Advertisement
১১ জানুয়ারি ২০২৫
Share Market

বাজারে আশা-আশঙ্কার উপাদান, চাই সতর্কতা

নিত্যনতুন নজির গড়ার পরে ভারতীয় শেয়ার বাজারের ছবিতে কিছুটা হলেও বদল এসেছে। এখন আশা-নিরাশায় দুলছে দেশের দুই প্রধান শেয়ার সূচক।

শেয়ার বাজার

শেয়ার বাজার

অমিতাভ গুহ সরকার
শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০২১ ০৫:৪৫
Share: Save:

নিত্যনতুন নজির গড়ার পরে ভারতীয় শেয়ার বাজারের ছবিতে কিছুটা হলেও বদল এসেছে। এখন আশা-নিরাশায় দুলছে দেশের দুই প্রধান শেয়ার সূচক।

মে মাসে খুচরো মূল্যবৃদ্ধির হার ৬% পার করা এবং পাইকারি মূল্যবৃদ্ধির রেকর্ড গড়ার খবরকে উপেক্ষা করে গত মঙ্গলবার নতুন শিখরে পৌঁছয় সেনসেক্স এবং নিফ্‌টি। কিন্তু এর পরেই ছন্দপতন। বুধ ও বৃহস্পতিবার মোট ৪৫০ পয়েন্ট খুইয়ে বসে সেনসেক্স। শুক্রবার তা যৎসামান্য উঠলেও বাজারের দুর্বলতা ছিল স্পষ্ট। পাশাপাশি, টানা আট দিন ডলারের নিরিখে গোত্তা খেয়ে নেমেছে টাকার দর। ভারতীয় মুদ্রার এই পরিস্থিতির পিছনে যা যা কারণ রয়েছে, তার অধিকাংশই কিন্তু আমেরিকার অর্থনীতির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত।

করোনা অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আসায় আমেরিকার শীর্ষ ব্যাঙ্ক ফেডারেল রিজ়ার্ভ সে দেশের আর্থিক উন্নয়নের ব্যাপারে এখন বেশ আশাবাদী। তাদের অনুমান, চলতি বছরে দেশের অর্থনীতি বাড়বে ৭% হারে। এই কারণে তারা আর্থিক ত্রাণ গুটিয়ে নেওয়ার কথাও ভাবছে। ভাবনাচিন্তা করছে বাজার থেকে ১২,০০০ ডলার মূল্যের ঋণপত্র কেনা ধীরে ধীরে কমিয়ে আনার কথা। এরই পাশাপাশি, শেষ ঋণনীতিতে সুদ বাড়ানোর সময় এগিয়ে আনার পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছে ফেড। এই সবের জেরে বিশ্ব তথা ভারতীয় শেয়ার বাজারের উপরে চাপ বেড়ে চলেছে। ফলে কিছুটা দুর্বল দেখাচ্ছে ভারতের শেয়ার বাজার এবং টাকাকে।

সব মিলিয়ে, ভাল-মন্দ দু’রকম পরিস্থিতির মধ্যে দিয়েই যাচ্ছে দেশের শেয়ার বাজার। ফলে লেনদেনের ব্যাপারে সতর্ক পদক্ষেপ করতে হবে লগ্নিকারীদের। আগে চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক ভাল খবরগুলির দিকে—

n দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সময়েই শুরু হয়েছে বর্ষা। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, এ বারও স্বাভাবিক হবে বৃষ্টি।

n করোনা সংক্রমণ অনেকটা কমায় দেশের বিভিন্ন অংশে লকডাউন ও বিধিনিষেধ শিথিল হতে শুরু করেছে। ফলে কিছুটা হলেও স্বাভাবিকের পথে ব্যবসায়িক কাজকর্ম।

n করোনার প্রথম ঢেউয়ের তুলনায় অর্থনীতির ক্ষতি কম হবে বলে আশা।

n পশ্চিমের উন্নত দেশগুলিতে করোনার প্রকোপ অনেকটা কমে আসায় দ্রুত বাড়ছে ভারতের রফতানি। মে মাসে তা বেড়েছে ৬৯.৩৫%।

n ভারতের বিদেশি মুদ্রার ভান্ডার ছুঁয়েছে সর্বকালীন উচ্চতা। পৌঁছেছে ৬০,৮০৮ কোটি ডলারে।

n গত অর্থবর্ষের শেষ তিন মাসে ভাল আয় বেড়েছে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলির।

এর পাশাপাশি, প্রতিকূল খবরের পাল্লাও কিন্তু কম ভারী নয়। সেগুলির দিকেও এক বার তাকানো জরুরি—

n দেশের বিভিন্ন অংশে লকডাউন এবং বিধিনিষেধের কারণে চলতি অর্থবর্ষের প্রথম তিন মাসে অর্থনীতি ভাল রকম ধাক্কা খেতে পারে। শোনা যাচ্ছে সঙ্কোচনের আশঙ্কার কথাও।

n বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, আগামী ছয়- আট সপ্তাহের মধ্যেই দেশে আছড়ে পড়তে পারে করোনার তৃতীয় ঢেউ।

n প্রতিষেধক প্রয়োগের গতি এখনও বেশ শ্লথ। তৃতীয় ঢেউ শুরুর আগে তা সম্পূর্ণ হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই।

n অর্থবর্ষের প্রথম তিন মাসে সংস্থা-গুলির ফল ভাল হওয়ার সম্ভাবনা কম।

n আমেরিকার অর্থনীতিতে উন্নতি দেখা গেলে ভারত থেকে সে দেশমুখো হতে পারে লগ্নি।

n বিশ্ব বাজারে বাড়ছে অশোধিত তেলের দাম। দেশেও পেট্রল-ডিজেল লাগামছাড়া। এর প্রভাবে দ্রুত বেড়ে উঠেছে পণ্যমূল্য। মে মাসে খুচরো বাজারের মূল্যবৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ৬.৩%। যা রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের নির্ধারিত সহনশীলতার মাত্রার চেয়ে বেশি।

n মূল্যবৃদ্ধি এতটা বেড়ে ওঠায় ঋণের উপরে সুদ এখনই আর কমার তেমন সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।

লগ্নিকে প্রভাবিত করতে পারে আরও বেশ কিছু খবর। সে দিকেও একটু নজর রাখা যাক—

n চলতি অর্থবর্ষে ১৫ জুন পর্যন্ত প্রত্যক্ষ কর সংগ্রহ স্পর্শ করেছে ১,৮৫,৮৭১ কোটি টাকা। যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৯২,৭৬২ কোটি। এখনও পর্যন্ত রিফান্ড দেওয়া হয়েছে ৩০,৭৩১ কোটি টাকা।

n প্রতি ১০ টাকার শেয়ারকে ভেঙে ১০টি ১ টাকার শেয়ারে বিভাজিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিইএসসি।

n আমদানি করা ভোজ্য তেলের শুল্ক ১১২ ডলার পর্যন্ত কমানো হয়েছে। ফলে আশা করা যায় দেশে ওই পণ্যের দাম কিছুটা কমবে।

n বণিকসভা সিআইআইয়ের প্রস্তাব, জনধন অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো-সহ বিভিন্ন খাতে মোট ৩ লক্ষ কোটি টাকার ত্রাণ প্যাকেজ ঘোষণা করুক কেন্দ্র।

(মতামত ব্যক্তিগত)

অন্য বিষয়গুলি:

Share Market
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy