প্রতীকী ছবি।
গ্রামের অর্থনীতির ছবিটা যে ভাল নয়, তা আরও এক বার পরিষ্কার হয়ে গেল সরকারি পরিসংখ্যানেই।
শুক্রবার জুনের মূল্যবৃদ্ধির হিসেব প্রকাশ হয়েছে। সেই পরিসংখ্যান বলছে, গত মাসে সামগ্রিক ভাবে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির হার ছিল ২.১৭%। কিন্তু গ্রামে তা ছিল মাত্র ০.৩০%। অথচ শহরে খাদ্যপণ্যে মূল্যবৃদ্ধি ৫.৫৬% ছুঁয়ে ফেলেছে।
খাদ্যপণ্যের দাম শহরে যে হারে বাড়ছে, গ্রামে ততখানি বাড়ছে না কেন? অর্থনীতিবিদদের মতে, এর অন্যতম কারণ হল গ্রামের চাষিরা তেমন ভাবে ফসলের দাম পাচ্ছেন না। অথচ সেই খাদ্যশস্যই শহরে অনেক বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। অনেকের আবার মত, ফসলের দাম ঠিকমতো না-পাওয়াও গ্রামে মানুষের চাহিদা কমার কারণ। যার জের পড়েছে আবার খাদ্যপণ্যের দামে।
জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক সুরজিৎ মজুমদারের ব্যাখ্যা, এর কারণ হতে পারে গ্রামে যে খাদ্যশস্য উৎপাদন হচ্ছে, তার দাম তেমন ভাবে বাড়ছে না। তাঁর যুক্তি, ‘‘এর পিছনে কার্য ও কারণ, দুই-ই থাকতে পারে। ফসলের দাম তেমন মিলছে না বলেই গ্রামের মানুষের আয় কম হচ্ছে। আবার গ্রামের মানুষের আয় কম বলে বাজারে তেমন চাহিদা নেই। ফলে খাদ্যপণ্যের দামও তেমন ভাবে বাড়ছে না। কিন্তু শহরে তার দাম বাড়ছে। অর্থাৎ, মধ্যস্বত্বভোগীরা মুনাফা লুটছে।’’
গ্রামের মানুষের আয় যে বাড়ছে না, তা অবশ্য আগেই টের পাওয়া গিয়েছে। যেমন, স্কুটার-বাইকের বিক্রি কমতির দিকে। গ্রামের বাজারে চাহিদা না-থাকার ধাক্কা লেগেছে সারা দেশের বাজারে চাহিদাতেও।
সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, মোদী সরকারের পাঁচ বছরে গ্রামের মানুষের আয় তেমন বাড়েনি। গত বছর ডিসেম্বরের হিসেব বলছে, জাতীয় স্তরে দৈনিক গ্রামীণ মজুরির হার ছিল ৩২২ টাকা। যা আগের ডিসেম্বরের তুলনায় মাত্র ৩.৮% বেশি। এর মধ্যে মূল্যবৃদ্ধি বাদ দিলে, বাস্তবে মজুরি বেড়েছে মাত্র ২.৩%। এই অবস্থায় কৃষকদের মুম্বইয়ের লং মার্চ ও দিল্লি যাত্রা দেখেছে দেশ। তাঁদের ক্ষোভ সামাল দিতে প্রধানমন্ত্রী কিসান সম্মান নিধি প্রকল্পে সব চাষিকেই বছরে ৬,০০০ টাকা করে দেওয়ার ঘোষণা করেছে মোদী সরকার। কিন্তু তাতেও সুরাহা কতটা হয়েছে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে।
বাজেট বিতর্কের জবাবে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের যুক্তি, কৃষি ও গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নতিতে শুধু পিএম কিসান নয়, সার্বিক ভাবেই নজর দিচ্ছে কেন্দ্র। কিন্তু তাতে যে এখনও ফল মেলেনি, মূল্যবৃদ্ধির পরিসংখ্যানই তার প্রমাণ বলে মত অনেকের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy