রাহুল গাঁধী। —ফাইল চিত্র
দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কা থেকে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে মোদী সরকারের নতুন দাওয়াইয়ের পরিমাণ জিডিপি-র মাত্র ০.৬%। আজ স্টেট ব্যাঙ্কের মুখ্য অর্থনীতিবিদ সৌম্যকান্তি ঘোষ জানিয়েছেন, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন সোমবার যে আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন, তাতে রাজকোষ ঘাটতি মাত্র ০.৬% বাড়বে। অর্থমন্ত্রী ব্যাঙ্কের মাধ্যমে ঋণ গ্যারান্টি থেকে বিনামূল্যে ভিসার খরচ, সারে ভর্তুকি থেকে রাজ্যকে বাড়তি ঋণ নেওয়ার ছাড়পত্রও যোগ করেছেন প্যাকেজে। ফলে আর্থিক দাওয়াই ৬.২৯ লক্ষ কোটি টাকায় ঠেকেছে। কিন্তু সৌম্যকান্তির হিসেবে, প্যাকেজের মধ্যে আপাতত রাজকোষ থেকে ১.২৩ লক্ষ কোটি খরচ হবে।
বিরোধীদের প্রশ্ন, এই প্যাকেজে সাধারণ মানুষ বা অর্থনীতির কী লাভ হবে? কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধীর কটাক্ষ, ‘‘অর্থমন্ত্রীর আর্থিক প্যাকেজে কোনও পরিবার নিজের থাকা-খাওয়া-ওষুধ, সন্তানের স্কুল ফি-তে খরচ করতে পারবে না। এটা প্যাকেজ নয়। আরও একটা ধোঁকা।’’
অর্থনীতিবিদ, শিল্পমহল থেকে কংগ্রেস, বামের মতো বিরোধী দলের নেতারাও দাবি করেছিলেন, কেন্দ্র মানুষের হাতে নগদ অর্থ সাহায্য দিক। তাতে তাঁদের সুরাহা হবে। বাজারে বিক্রি বাড়বে। কিন্তু অর্থমন্ত্রী ঋণ গ্যারান্টির নীতিতে অনড়। তাঁর মন্ত্রক চাইছে, ব্যাঙ্কগুলি নির্ভয়ে ছোট-মাঝারি শিল্পকে ঋণ বিলি করুক। তা খেলাপ হলে শোধের গ্যারান্টি কেন্দ্রের। যে সব ব্যবসা লকডাউনে হোঁচট খেয়েছে এবং ঋণ শোধ করতে পারছে না তার ফের ঋণ পাক। যাতে উদ্যোগপতিরা ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
বিরোধীদের অভিযোগের মুখে মঙ্গলবার মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা কৃষ্ণমূর্তি সুব্রহ্মণ্যন বলেন, সরকার মূলধনী খাতে খরচ বাড়িয়েই আর্থিক বৃদ্ধি নিশ্চিত করছে। এ দিন নির্মলাও এক বৈঠকে পুর উন্নয়ন, ইস্পাত মন্ত্রক, কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির কর্তাদের সারা বছরের খরচ এখনই শুরু করতে বলেন। পেট্রোলিয়াম মন্ত্রককে বলেন সম্পত্তি বিক্রির পথে হাঁটার কথা।
তবে প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের বক্তব্য, ‘‘সত্যিটা হল, ঋণে গ্যারান্টি ঋণ নয়। ঋণের অর্থ আরও দেনা। কোনও ব্যাঙ্ক সেই বোঝায় জর্জরিত ব্যবসায়ীদের ঋণ দিতে চাইবে না। ধার চাইবেন না দেনায় বিপর্যস্ত, নগদের টানাটানিতে চলা ব্যবসায়ীরাও। তাঁদের দরকার পুঁজি।’’
মানুষকে নগদ দেওয়ার পিছনে অর্থনীতিবিদদের যুক্তি ছিল, এতে চাহিদা বাড়বে। ফলে শিল্পে উৎপাদন বাড়বে। অর্থনীতিতে গতি আসবে। অথচ কেন্দ্র শিল্পকে আরও ঋণ দিয়ে উৎপাদন বাড়ানোর নীতি নিয়েছে। তাদের মতে, জোগান বাড়লেই চাহিদা তৈরি হবে। কিন্তু চিদম্বরমের যুক্তি, তা হবে না। যে অর্থনীতিতে আয় কমেছে, সেখানে নিজে থেকে চাহিদা তৈরি হবে না। একমাত্র সমাধান, গরিব, নিম্ন-মধ্যবিত্তদের হাতে অর্থ তুলে দেওয়া।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy