Advertisement
২৭ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus Lockdown

আরও অন্তত সাত দিন, বলছে সংশ্লিষ্ট মহলই 

বিদ্যুৎ দফতর সূত্রে খবর, দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে সব মিলিয়ে রাজ্য বণ্টন সংস্থার কমপক্ষে দেড় লক্ষের বেশি বিদ্যুতের খুঁটি পড়ে গিয়েছে।

জেনারেটর চালিয়ে মোবাইল ফোন চার্জ দেওয়া হচ্ছে বনগাঁয়। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

জেনারেটর চালিয়ে মোবাইল ফোন চার্জ দেওয়া হচ্ছে বনগাঁয়। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

নিজস্ব সংবাদদাতা 
শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০২০ ০৪:০৬
Share: Save:

আমপানের ৭২ ঘণ্টা পেরিয়েছে। এখনও অন্ধকারে ডুবে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। আর তার জেরে রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা ও সিইএসসি-র গ্রাহকদের দুর্ভোগ চলছেই। বিদ্যুৎ দফতরের ইঙ্গিত অবস্থা যা তাতে আজ, রবিবারও উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার কোনও সম্ভাবনা তো নেই-ই। কলকাতাতেও বিদ্যুৎহীন কিছু অঞ্চলে আরও কয়েক দিন দুর্ভোগ পোহাতে হবে মানুষকে।

চার দিন পেরিয়েও এই অবস্থা কেন?

বিদ্যুৎ দফতর সূত্রে খবর, দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে সব মিলিয়ে রাজ্য বণ্টন সংস্থার কমপক্ষে দেড় লক্ষের বেশি বিদ্যুতের খুঁটি পড়ে গিয়েছে। পুড়ে গিয়েছে অসংখ্য ট্রান্সফর্মার। আমপানের তীব্রতায় মাইলের পর মাইল হাই-টেনশন, লো-টেনশনের তার ছিঁড়েছে। লাইনের উপর পড়ে থাকা সব গাছও কেটে সরানো যায়নি। ফলে জেলাগুলিতে বিদ্যুৎ বিপর্যয় আগামী সাত দিনেও সামলে ওঠা যাবে কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। ফলে ভোগান্তি এখন চলবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

তার উপরে পরিস্থিতি সামলানোর মতো দক্ষ কর্মী, বিদ্যুৎ সরঞ্জামের অভাবে বণ্টন সংস্থা এবং বেসরকারি সিইএসসি, দুই সংস্থাই কার্যত নাকানি-চোবানি খাচ্ছে বলে খবর। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই বলেছেন, করোনার জেরে বহু কর্মী ফিরে গিয়েছেন। আবার সংস্থাগুলিতে কম কর্মী নিয়ে কাজ চলছে। ফলে সব মিলিয়ে বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক করতে সমস্যা হচ্ছে। তবে তার মধ্যেও বিভিন্ন ভাবে লোকবল বাড়িয়ে কলকাতা-সহ সারা বাংলায় জোর কদমে যে কাজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। মানুষকে বলেছেন অন্তত কিছু দিন ধৈর্য ধরার কথা। কলকাতায় ২২৫টি ও সারা বাংলায় ১০০০টি দল পুরোদমে কাজ করছে বলে জানান তিনি।

শুধু বণ্টন সংস্থারই নয়, সিইএসসি বহু এলাকাতেও পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হতে মঙ্গল-বুধবার হয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, শনিবারও যে ভাবে শহরের বিভিন্ন জায়গায় গাছ পড়ে ও তার ছিঁড়ে রয়েছে, তাতে দক্ষ বিদ্যুৎ কর্মীদের দিয়েও সরবরাহ স্বাভাবিক করতে নাজেহাল অবস্থা সংস্থার। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, সিইএসসি-কে ১৫০টি জেনারেটর ভাড়া করতে বলা হয়েছে। যতক্ষণ না পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে, সেগুলি কাজে লাগিয়ে কিছুটা করে বিদ্যুৎ, কিছুটা জল দেওয়া যাবে। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও বিভিন্ন জায়গা থেকে জেনারেটর জোগাড়ের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।

এই পরিস্থিতিতে বণ্টন কর্তৃপক্ষ এখন প্রতিবেশী রাজ্যগুলি থেকে বিদ্যুতের খুঁটি ও তার আনার জন্য কথা শুরু করেছে। অন্য দিকে সিইএসসি রাজ্য, প্রয়োজনে রাজ্যের বাইরে থেকেও লোক নিয়ে আসতে কোমর বেঁধে নেমেছে। রাজ্যও সিইএসসিকে তাদের কাজের জন্য লোক দিয়ে সাহায্য করছে।

এ দিন বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ক্ষতিগ্রস্ত দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে বিদ্যুতের ন্যূনতম পরিষেবাটুকু চালু করতে কমপক্ষে দিন সাতেক সময় লেগে যাবে। তার পরেই ধাপে ধাপে পরিস্থিতি সর্বত্র স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলবে।’’ তিনি জানান, বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে যে ক্ষতি হয়েছে তাতে মানুষের সহযোগিতা নিয়েই লাইন সারানোর কাজ দ্রুত করতে হবে, করাও হচ্ছে।

দুই সংস্থা পুরোদমে কাজ শুরু করলেও, গ্রাহকদের অনেকেরই অভিযোগ, আমপানের তীব্রতা নিয়ে সাত দিন আগে থেকে পূর্বাভাস পেয়েও সিইএসসি কেন লোকবল বাড়ানো থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়নি। শুধু তা-ই নয়, বুধবারের ঝড়ের পর থেকে সিইএসসিতে বারবার অভিযোগ জানানোর পরেও কাজ হয়নি। গাছ সরানো হলেও বিদ্যুৎ আসেনি বলে অভিযোগ।

সিইএসসি যদিও জানিয়েছে, লকডাউনে চলে যাওয়া কর্মীদের ফিরিয়ে আনার কথা শুরু হয়েছে। পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক করার জন্য মুখ্যমন্ত্রী যা নির্দেশ দিয়েছেন, সেই মতোই কাজ করার চেষ্টা চলছে। সংস্থার এক কর্তা জানান, জেনারেটর ভাড়া করে বিভিন্ন বড় আবাসন, সোসাইটিতে বিদ্যুৎ পরিষেবা দেওয়ার কথা ভাবা হয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Lockdown Cyclone Amphan Cyclone
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy