প্রতীকী ছবি।
করোনার কারণে চাহিদায় ধাক্কা তো ছিলই। তার সঙ্গে জোট বেঁধেছে চড়া মূল্যবৃদ্ধি। যার জেরে গত বছরে দেশের ভোগ্যপণ্য শিল্পে চাহিদা কমেছে বলে জানাল নিয়েলসন-আইকিউয়ের সমীক্ষা। শহরে বিক্রি ধাক্কা খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গ্রামাঞ্চলে তা সরাসরি নেমে গিয়েছে বলে জানিয়েছে তারা। তবে এই সময়ে কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি সামলাতে যে পণ্যের দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছিল সংস্থাগুলি, তার জেরে তাদের টাকার অঙ্কে ব্যবসা ২০২০ সালের চেয়ে বেড়েছে ১৭.৫%।
চড়া মূল্যবৃদ্ধি সংস্থাগুলির ব্যবসার অঙ্ককে বেশি দেখালেও, আদতে যে তা বিক্রির ছবিকে তুলে ধরছে না, তা নিয়ে মঙ্গলবার জিএসটি আদায়ের পরিসংখ্যান প্রকাশের পরেই সতর্ক করেছিলেন অর্থনীতিবিদদের একাংশ। তাঁদের মত ছিল, জিনিসের দাম বাড়ছে। কিন্তু বিক্রি বাড়ছে না তেমন। ফলে কর আদায় বেশি দেখালেও, তা অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর ছবি নয়।
নিয়েলসনের সমীক্ষাও বলছে, ২০২১ সালে টানা তিনটি ত্রৈমাসিকে দামের নিরিখে বৃদ্ধির মুখ দেখেছে ভোগ্যপণ্য শিল্প। অথচ অক্টোবর-ডিসেম্বরে যখন উৎসবের মরসুম, তখন বিক্রি কমেছে ২.৬%। এ সময়ে শহরে তা নেমেছে ০.৮%, আর গ্রামে ৪.৮%। বিভিন্ন বিরূপ আর্থিক পরিস্থিতি-সহ মূল্যবৃদ্ধিই এর অন্যতম কারণ বলে জানাচ্ছে তারা। যা কমিয়ে দিয়েছে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা। বিশেষত, যেখানে গ্রামাঞ্চলে ভোগ্যপণ্যের মোট বিক্রির ৩৫% হয়, সেখানেই হিন্দুস্তান ইউনিলিভার-সহ বিভিন্ন সংস্থার বিক্রি ধাক্কা খেয়েছে বলে দেখা গিয়েছে।
তার উপরে কাঁচামালের দাম বাড়ার কারণে ধাক্কা খাচ্ছে ছোট ভোগ্যপণ্য সংস্থাগুলি। যাদের আয় ১০০ কোটি টাকার কম, তাদের ক্ষেত্রে খরচ সামলে চাহিদা অনুযায়ী উৎপাদন বজায় রাখায় সমস্যায় তাদের সংখ্যা কমেছে ১৩%। সেই তুলনায় কিছুটা স্থিতিশীল মাঝারি ও বড় সংস্থাগুলি। এমনকি গত দু’বছরে দেশে ৮ লক্ষ নতুন ভোগ্যপণ্য বিপণি তৈরি হলেও, তা বিশেষ করে গ্রামে চাহিদায় ধাক্কাকে সামলে উঠতে পারেনি বলে মত নিয়েলসনের। সমীক্ষা বলছে, এর মধ্যেই অনলাইন বাজারে ভোগ্যপণ্যে বিক্রি করোনার আগের ১৫% থেকে অতিমারির মধ্যে ২৫-৩০ শতাংশে পৌঁছেছিল। তার পরেও সেই হার ২৫ শতাংশে থাকা কিছুটা হলেও স্বস্তির।
দক্ষিণ এশিয়ায় নিয়েলসন-আইকিউয়ের অন্যতম কর্তা দীপ্তাংশু রায়ের মতে, দেশের আর্থিক পরিস্থিতি চতুর্থ ত্রৈমাসিকে কিছুটা ধাক্কা খেয়েছে। তার উপরে বিশ্ব জুড়ে জিনিসপত্রের বাড়তে থাকা দাম দীর্ঘ মেয়াদে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে বিক্রিতে। এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে গত বছরে টাকার অঙ্কে ব্যবসা বেড়েছে বলে সন্তুষ্ট হলে চলবে না। বরং নজর রাখতে হবে দাম বাড়ার কারণে চাহিদা কতটা ধাক্কা খাচ্ছে তার উপরে।
সংবাদ সংস্থা
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy