ছবি: সংগৃহীত
ফের এক লক্ষ কোটি টাকার গণ্ডি ছাড়াল জিএসটি আদায়। কিন্তু নতুন বছরের প্রথম দিনে তা জানিয়ে অর্থ মন্ত্রক সুখের খবর শোনানোর চেষ্টা করলেও, গভীর অসুখের বার্তা রয়েই গেল। তা হল, আদায় এখনও মোদী সরকারের লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় অনেক কম।
আজ কেন্দ্র জানিয়েছে, ডিসেম্বর মাসে জিএসটি থেকে আয় হয়েছে ১.০৩ লক্ষ কোটি। নভেম্বরেও প্রায় একই আদায় হয়েছিল। সেই হিসেবে পরপর দু’মাস কর আদায় রইল ১ লক্ষ কোটির উপরে। অর্থ মন্ত্রক সূত্রের খবর, মূলত আগে মেটানো কর ফেরতে (আইটিসি) রাশ টেনেই আয় বেড়েছে। আগে পুরো রিফান্ডই দেওয়া হত। এখন ক্রেতা ও বিক্রেতা— দু’পক্ষের রসিদ মিললে তবেই পুরো রিফান্ড মিলছে। তা না-মেলানো পর্যন্ত পুরো টাকা পাওয়া যাচ্ছে না।
তার পরেও অবশ্য চিন্তার কারণ থাকছে। ডিসেম্বরের শুরুতেই অর্থ মন্ত্রকের রাজস্ব সচিব অজয়ভূষণ পাণ্ডে কর অফিসারদের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সে বলেছিলেন, অর্থবর্ষের বাকি চার মাসে, অর্থাৎ ডিসেম্বর-মার্চে জিএসটি থেকে অন্তত মাসে ১.১ লক্ষ কোটি করে আয় হওয়া দরকার। অন্তত একটি মাসে তা ১.২৫ লক্ষ কোটি হওয়া প্রয়োজন। না-হলে পুরো বছরের লক্ষ্যমাত্রার ধারেকাছেও যাওয়া যাবে না।
ডিসেম্বরে সেই লক্ষ্যের চেয়ে প্রায় ৭ লক্ষ কোটি টাকা কম আয় হয়েছে। রাজস্ব দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘এমনিতেই অর্থবর্ষের প্রথম আট মাসে রাজকোষ ঘাটতি লক্ষ্যমাত্রার ১১৫% ছুঁয়েছে। এ বার জিএসটি থেকে লক্ষ্য অনুযায়ী আয় না-হলে ঘাটতি লাগামের মধ্যে থাকবে কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।’’
অর্থনীতিবিদদের মতে, বাজারে কেনাকাটা বা পরিষেবা দেওয়া-নেওয়ার সময়ই জিএসটি আদায় হয়। অর্থনীতিতে ঝিমুনি ধরেছে। কেনাকাটা হচ্ছে না। ফলে আদায়ও কমেছে। কর বিশেষজ্ঞদেরও যুক্তি, কেনাকাটা এখনও বাড়েনি। গাড়ি বিক্রি কমতির দিকে। ফলে খুব বেশি হলে এখন এই পরিমাণ জিএসটিই আদায় হবে। আয় বাড়াতে হলে কেন্দ্রকে করের হার না-বাড়িয়ে বরং কর জমার প্রক্রিয়া সহজ করতে হবে। কর ফাঁকি বন্ধ করতে হবে। চিন্তার কারণ হল, আমদানি থেকে জিএসটি প্রতি মাসেই কমছে। ডিসেম্বরেও আমদানি থেকে সম্মিলিত জিএসটি আগের মাসের চেয়ে ১০% কমেছে।
অর্থ মন্ত্রকের কর্তাদের যুক্তি, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের তুলনায় গত মাসে আদায় ১৬% বেড়েছে। প্রায় প্রতিটি রাজ্যেরই আয় বেড়েছে। পশ্চিমবঙ্গের ২০১৮ সালের চেয়ে আয় বেড়েছে ১৬%। সাধারণত শিল্পোন্নত রাজ্যগুলি জিএসটি থেকে আয় নিয়ে চিন্তায় থাকে। কারণ যে সব রাজ্যে কেনাকাটা বেশি, সেখানে জিএসটি আয় বেশি হয়। কিন্তু মহারাষ্ট্র, গুজরাত, তামিলনাড়ুর মতো রাজ্যেও কর আদায় অনেকটা বেড়েছে। ফলে কেন্দ্রের উপরে রাজ্যগুলিকে ক্ষতিপূরণ মেটানোর চাপও কম থাকবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy