Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
India-China Clash

বিদ্যুৎ শিল্পে চিনা যন্ত্র নয়, কড়া বার্তা মন্ত্রীর

এ দিন রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রীদের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সে সিংহ বলেন, বিদ্যুৎ শিল্পের প্রায় সব সরঞ্জাম তৈরি হয় দেশে।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২০ ০৩:৫১
Share: Save:

প্রধানমন্ত্রীর লাদাখ সফরের দিনেই ফের চিনা পণ্যের বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎমন্ত্রী রাজ কুমার সিংহ। জানালেন, সীমান্তে চিনা আগ্রাসনের পরে অন্তত বিদ্যুৎ শিল্পে কোনও যন্ত্র বা যন্ত্রাংশ ওই দেশ থেকে আমদানির অনুমতি দেবে না তাঁর মন্ত্রক। রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থাগুলিকেও দেশীয় সরঞ্জাম ব্যবহারের নীতি আঁকড়ে ধরার অনুরোধ জানাতে সমস্ত রাজ্যকে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

শুক্রবারই আবার ভারী মালপত্র ওঠানো-নামানোর ক্রেন তৈরি করতে এগিয়ে আসার জন্য দেশীয় সংস্থাগুলিকে ডাক দিয়েছে জাহাজ মন্ত্রক। বিদেশি অ্যাপ এবং সফটওয়্যারের উপরে নির্ভরতা কমাতে সাইবার নিরাপত্তা অডিটে জোর দেওয়ার কথা বলেছেন জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা কোঅর্ডিনেটর। এমনকি আতসকাচের তলায় আনতে বলেছেন ব্যক্তির ভূমিকাও। কিন্তু বেজিংয়ের বিরুদ্ধে দিল্লির এমন তাল ঠোকার আবহেও ব্যবসা চৌপাট হওয়ার ভয় পিছু ছাড়ছে না শিল্পমহলের এক বড় অংশের। অর্থনীতির টালমাটাল সময়ে রাতারাতি এমন নীতি বদলের জেরে জোগান-শৃঙ্খল ছিঁড়ে যাওয়া এবং কাঁচামাল আর যন্ত্রাংশের খরচ বেড়ে যাওয়া নিয়ে ঘোর দুশ্চিন্তায় তারা।

এ দিন রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রীদের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সে সিংহ বলেন, বিদ্যুৎ শিল্পের প্রায় সব সরঞ্জাম তৈরি হয় দেশে। তবু ২০১৮-১৯ সালে তা আমদানির অঙ্ক ৭১,০০০ কোটি টাকা। শুধু চিন থেকেই ২১,০০০ কোটি। তাঁর ঘোষণা, “যে দেশ আমাদের সীমান্ত পেরিয়ে জমি দখলের চেষ্টা করে, হত্যা করে সেনাদের, তাদের মাটিতে কাজের সুযোগ তৈরির দায় আমাদের নয়।…আমদানি করা প্রতিটি যন্ত্র, যন্ত্রাংশের জন্য অনুমতি নিতে হবে। চিন ও পাকিস্তান থেকে আসা সামগ্রীতে তা দেওয়া হবে না।”

প্রশ্ন উঠছে, যদি চিনও প্রত্যাঘাতের পথে হাঁটে? পেটিএম, জ়োম্যাটো, ওলা-সহ এ দেশের বহু প্রথম সারির স্টার্ট-আপে চিনা সংস্থার বিনিয়োগ ঠাসা। বেজিংয়ের চাপে তারা তা সরিয়ে নিলে, বহু জন কাজ হারাবেন না কি? চিনের বাণিজ্য মন্ত্রক ইতিমধ্যেই জানিয়েছে, তাদের দেশের সংস্থার বিরুদ্ধে ভারতের এমন পক্ষপাতপূর্ণ আচরণ ভাল চোখে দেখছে না তারা।

সিংহের দাবি, ট্রান্সফর্মার থেকে শুরু করে অধিকাংশ যন্ত্রই ভারতের মাটিতে তৈরি হয়। বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বণ্টন সংস্থার উচিত, তা মাথায় রাখা। কিন্তু তাতে খরচ বাড়বে না? মন্ত্রীর যুক্তি, যারা দেশীয় পণ্য কিনবে, তাদের তুলনায় কম সুদে ধার জোগাবে পাওয়ার ফিনান্স কর্প এবং রুরাল ইলেক্ট্রিফিকেশন কর্প। কিন্তু শুধু সুদ কম গুনেই কি খরচে রাশ টানা যাবে? তা ছাড়া, গাড়ি, বস্ত্র, ওষুধের মতো যে সব শিল্প কাঁচামাল, যন্ত্র এবং যন্ত্রাংশের জন্য প্রবল ভাবে চিনের উপরে নির্ভরশীল, রাতারাতি কোথা থেকে কম দামে বিকল্পের খোঁজ পাবে তারা?

তাইওয়ানের যে সংস্থাকে (ফক্সকন) কেন্দ্র করে দীর্ঘ দিন ধরে ভারতের মাটিতে অ্যাপলের আই-ফোন তৈরির তোড়জোড় করছে মোদী সরকার, আমদানিতে কড়াকড়ির কারণে সমস্যায় পড়েছিল তারাও। দাবি, এখন তা ঠিক হয়েছে। ছোট-মাঝারি শিল্পের এক প্রতিনিধির মতে, ফক্সকনের মতো বহুজাতিক কিংবা এ দেশের বড় সংস্থাগুলি তা-ও এই সমস্যা মানিয়ে নেবে। সামলে নেবে উৎপাদনের খরচ বৃদ্ধির সাময়িক ধাক্কা। কিন্তু এই কঠিন সময়ে ছোট-মাঝারি শিল্পের তাতে নাভিশ্বাস উঠবে বলে আশঙ্কা তাঁদের একাংশের।

অন্য বিষয়গুলি:

India-China Clash Power Minister
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy