রাজ্যে প্রাকৃতিক গ্যাসের উৎপাদন (কোল বেড মিথেন বা সিবিএম) বাড়াতে আরও ২০০০ কোটি টাকা লগ্নির পরিকল্পনা করেছে ইওজিইপিএল। ছবি: সংগৃহীত।
রাজ্যে প্রাকৃতিক গ্যাসের উৎপাদন (কোল বেড মিথেন বা সিবিএম) বাড়াতে আরও ২০০০ কোটি টাকা লগ্নির পরিকল্পনা করেছে এসার অয়েল অ্যান্ড গ্যাস এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন (ইওজিইপিএল)। সংস্থার দাবি, দৈনিক উৎপাদন বাড়িয়ে ৩০ লক্ষ ঘন মিটারে নিয়ে যাওয়াই লক্ষ্য। এখন যা ৯ লক্ষ ঘন মিটার। শীঘ্রই ১০ লক্ষ ছুঁয়ে ফেলার কথা।
পশ্চিমবঙ্গে সিবিএম উত্তোলনের প্রকল্পে ইতিমধ্যেই প্রায় ৫০০০ কোটি টাকা ঢেলেছে এসার গোষ্ঠীর সংস্থাটি। দীর্ঘ দিন ধরে রানিগঞ্জ এলাকায় সেই কাজ করছে তারা। সংস্থা মনে করে, আগামী দিনে দেশের পূর্বাঞ্চলে গ্যাসের চাহিদা দ্রুত বাড়বে। তার জন্য নিজেদের প্রস্তুত রাখা দরকার। উত্তোলিত গ্যাসের বেশিরভাগই এখনউর্জা গঙ্গা প্রকল্পে গেল-এর পাইপলাইনে সরবরাহ করছে তারা।গেল সেই গ্যাস কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের তিনটি সরকারি-বেসরকারি সংস্থাকে জোগান দিচ্ছে, যা গাড়ির জ্বালানি হিসেবে বিক্রি হচ্ছে। গেল-এর পাইপলাইন তৈরি হওয়ার পরে এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের জোগান বাড়লে পরিবহণের পাশাপাশি রান্নারগ্যাস ও শিল্পের জ্বালানি হিসেবেও তা ব্যবহৃত হবে। ইওজিইপিএলের সিইও পঙ্কজ কালরা জানান, ‘‘যে ভাবে দেশে প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যবহারে জোর দেওয়া হচ্ছে, তাতে সংস্থার হিসাব অনুযায়ী চাহিদা অচিরেই দৈনিক ১.৫ কোটি ঘন মিটারে পৌঁছবে। বিষয়টি মাথায় রেখে রাজ্যে সিবিএম উৎপাদন বাড়াতে নতুন লগ্নির এই সিদ্ধান্ত।’’
জ্বালানি হিসাবে তেল বা কয়লার উপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে গ্যাসের ব্যবহার বাড়াতে চায় মোদী সরকার। পরিসংখ্যান বলছে, বর্তমানে ভারতে মোট জ্বালানির ৬% গ্যাস থেকে আসে। কেন্দ্রের লক্ষ্য, ২০৩০-এর মধ্যে তা ১৫ শতাংশে নিয়ে যাওয়া। এ ক্ষেত্রে সিবিএম বড় ভূমিকা নেবে, ধারণা সংশ্লিষ্ট মহলের। কালরার দাবি, পশ্চিমবঙ্গ কয়লা ভিত্তিক সিবিএমের বিরাট ভান্ডার। সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে চান তাঁরা।
এসার কর্তা বলেন, “দেশের মোট সিবিএম উৎপাদনের ৬৫ শতাংশই আমরা করছি। এসারই প্রথম সংস্থা, যারা সফল ভাবে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে সিবিএম বিপণন শুরু করে। রাজ্যে প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ে পুঁজি ঢালা হচ্ছে। উত্তোলন বাড়াতে নতুন কুয়ো খোঁড়া হবে। লগ্নি-পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে দিনে ৩০ লক্ষ ঘন মিটার গ্যাস উত্তোলন করা যাবে। দেশে নানা ধরনের গ্যাসের মোট উৎপাদনের ৫% সংস্থার দখলে আসবে।’’
এসারের দাবি, পূর্ব রানিগঞ্জে সিবিএম উত্তোলনের জন্য তারা এ পর্যন্ত ৩৪৮টি কুয়ো খনন করেছে। উত্তোলিত গ্যাসের সিংহভাগ বিক্রি করা হচ্ছে গেল-কে। অন্য ক্রেতাদের সরবরাহের জন্য ৬৪ কিলোমিটার পাইপলাইন বসিয়েছে এসার। সিবিএম মজুতের জন্য আধুনিক কেন্দ্রও তৈরি করেছে তারা। সেখান থেকেই ক্রেতাদের সরবরাহ করা হয়। সিবিএম ছাড়া শেল গ্যাস (পাথরের খাঁজে আটকে থাকা গ্যাস) উত্তোলনের পরিকল্পনাও করেছে সংস্থা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy