প্রতীকী ছবি।
এক সময় চোখে পড়ার মতো সস্তা ছিল প্রাকৃতিক গ্যাস সিএনজি (কমপ্রেসড ন্যাচারাল গ্যাস)। কিন্তু সাম্প্রতিক কালে আচমকাই পেট্রল-ডিজ়েলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে তার দাম। যার অন্যতম কারণ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে মাথা তোলা জোগান সঙ্কট। ফলে সাবেক পরিবহণ জ্বালানিগুলির সঙ্গে সিএনজি-র দরের ফারাক কমছে। আর তাতেই চিন্তিত গাড়ি শিল্পের একাংশ। বিষয়টিতে কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ চেয়েছে তারা।
ভারতে উৎপাদনকারী সংস্থা কী দরে বণ্টন সংস্থাগুলিকে প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহ করবে, তা ঠিক করে দেয় কেন্দ্র। শিল্পমহল সূত্রের খবর, গত এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বরে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় এই জ্বালানির দাম বেড়েছে তিন গুণেরও বেশি। গত বার ওই ছ’মাসে যেখানে প্রতি এমএমবিটিইউ গ্যাস বিকিয়েছে মাত্র ১.৭৯ ডলারে, সেখানে এ বছর তা বেড়ে হয়েছে ৬.১ ডলার। গত অক্টোবর থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত দর ছিল ২.৯ ডলার।
এ রাজ্যে এখন আইওসি-আদানি গোষ্ঠী, হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়াম (এইচপিসি), বেঙ্গল গ্যাস কোম্পানির (বিজিসি) মতো বণ্টন সংস্থাগুলিকে সিএনজি জোগায় উৎপাদনকারী গেল। বণ্টন সংস্থার গ্যাস কেনার খরচ বাড়ায়, তার প্রভাব পড়ছে সিএনজি পাম্পে। যেমন, এইচপিসির নদিয়া এবং হুগলির পাম্পে এখন প্রতি কিলোগ্রাম সিএনজির দাম ৯৫ টাকা। এ বছর পয়লা জানুয়ারি তা ছিল যথাক্রমে ৬৮.৫ এবং ৬৯.৫ টাকা। বিজিসির অধীন পাম্পে এখন প্রাকৃতিক গ্যাস বিকোচ্ছে ৮৯.২৫ টাকায়। পয়লা জানুয়ারি যা ছিল ৬৭.৬৭ টাকা। বর্ধমানে আইওসি-আদানি গোষ্ঠীর পাম্পে এই ন’মাসে সিএনজি-র কিলোগ্রাম পিছু দাম ৭৮ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৯১ টাকা।
আমদানি খরচ এবং দূষণ কমাতে দেশে বৈদ্যুতিকের পাশাপাশি সিএনজি, হাইড্রোজেনের মতো বিকল্প জ্বালানির গাড়ি ব্যবহারের পক্ষে সওয়াল করছে কেন্দ্র। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, পেট্রল-ডিজ়েল আগুন। সেই নিরিখে সিএনজি-র কম দাম ক্রেতা টানার বড় হাতিয়ার ছিল। কিন্তু এখন পেট্রল-ডিজ়েলে গাড়ি চালানোর খরচের সঙ্গে প্রাকৃতিক গ্যাসে চালানোর খরচের বিরাট ফারাক ক্রমশ কমছে। এমন চলতে থাকলে ভবিষ্যতে এর বাজার বাড়ানোর রাস্তায় বাধা তৈরি হতে পারে। গাড়ি শিল্প বলছে, ইতিমধ্যেই সিএনজি গাড়ির চাহিদায় কিছুটা প্রভাব পড়েছে। দীর্ঘ মেয়াদে জ্বালানিটির দাম চড়া থাকলে বিক্রি ধাক্কা খাওয়ার আশঙ্কা। গাড়ি সংস্থাগুলির সংগঠন সিয়াম এবং দেশের বৃহত্তম গাড়ি সংস্থা মারুতি-সুজুকি সিএনজির দাম নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রকে হস্তক্ষেপ করার আর্জি জানিয়েছে।
সিয়ামের ডিজি বিষ্ণু মাথুরের বক্তব্য, সিএনজি-র চড়া দাম গাড়ি ব্যবসার পক্ষে বড় চ্যালেঞ্জ। সরকার এ ব্যাপারে হস্থক্ষেপ করবে এবং সহযোগিতা করবে, এই আশায় অপেক্ষা করছেন তাঁরা।
মারুতি সুজুকির সিনিয়র এগ্জ়িকিউটিভ ডিরেক্টর (বিপণন) শশাঙ্ক শ্রীবাস্তবের মতে, ক্রেতাদের কাছে এই গাড়ি কেনার মূল কারণ হল সিএনজি সস্তা। পেট্রল-ডিজ়েলের চেয়ে সেটির দামের ফারাক আগে বেশি ছিল। তাঁদের হিসাবে, এখন সিএনজির দাম বাড়ায় সাত-আট মাস আগে সিএনজি গাড়ির প্রতি কিলোমিটার চালানোর যে খরচ পড়ত ১.৫০ টাকা, এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ২.৭০ টাকা। তবে তাঁর দাবি, এখনই চাহিদায় বিরাট প্রভাব পড়েছে এমন নয়। তবে যেহেতু সিএনজি দেশের অর্থনীতি এবং পরিবেশ, এই দু’য়ের প্রেক্ষিতেই গুরুত্বপূর্ণ, তাই বিকল্প ও সস্তার এই জ্বালানির গাড়ির ব্যবহার বাড়ানোর জন্য উৎসাহিত করা দরকার। তাই অন্য জ্বালানির সঙ্গে দামের ফারাকের সুবিধা বজায় থাকা দরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy