প্রতীকী ছবি।
শিল্পে মন্দার ধাক্কা এ বার বিদ্যুৎ ক্ষেত্রেও। অক্টোবরে বিদ্যুতের চাহিদা এতটাই নেমে গিয়েছে যে, তা গত ১২ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। এ বছরের অক্টোবরে গত বছরের ওই মাসের তুলনায় কমে গিয়েছে ১৩.২ শতাংশ। সরকারি তথ্যেই ধরা পড়েছে এই হিসেব। অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকার যতই এড়ানোর চেষ্টা করুক, মন্দার শিকড় যে অনেকটাই গভীর, তা ধীরে ধীরে সামনে আসছে। একই সঙ্গে তাঁরা বলছেন, মন্দা যত প্রকট হবে, মোদী সরকারের ৫ লক্ষ কোটির মার্কিন ডলারের অর্থনীতির স্বপ্ন ততই দূরে চলে যাবে।
কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ বোর্ড (সেন্ট্রাল ইলেকট্রিসিটি বোর্ড)-এর দেওয়া পরিসংখ্যানেই চাহিদার এই ঘাটতি-তথ্য উঠে এসেছে। শিল্পপ্রধান রাজ্যগুলিতে বিদ্যুতের চাহিদা সব সময়ই বেশি থাকে। কিন্তু বোর্ডের দেওয়া তথ্যে দেখা যাচ্ছে, মহারাষ্ট্রে বিদ্যুতের চাহিদা কমেছে ২২.৪ শতাংশ, গুজরাতে ১৮.৮ শতাংশ। এছাড়া উত্তরপূর্বের রাজ্যগুলিতেও বিদ্যুতের চাহিদা উল্লেখযোগ্য ভাবে কমেছে। এই তথ্য সামনে আসার পর বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, শুধু গাড়ি বা এফএমসিজি নয়, মন্দার প্রভাব ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ছে সব ক্ষেত্রেই। এটা দীর্ঘস্থায়ী মন্দার ইঙ্গিত বলেও মনে করছেন অনেকে।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব পাবলিক ফাইনান্স অ্যান্ড পলিসির অধ্যাপক এন আর ভানুমূর্তির মতে, ‘‘অর্থনীতির মন্দগতির শিকড় ক্রমেই গভীর হচ্ছে, বিশেষ করে শিল্প ক্ষেত্রে। স্বাভাবিক ভাবেই বৃদ্ধির নিরীখে এটা চলতি অর্থবর্ষে উদ্বেগ বাড়াবে।’’ এই বছরে গড় জিডিপি বৃদ্ধি ৬ শতাংশ হতে পারে বলেও মনে করেন ভানুমূর্তি। যদিও অর্থনীতিবিদদের একটা বড় অংশের আশঙ্কা, বৃদ্ধি ৬ শতাংশেও ধরে রাখা কঠিন হবে। নেমে যেতে পারে ৫.৮ শতাংশে।
আরও পড়ুন: পওয়ারকে রাজি করিয়ে ফেললেন উদ্ধব, দু’দলই এ বার সনিয়ার সমর্থনের অপেক্ষায়
কিন্তু কেন বিদ্যুতের চাহিদায় এই পড়তি। শিল্পমহল মনে করছে, গাড়ি শিল্পের বিক্রি ব্যাপক ভাবে কমেছে (যদিও গত বছর অক্টোবরের তুলনায় খুব সামান্য বেড়েছে)। পরিস্থিতির মোকাবিলায় অধিকাংশ সংস্থা কর্মী ছাঁটাইয়ের রাস্তায় হেঁটেছে। সাময়িক উৎপাদন বন্ধ রেখেও ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছে গাড়ি প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলি। এ ছাড়া ভারী শিল্প, ফাস্ট মুভিং কনজিউমার গুডস, ব্যাঙ্ক, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মতো অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মন্দার ছোঁয়াচ। কেনার চাহিদা কমায় উৎপাদনে রাশ টেনে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা চলছে। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই বিদ্যুতের চাহিদাও কমেছে।
আরও পডু়ন: আগামী বছরেই মন্দির নির্মাণের সম্ভাবনা, মকর সংক্রান্তি তিথিই পছন্দ বিশ্ব হিন্দু পরিষদের
গত জুনেই ত্রৈমাসিক জিডিপি বৃদ্ধির হার শেষ ছ’বছরে সবচেয়ে কম হয়েছিল। কিন্তু অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন থেকে মোদী সরকারের মন্ত্রীরা ‘মন্দা’ বলতে রাজি ছিলেন না। কিন্তু এক এক করে নানা পরিসংখ্যান সামনে আসায় মন্দার প্রভাব বোঝা যাচ্ছে। মুখে স্বীকার না করলেও কর্পোরেট কর কমিয়ে বিনিয়োগ টানার চেষ্টা, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির সংযুক্তিকরণ ও আর্থিক সংস্থানের ব্যবস্থা করে পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা করেছেন অর্থমন্ত্রী। কিন্তু তার মধ্যে বিদ্যুতের চাহিদার এই নিম্নমুখী পরিসংখ্যানে সরকারের দুঃশ্চিন্তা আরও বাড়বে বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy