প্রতীকী ছবি।
গত মাসে দেশে পেট্রল-ডিজ়েলের বিক্রি বেড়েছিল। তাই দেখে সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশ অর্থনীতির চাকা ঘুরছে দাবি করে। সেই দাবি যে পুরোপুরি সত্যি নয়, তা প্রমাণ করল অর্ধেক এপ্রিল জুড়ে রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলির বিক্রিবাটার তথ্য। মার্চের তুলনায় দুই জ্বালানির বিক্রিই কমেছে চোখে পড়ার মতো। শিল্পমহল সূত্রের মতে, মার্চে বিক্রি বৃদ্ধির প্রধান কারণ চাহিদা বৃদ্ধি নয়। ভোট মিটলেই তেলের দাম বাড়বে, এই আশঙ্কায় বহু ক্রেতা আগাম গাড়িতে তেল ভরিয়েছিলেন। এপ্রিলের প্রথম পক্ষকালে বিক্রি কমেছে রান্নার গ্যাস এবং বিমান জ্বালানিরও (এটিএফ)। তবে এরই মধ্যে বিমান সংস্থাগুলির উদ্বেগ বাড়িয়ে শনিবার আরও চড়েছে এটিএফের দাম। নজিরবিহীন ভাবে কলকাতায় তা কিলোলিটার পিছু পৌঁছে গিয়েছে ১,১৭,৭৫৩.৬০ টাকায়। এই নিয়ে মাস তিনেকের মধ্যে টানা আট বার দামি হল এটিএফ।
তেল সংস্থাগুলির তথ্য বলছে, ১-১৫ এপ্রিলে পেট্রল-ডিজ়েলের বিক্রি গত বছরের এই সময়ের চেয়ে বেড়েছে যথাক্রমে ১২.১% ও ৭.৪%। কিন্তু গত মাসের প্রথম ১৫ দিনের থেকে পেট্রলের বিক্রি কমেছে ৯.৭%, ডিজ়েলের ১৫.৬%। মার্চে দুই জ্বালানির বিক্রিই বেড়েছিল। সেখানেই প্রশ্ন, তা হলে এ মাসে পড়ছে কেন? শিল্পের বক্তব্য, তেলের দাম বৃদ্ধির আশঙ্কায় গাড়ির মালিকেরা বেশি করে তেল কিনেছিলেন গত মাসের প্রথমার্ধে। পাম্প মালিকেরাও শুধু যে কম দামে তাঁদের ট্যাঙ্কে তেল ভরেছিলেন তা নয়, রাস্তায় থাকা খালি ট্যাঙ্কারও ভরতে শুরু করেছিলেন। ফলে বিক্রির পারদ দ্রুত চড়েছিল। পরে দাম বাড়তেই তেল কেনায় ভাটা পড়ে। রান্নার গ্যাস অর্থাৎ এলপিজি সিলিন্ডার বিক্রিতেও ধাক্কা দিয়েছে দর বৃদ্ধি। মার্চের একই সময়ের তুলনায় এ মাসে তা কমেছে ২০.৫%।
জ্বালানির দরের ছেঁকায় বেহাল দশা আমজনতার। শিল্পের উৎপাদন থেকে পরিষেবা, সব কিছুর খরচ বাড়ছে। কী ভাবে সকলে রোজকার জীবনযাত্রা বা ব্যবসা সামাল দেবে, সেই উপায় খুঁজতে গিয়ে ছুটছে কালঘাম। অভিযোগ, এই অবস্থায় শুল্ক কমিয়ে সুরাহা দেওয়ার বদলে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলি একে অন্যের উপরে দায় চাপানোর তরজাতেই ব্যস্ত।
মাসের ১ ও ১৬ তারিখ এটিএফের দাম সংশোধন হয়। এ দিন দেশে তা আরও চড়েছে। লাগাতার তার দাম বাড়ায় পেট্রল-ডিজ়েলের মতোই এপ্রিলের প্রথম ১৫ দিনে মার্চের চেয়ে বিক্রি কমেছে ১.৭%। চড়া এটিএফের দর পর্যটন-সহ বিভিন্ন শিল্পে আঘাত হানবে বলে আশঙ্কা সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের। সব মিলিয়ে জ্বালানির দরের ছেঁকা ভালই মালুম হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy