বৈঠকে জেটলি ও সিন্হা। ছবি: পিটিআই
অনুৎপাদক সম্পদের পাহাড়-প্রমাণ সমস্যা মেটাতে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির পাশে থাকার বার্তা দিলেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। প্রতিশ্রুতি দিলেন, ঋণ খেলাপে রাশ টানতে তাদের হাতে বাড়তি ক্ষমতা দেওয়ার। তাঁর প্রস্তাব, সময়ে শোধ না-হওয়া ধার আদায়ের জন্য সাবধানী পথে হেঁটে কী ভাবে এগোনো সম্ভব, সেই দাওয়াই নিজেরাই বাতলাক ব্যাঙ্কগুলি। যাতে তা খতিয়ে দেখে সহযোগিতার হাত বাড়ানো সম্ভব হয় সরকারের পক্ষে।
ঋণ খেলাপের সমস্যা নিয়ে অনেক দিনই খাবি খাচ্ছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি। সময়ে শোধ না-হওয়া ধারের জন্য টাকা সরিয়ে রাখতে গিয়ে কিছু রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক বিপুল নিট লোকসানের মুখ দেখেছে। আর বাকি প্রায় সবগুলির ক্ষেত্রেই গোঁত্তা খেয়েছে নিট মুনাফার অঙ্ক। এই সঙ্কট কতখানি তীব্র, তা বোঝাতে গিয়ে সোমবার জেটলি বলেন, ‘‘গত বছর রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির মোট কার্যকরী মুনাফা চোখে পড়ার মতো। ১ লক্ষ ৪০ হাজার কোটি টাকারও বেশি। কিন্তু অনুৎপাদক সম্পদ খাতে টাকা তুলে রাখতে গিয়ে পুঞ্জীভূত নিট লোকসান দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার কোটি।’’ এই পরিস্থিতি শোধরাতেই ব্যাঙ্কগুলির তরফ থেকে সমাধান-সূত্র জানতে চেয়েছেন তিনি।
এ দিন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির আর্থিক স্বাস্থ্য (বিশেষত অনুৎপাদক সম্পদ) পর্যালোচনা করতে তাদের কর্ণধারদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন জেটলি এবং অর্থ প্রতিমন্ত্রী জয়ন্ত সিন্হা। সেখানেই অর্থমন্ত্রীর প্রস্তাব, সাবধানী পথে হেঁটে কী ভাবে সময়ে শোধ না-হওয়া ধারের টাকা আদায় করা যায়, তার প্রস্তাব দিক ব্যাঙ্ক মালিকদের সংগঠন ইন্ডিয়ান ব্যাঙ্কস অ্যাসোশিয়েসন। জানাক, যে-সমস্ত ঋণের টাকা আর ফেরত পাওয়া যাবে না, তা নিয়ে কী ভাবছে তারা। যাতে সেই সব খতিয়ে দেখে সহযোগিতার হাত বাড়াতে পারে কেন্দ্র।
জেটলির প্রতিশ্রুতি, ঋণ খেলাপে রাশ টানতে ব্যাঙ্কগুলির হাতে বাড়তি ক্ষমতা দেওয়া হতে পারে। প্রয়োজনে চলতি অর্থবর্ষে বাজেট বরাদ্দ (২৫ হাজার কোটি টাকা) ছাপিয়ে মূলধন জোগাতেও কেন্দ্র তৈরি। তাঁর দাবি, ধীরে হলেও ঘুরতে শুরু করেছে অর্থনীতির চাকা। বৃদ্ধির হার মুখ তুলেছে। ইস্পাত, রাস্তা নির্মাণ, পরিকাঠামো-সহ বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে বহু প্রকল্প আটকে থাকায় এত দিন মোটা টাকা ধার দিয়েও তা ফেরত পেতে হিমসিম খেয়েছে ব্যাঙ্কগুলি। কিন্তু হালে ওই সমস্ত প্রকল্পেও কিছুটা গতি আসতে শুরু করায় ঋণ শোধেও তার সদর্থক প্রভাব পড়বে বলে আশাবাদী তিনি।
সংসদে পাশ হয়ে সম্প্রতি তৈরি হয়েছে নতুন দেউলিয়া আইন। অর্থমন্ত্রীর দাবি, শীঘ্রই তা কার্যকর হবে। যার হাত ধরে ব্যাঙ্কগুলির পক্ষে অনাদায়ী ঋণ ফেরত পাওয়া কিছুটা সহজ হবে বলে মনে করছে কেন্দ্র। কারণ, নতুন বিধিতে দেউলিয়া ঘোষণার প্রক্রিয়ায় অযথা দেরি হবে না। ঋণের ভারে ধুঁকতে থাকা কোনও সংস্থা সময়ে তা শোধ দিতে না-পারলে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে ১৮০ দিনের মধ্যে জানিয়ে দেওয়া হবে তাদের কী করণীয়। ফলে ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ থাকলে, দ্রুত তা পাবে সংশ্লিষ্ট সংস্থা। আবার তেমনই সেই আশা না-থাকলে, ধারের টাকা তাড়াতাড়ি ফেরত পাবে ঋণদাতারাও। সিন্হা বলেন, ঋণ খেলাপের সমস্যা যুঝতে আলাদা তহবিল তৈরির কথা ভাবছেন তাঁরা। এ বিষয়ে কথা বলছে ব্যাঙ্কগুলি। আটকে থাকা ধারের টাকা ব্যাঙ্কের ঘরে দ্রুত ফেরাতে কেন্দ্র সব রকম চেষ্টা করছে বলে দাবি তাঁরও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy