কর্ণধার: সলিল সতীশ পারেখ। ছবি: পিটিআই।
জল্পনার অবসান। ১৮ অগস্ট বিশাল সিক্কার বিদায়ের পরে নতুন সিইও-এমডি হিসেবে সলিল সতীশ পারেখের নাম ঘোষণা করল ইনফোসিস। ২ জানুয়ারি থেকে পাঁচ বছরের জন্য ওই দায়িত্ব নেবেন তিনি।
অন্তর্বর্তী এমডি-সিইও ইউ বি প্রবীণ রাও কাজ চালিয়ে যাবেন চিফ অপারেটিং অফিসার তথা পরিচালন পর্ষদের সদস্য হিসেবে।
শনিবার এক বিবৃতিতে ইনফোসিসের নন-এগ্জিকিউটিভ চেয়ারম্যান নন্দন নিলেকানি বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের এই দ্রুত বদলের সময়ে সংস্থার হাল ধরতে পারেখই যোগ্যতম। ব্যবসা ঘুরিয়ে দাঁড় করানোতে প্রায় তিন দশকের অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। পারেখকে স্বাগত জানিয়েছেন সংস্থার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা এন আর নারায়ণ মূর্তিও। কিন্তু সংশ্লিষ্ট শিল্পের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ সব সত্ত্বেও ইনফোসিসের ক্যাম্পাসে পা রেখে বিস্তর চ্যালেঞ্জ সামলাতে হবে নতুন সিইও-কে।
পরিচিতি
• আইআইটি-বম্বে থেকে স্নাতক অ্যারোনটিকাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে
• কম্পিউটার সায়েন্স এবং মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতকোত্তর মার্কিন মুলুকের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে
• তথ্যপ্রযুক্তি পরিষেবায় প্রায় তিন দশকের অভিজ্ঞতা
• দীর্ঘ দিন কাজ করেছেন প্রযুক্তি উপদেষ্টা সংস্থা ক্যাপজেমিনিতে
• ইনফোসিসে আসার আগে ওই ফরাসি বহুজাতিকে ছিলেন গ্রুপ এগ্জিকিউটিভ বোর্ডের সদস্য
চ্যালেঞ্জ
• নন্দন নিলেকানির সঙ্গে হাত মিলিয়ে সংস্থার শীর্ষ নেতৃত্ব ও এন আর নারায়ণ মূর্তি-সহ প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে সুসম্পর্ক ফেরানো
• শেয়ারহোল্ডারদের আস্থা জয়
• ভিসা নিয়ে কড়াকড়ি আর নতুন প্রযুক্তির দৌলতে এ দেশে বদলাচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের ছবি। মোড় ঘোরাতে খুঁজে নেওয়া উদ্ভাবনী ব্যবসা
এক দিকে, ভিসা নিয়ে কড়াকড়ি। অন্য দিকে, তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের ভোল বদলে দেওয়ার মতো প্রযুক্তির (অটোমেশন, আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইত্যাদি) আবির্ভাব। এই সাঁড়াশি আক্রমণ সামলাতে উদ্ভাবনী ব্যবসার মডেল খুঁজতে হবে পারেখ-নিলেকানি জুটিকে। প্রতি মুহূর্তে এ নিয়ে পদত্যাগী কর্ণধার সিক্কার সঙ্গে তুলনা টানবেন শেয়ারহোল্ডাররা।
বড় চ্যালেঞ্জ হবে নারায়ণমূর্তি-সহ প্রতিষ্ঠাতাদের সঙ্গে সংস্থার শীর্ষ নেতৃত্বের সুসম্পর্ক ফেরানোও। মূলত যা টোল খাওয়ায় সরতে হয় সিক্কাকে।
অথচ ২০১৪-এ সিক্কার দৌলতে ইনফোসিসের ৩৬ বছরের ইতিহাসে ছেদ পড়েছিল প্রথম। নিয়ন্ত্রণ গিয়েছিল প্রতিষ্ঠাতা ছাড়া অন্য কারও হাতে। তিনি সরার পরে নন-এগ্জিকিউটিভ চেয়ারম্যান হিসেবে ‘ঘরের ছেলে’ নিলেকানি ফিরেছেন ঠিকই। কিন্তু সিইও-এমডি হিসেবে ফের এক বার বাইরের রক্তেই আস্থা রাখল সংস্থা।
সিক্কার আমলে মুনাফা বা শেয়ার দরের নিরিখে ফল খারাপ করেনি ইনফোসিস। সংস্থার খোলনলচে বদলেরও চেষ্টা করছিলেন তিনি। কিন্তু বারবার পরিচালনার অস্বচ্ছতা নিয়ে তাঁর দিকে তোপ দেগেছেন মূর্তিরা।
কখনও সিক্কার বিপুল বেতন বৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কখনও তোপ দাগা হয়েছে সামঞ্জস্যহীন দরে পানায়া অধিগ্রহণ নিয়ে। সংস্থা ছেড়ে যাওয়ার সময়ে প্রাক্তন সিএফও রাজীব বনসলকে আকাশছোঁয়া টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি নিয়েও তিক্ততা তৈরি হয়েছে। এই টানাপড়েনে শেয়ার দর ধাক্কা খেয়েছে। টোল খেয়েছে ভাবমূর্তি। অপেক্ষা করছে নতুন প্রযুক্তির আক্রমণ, ভিসা-কড়াকড়ি সামলানোর চ্যালেঞ্জও। এই অবস্থায় ‘চেনা মুখ’ নিলেকানির সঙ্গে বাইরের পারেখের যুগলবন্দির উপরই ভরসা রাখল ইনফোসিস।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy