু অর্থনীতির যা হাল, তাতে শুধু ওই ওষুধে তার চাঙ্গা হওয়ার লক্ষণ এখনও পর্যন্ত নেই। ফলে ঋণের কিস্তির অঙ্ক কমিয়ে চাহিদাকে চাঙ্গা করতে সুদ ছাঁটাইয়ের ‘প্রয়োজন’ সম্ভবত থাকবে তার পরেও। কিন্তু মূল্যবৃদ্ধির এই প্রবণতা বজায় থাকলে, তা আদৌ কতটা সম্ভব হবে, ঘুরপাক খাচ্ছে সেই প্রশ্নই।
উৎসবের এই মরসুমেও প্রায় সমস্ত পণ্যেরই চাহিদা তলানিতে। নতুন কাজের সুযোগ তৈরি তো দূর অস্ত্, বরং চাহিদায় ভাটার কারণে কারখানা বন্ধ থাকায় কাজ হারাচ্ছেন অনেকে। অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে বেশ কিছু পণ্য-পরিষেবায় জিএসটির হার কমিয়েছে সংশ্লিষ্ট পরিষদ। কেন্দ্র নানা সুবিধা ঘোষণা করেছে ধুঁকতে থাকা বিভিন্ন ক্ষেত্রের জন্য। বৃহস্পতিবার সে কথা ফের বলেছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। কর্পোরেট করে বিপুল ছাড় দিতে গিয়েই প্রায় দেড় লক্ষ কোটি টাকার ধাক্কা ঘাড়ে নিয়েছে কেন্দ্র। কিন্তু এর পরেও চলতি আর্থিক বছরে বৃদ্ধির পূর্বাভাস ৬.৮% থেকে ৬.১ শতাংশে নামিয়ে নিয়ে এসেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। এ দিনই তা কমিয়ে ৫.৮% করেছে মূল্যায়ন সংস্থা মুডি’জ-ও।
অর্থনীতির চাকায় গতি ফেরাতে সরকারি ব্যয় বৃদ্ধির সুপারিশ করেন অনেক অর্থনীতিবিদ। কিন্তু ইতিমধ্যেই বিপুল খরচের দায় ঘাড়ে চেপেছে। তার উপরে বৃদ্ধি ঢিমে হওয়ায় যার সাপেক্ষে ঘাটতি মাপা হয়, সে ভাবে বাড়বে না সেই জিডিপি-ও। তাই প্রশ্ন উঠেছে, রাজকোষ ঘাটতি নিয়ন্ত্রণে রেখে সরকারি ব্যয় বাড়ানো কিংবা কর ছাড় দেওয়া আর কতখানি সম্ভব।
আর ঠিক সেই কারণেই আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সুদ ছাঁটাই। চলতি বছরে মোট ১৩৫ বেসিস পয়েন্ট সুদ কমিয়েছে শীর্ষ ব্যাঙ্ক। কিন্তু চাহিদা চাঙ্গা হয়নি। ঋণের কিস্তি কমাতে আরও সুদ কমানোর পক্ষে সওয়াল করছে শিল্প। কিন্তু খুচরো মূল্যবৃদ্ধি মাথা তুলতে শুরু করলে, সেটা করা কতখানি সম্ভব হবে, আশঙ্কা সেখানেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy