—প্রতীকী চিত্র।
চড়া গরমে নাজেহাল হচ্ছিল দেশ। অথচ পাখা বা এসি চালিয়ে মানুষের সেই হাঁসফাঁস দশা জুড়োবার জন্য যতটা বিদ্যুৎ দরকার ছিল, নিরবচ্ছিন্ন ভাবে সেই চাহিদা মেটানোর মতো জোগান ছিল না। ফলে বছর দুয়েক আগে প্রবল তাপপ্রবাহের মধ্যেই বিদ্যুৎ বিভ্রাটে বিপর্যস্ত হন দেশবাসী। মাথা তোলে ক্ষোভ। পরিস্থিতির থেকে শিক্ষা নিয়ে গত বছর সেই সঙ্কট থেকে বাঁচতে তড়িঘড়ি কয়লা আমদানি করে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিতে উৎপাদন বাড়ানো-সহ একাধিক পদক্ষেপ করতে নেমেছিল কেন্দ্র। এ বার গ্রীষ্মের বড় অংশ জুড়ে চলা সাধারণ নির্বাচনের মরসুমে বিভ্রাট রুখতে আরও তৎপর তারা। বিশেষ করে আবহাওয়া দফতর যেহেতু তাপপ্রবাহ নিয়ে সতর্কতা জারি করেছে। আর সেই কথা মাথায় রেখেই শনিবার দেশের সমস্ত গ্যাস ভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলিতে পুরোদমে কাজ চালু রাখার নির্দেশ দিয়েছে মোদী সরকার। তাদের ১ মে থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত টানা উৎপাদন চালাতে বলা হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, কেন্দ্রগুলির যতটা উৎপাদন করার ক্ষমতা রয়েছে, তার পুরোটা ব্যবহার করতে হবে বলেও জানানো হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, এ বছর বিদ্যুতে বিন্দুমাত্র ঝুঁকি নিতে চায় না কেন্দ্র। তাই বিদ্যুতের পূর্ণ চাহিদা মেটাতে জারি হয়েছে আরও কিছু নির্দেশ। যেমন, কয়লা আমদানি করে বিদ্যুৎ তৈরি হয় এমন কেন্দ্রগুলিতে পুরোদমে উৎপাদন করতে হবে। সমস্ত পক্ষকে নিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের কয়লা মজুত রাখার ব্যবস্থা করা জরুরি। এর পাশাপাশি, তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলির রক্ষণাবেক্ষণের কাজ পিছিয়ে বর্ষায় শেষ করার কথাও বলেছে সরকার। যাতে উৎপাদন বন্ধ রাখতে না হয়। জানানো হয়েছে, নতুন কেন্দ্রে উৎপাদন চালুর কাজে গতি আনা, তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র হঠাৎ বন্ধ হওয়ার ঘটনা কমিয়ে আনার কথা। এর বাইরে সংস্থার নিজস্ব প্রয়োজনে ব্যবহারের বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে উৎপাদিত বিদ্যুৎ কাজে লাগাতে এনার্জি এক্সচেঞ্জে তা বিক্রির ব্যবস্থা করা, প্রয়োজনে জল বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদন বাড়ানোর মতো পদক্ষেপের কথাও বলেছে কেন্দ্র।
গত সেপ্টেম্বরে দেশে রেকর্ড গড়ে বিদ্যুতের সর্বোচ্চ চাহিদা পৌঁছেছিল ২৪৩ গিগাওয়াটে। কেন্দ্রের অনুমান, আর্থিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পাওয়ায় ও চড়া উত্তাপের কারণে এই বছর এপ্রিল থেকে জুনে ওই চাহিদা পৌঁছতে পারে ২৬০ গিগাওয়াটে। তা মেটাতে যাতে সমস্যা না হয়, সেটাই নিশ্চিত করতে চাইছে সরকার। বর্তমানে বাণিজ্যিক কারণে ভারতে গ্যাস ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলির একাংশে কাজ বন্ধ রাখে সংস্থাগুলি। বিদ্যুৎ আইন ২০০৩-এর ১১ নম্বর ধারা অনুসারে (নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রে উৎপাদন করতে বলা যায়) কেন্দ্রের নির্দেশ, এই দুই মাস পুরোদমে উৎপাদন চালাতে হবে তাদের।
বিদ্যুৎ মন্ত্রক জানিয়েছে, কত দিন গ্যাস ভিত্তিক বিদ্যুৎ জোগাতে হবে, তা আগে থেকে গ্রিড ইন্ডিয়া জানাবে উৎপাদক সংস্থাগুলিকে। বণ্টনকারীর সংস্থার সঙ্গে যাদের বিদ্যুৎ বিক্রির চুক্তি (পাওয়ার পার্চেজ় এগ্রিমেন্ট বা পিপিএ) রয়েছে, তাদের কাছে আগে ওই বিদ্যুৎ বেচতে হবে। তা পুরো ব্যবহার না হলে তার পরে বাকিটা বাজারে বিক্রি করা হবে। যাদের সেই চুক্তি নেই, তাদের বিদ্যুৎ প্রথম থেকেই বাজারে বিক্রি করা হবে। এই পুরো বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের চেয়ারপার্সনের নেতৃত্বে কমিটি তৈরি করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy