প্রতীকী ছবি
করোনাভাইরাসের ধাক্কা সামলাতে লকডাউনের পথে হাঁটতে বাধ্য হয়েছে সারা বিশ্ব। আর তার জেরে আর্থিক কর্মকাণ্ডও কার্যত স্তব্ধ। ভারতও এর ব্যতিক্রম নয়। ৪০ দিনের সমস্যাবহুল লকডাউন পার করে আজ, সোমবার থেকে আমাদের দেশে চালু হচ্ছে নতুন শর্তে তৃতীয় পর্বের লকডাউন। এ বারের মেয়াদ ১৪ দিন। এর আগের দুই পর্বে দেশে করোনায় মৃত্যু ১৩০০ পার করেছে। অবর্ণনীয় ক্ষতি হয়েছে অর্থনীতির। রুজিরুটি হারিয়েছেন আর্থিক ভাবে নিচুতলার বহু মানুষ। তবে এরই মধ্যে সামান্য আশার বার্তা, বেশ কিছু ক্ষেত্রে আর্থিক কর্মকাণ্ড শুরুর অনুমতি দিয়েছে সরকার। এই পরিস্থিতিকে অর্থনীতি কী ভাবে কাজে লাগায় তা বোঝার জন্য আরও কিছু দিন অপেক্ষা করতে হবে। এরই মধ্যে কেন্দ্রের তরফে দ্বিতীয় ত্রাণ প্রকল্পের আশায় সম্প্রতি উঠেছে শেয়ার সূচক।
এখনও পর্যন্ত কিন্তু পরিস্থিতি বেশ অস্বস্তিকর। গোটা এপ্রিলে একটিও গাড়ি বিক্রি করতে পারেনি দেশের বৃহত্তম গাড়ি নির্মাতা মারুতি সুজ়ুকি। জানুয়ারিতে ১.৫ লক্ষেরও বেশি গাড়ি বিক্রি করেছিল সংস্থাটি। একই রকম অবস্থা অন্যান্য গাড়ি নির্মাণ সংস্থার। অনুমান করা হচ্ছে, ৪০ দিনের লকডাউনে এই শিল্পের ক্ষতি ছাড়াতে পারে প্রায় ১ লক্ষ কোটি টাকা। এর পাশাপাশি, বিপুল ক্ষতির মুখে পড়বে সহায়ক শিল্পও। ফলে সামগ্রিক ভাবে গাড়ি শিল্পে কাজ যেতে পারে অনেকের। বহু শিল্পের অবস্থাই অবশ্য কম-বেশি একই রকম। আসলে চাহিদায় টান পড়ায় আগে থেকেই বহু শিল্প ক্ষেত্র ধুঁকছিল। করোনা তাদের বিপর্যস্ত করে দিয়েছে।
কিছু দিন হল ২০১৯-২০ অর্থবর্ষের চতুর্থ ত্রৈমাসিক ও সারা বছরের আর্থিক ফলাফল প্রকাশ শুরু হয়েছে। এখনও পর্যন্ত প্রকশিত ফলাফলে খারাপের পাল্লাটাই ভারী। এই প্রসঙ্গে মনে রাখা দরকার, গত বছরের শেষ তিন মাসে করোনার প্রভাব ছিল বড়জোর ১৫ দিন। এই অবস্থায় এপ্রিল-জুন ত্রৈমাসিকে কিন্তু বড় ধাক্কার জন্য অপেক্ষা করে থাকতে হবে। এই সময়ের মধ্যে প্রায় সাত সপ্তাহ থাকবে লকডাউনের আওতায়।
আরও পড়ুন: অর্থনীতি ছন্দে ফিরতে লাগবে অন্তত এক বছর
অন্যান্য দেশের দিকে তাকালেও দেখা যাবে পরিস্থিতি একই রকম বা আরও খারাপ। বছরের প্রথম তিন মাসে মার্কিন অর্থনীতি ৪.৮% সঙ্কুচিত হয়েছে। ইউরোপের পরিস্থিতিও খারাপ। পশ্চিম দুনিয়া যদি এই ভাবে মন্দার অন্ধকারে পা রাখে, তার বিরূপ প্রভাব ভারতেও পড়তে বাধ্য।
করোনার মোকাবিলা করে দেশের অর্থনীতিতে প্রাণ ফেরাতে ইতিমধ্যেই ১.৭ লক্ষ কোটি টাকার ত্রাণ প্রকল্প ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। এ বার দ্বিতীয় দফার প্যাকেজের জন্য তৈরি হচ্ছে মোদী সরকার। এই নিয়ে শনিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দীর্ঘ সময় আলোচনা করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে। ক্ষুদ্র-ছোট-মাঝারি শিল্পকে সুরাহা দেওয়া নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি কথা হয়েছে দেশীয় সংস্থা এবং বিদেশি সংস্থার মাধ্যমে লগ্নি কী ভাবে বাড়ানো যায় তা নিয়ে। সংশ্লিষ্ট মহলের আশা, চলতি সপ্তাহেই দ্বিতীয় প্যাকেজ ঘোষণা করা হতে পারে।
এরই মধ্যে গত সপ্তাহে হাওয়ার বিপরীতে হেঁটেছে শেয়ার বাজার। বৃহস্পতিবার সেনসেক্স প্রায় ১০০০ পয়েন্ট বেড়েছে। সারা সপ্তাহে ২৩৯০ পয়েন্ট বেড়ে তা ৩৩,৭১৮ অঙ্কে পৌঁছেছে। লকডাউন শিথিল হয়ে অর্থনীতির চাকা ঘুরতে শুরু করা এবং ভাল একটি ত্রাণ প্যাকেজের আশাতেই এই উত্থান বলে মনে করা হচ্ছে। তবে বাজারের এই চাঙ্গা ভাব বেশি দিন স্থায়ী হবে, এমন ভাবার সময় কিন্তু আসেনি। অর্থনীতির সমস্যা কিন্তু দীর্ঘমেয়াদেও ভোগাতে পারে লগ্নিকারীদের।
(মতামত ব্যক্তিগত)
আরও পড়ুন: ধোঁয়াশা বহাল নেটে বিক্রিবাটায়
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy