২০১৬ সালের পর, নতুন ৫০০ টাকা নোট চালু করে কেন্দ্র। ফাইল ছবি।
জালনোটের কারবার বন্ধ করা, সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের আর্থিক উৎস আটকানো, ডিজিটাল অর্থনীতির প্রসার— নোটবন্দির উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করতে গিয়ে এই ভাবে বার বার গোলপোস্ট বদল করেছে কেন্দ্র। কিন্তু এর ছ’বছর পার করার পর দেখা যাচ্ছে, ২০১৬ সালের তুলনায় বাজারে নগদের উপস্থিতি প্রায় ৮৩% বেড়েছে। আর রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের পরিসংখ্যানেই এই তথ্য জানানো হয়েছে। গত কয়েক বছরে ধাপে ধাপে নগদ বৃদ্ধির হিসাব সংসদের প্রশ্নোত্তর পর্বেও কেন্দ্র পেশ করেছে একাধিক বার।
২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর নোটবন্দির সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের তথ্য অনুযায়ী, তার ঠিক আগে ৪ নভেম্বর বাজারে নগদের আর্থিক অঙ্ক ছিল ১৭.৭৪ লক্ষ কোটি টাকা। গত ২৩ ডিসেম্বর তা বেড়ে হয়েছে ৩২.৪২ লক্ষ কোটি। অর্থাৎ, দ্বিগুণের কিছু কম।
ছ’বছর আগে এক নির্দেশিকা জারি করে ৫০০ এবং ১০০০ টাকার নোট বাতিল করে কেন্দ্র। যা আর্থিক অঙ্কের হিসাবে বাজারে থাকা নগদের প্রায় ৮৬% ছিল (১৫.৪ লক্ষ কোটি টাকা)। বাতিল সেই নোট ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ফেরানোর জন্য অল্পই সময় দেওয়া হয়েছিল। তা সত্ত্বেও এর মধ্যে প্রায় ৯৯.৩% নোট (১৫.৩ লক্ষ কোটি টাকা) সরকারের ঘরে ফেরত এসেছিল। ফলে তখন থেকেই নোটবন্দির উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। পরবর্তী সময়ে অর্থনীতির মন্দগতি এবং সাধারণ মানুষের দুরবস্থার জন্য সরকারের এই পদক্ষেপকে দায়ী করেন অর্থনীতিবিদদের একাংশ। একই বার্তা আসে ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্প এবং আবাসনের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্র থেকে। পরে নতুন ৫০০ টাকা এবং ২০০০ টাকার নোট চালু করে কেন্দ্র। আনা হয় ২০০ টাকার নোটও। কিন্তু ১০০০ টাকার নোট আর ফেরানো হয়নি।
গত ১৯ ডিসেম্বর লোকসভায় এক প্রশ্নের লিখিত উত্তরে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন জানিয়েছিলেন, ২০১৭ সালের মার্চে বাজারে নগদের পরিমাণ ছিল নোটবন্দির সময়ের তুলনায় ২০% কম। প্রায় ১৩.১ লক্ষ কোটি টাকা। পরের বছরের ৩১ মার্চ তা ৩৭.৬৭% বেড়ে ১৮.০৩ লক্ষ কোটিতে পৌঁছে যায়। ২০১৯ সালের মার্চে হয় ২১.১০ লক্ষ কোটি। এই ভাবে প্রত্যেক বছর ধাপে ধাপে বেড়ে তা ৩২ লক্ষ কোটি পার করেছে। অর্থনীতিবিদদের বক্তব্য, এর মধ্যে অতিমারির আক্রমণ সারা বিশ্বের পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিকেও সঙ্কুচিত করেছে। শারীরিক দূরত্ব বিধির জন্য কমেছে ব্যবসা-বাণিজ্য। অনেকটাই বেড়েছে ডিজিটাল লেনদেন। কিন্তু নগদে ভাটা পড়েনি। উল্টে বেড়েছে সেটিও। স্টেট ব্যাঙ্কের অর্থনীতিবিদদের এক রিপোর্টে জানানো হয়েছে, ২০১৫-১৬ অর্থবর্ষে আর্থিক লেনদেন ব্যবস্থায় ডিজিটাল লেনদেনের ভাগ ছিল ১১.২৬%। ২০২১-২২ অর্থবর্ষে তা বেড়ে ৮০.৪% হয়েছে। যদিও ছোট ব্যবসা, মুদির দোকান, রেস্তরাঁ-সহ বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে নগদে লেনদেন এখনও জনপ্রিয় বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy