প্রতীকী ছবি।
আগামী অর্থবর্ষের (২০২২-২৩) জন্য আয়-ব্যয়ের কার্যত তুল্যমূল্য হিসাব কষে রেখেছে রাজ্য। অর্থাৎ আয় যা, ব্যয়ও প্রায় তাই। এমনকি রাজ্যের নিজস্ব আয় এবং কেন্দ্রের অনুদান নিয়েও সেই খরচ সামলানো যে কার্যত অসম্ভব, তা মানছেন প্রশাসনিক কর্তারা। ফলে ধার করতেই হবে। এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার বিধানসভায় এফআরবিএম (ফিসকাল রেসপনসিবিলিটি অ্যান্ড বাজেট ম্যানেজমেন্ট) সংশোধনী বিল পাশ করলেন অর্থ দফতরের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। যেখানে খোলা রাখা হল রাজ্যের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের (জিএসডিপি) ৫% ঋণ নেওয়ার পথ। বহু বছর পরে আপৎকালীন খরচের তহবিল (কন্টিনজেন্সি ফান্ড) ২০ কোটি থেকে বাড়িয়ে ২০০ কোটি টাকা করার বিলটিও পাশ হয়েছে এ দিন।
এফআরবিএম প্রসঙ্গে বিধানসভায় চন্দ্রিমা বলেন, ‘‘আমরা আর্থিক শৃঙ্খলা মেনে চলছি। কতটা ঋণ নিতে পারি, তার প্রস্তাব করে রাখা হল। তার মানে এটা নয় যে পুরোটাই নেওয়া হবে।’’ তিনি জানান, সাধারণত, জিএসডিপি-র ৩% ঋণ নেওয়া হয়। কেন্দ্র এখন জানিয়েছে, সেই হার হবে ৩.৫%। মূলধনী খরচের জন্য নির্ধারিত আরও ০.৫% ঋণ নেওয়া যাবে। গত বছর ৫% ঋণ নেওয়ার সুযোগ থাকলেও, রাজ্য নিয়েছিল ৪% ঋণ। ফলে আগামী অর্থবর্ষে চাইলে বাকি এক শতাংশও ধার করতে পারবে রাজ্য। এই ভাবে মোট ৫% ঋণের পথ খোলা। তবে শর্তযুক্ত অতিরিক্ত আরও ০.৫% ঋণের সুযোগ থাকলেও, তাতে সায় নেই সরকারের। অর্থ দফতর সূত্রের খবর, ২০২১-২২ অর্থবর্ষে রাজ্যের প্রকৃত জিএসডিপি কত হল, তা শীঘ্রই হিসাব কষে চূড়ান্ত করবে কেন্দ্র।
এক ঝলকে
• খরচ সামলাতে মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের (জিএসডিপি) ৫% ধার নেওয়ার খোলা রাখল রাজ্য।
• আপৎকালীন খরচের তহবিল (কন্টিনজেন্সি ফান্ড) ২০ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে করল ২০০ কোটি টাকা।
• ২০১৮ সাল থেকেই কৃষিতে আয়কর মকুব করে রাখা হয়েছে। এ বার চা চাষেও এই নীতি কার্যকর হচ্ছে।
তবে রাজ্যের বাজেট নথি বলছে, ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে প্রায় ৭৩,২৮৬ কোটি টাকা ধার করতে হতে পারে। চলতি (২০২১-২২) আর্থিক বছরের সংশোধিত হিসাবে সেই অঙ্ক প্রায় ৬৭,৩৯৪ কোটি টাকা। এ দিন চন্দ্রিমা জানান, রাজ্যের নিজস্ব আয় ২০১০-১১ সালে ২১,১২৯ কোটির তুলনায় আগামী এপ্রিল থেকে শুরু হতে চলা অর্থবর্ষে হতে পারে প্রায় ৭৯,৩৪৭ কোটি টাকা। ওই সময়ে জিএসডিপি-র অনুপাতে রাজস্ব ঘাটতি কমে ১.৬৭% হবে। পাশাপাশি, রাজকোষ ঘাটতিও কমে ৩.৬৪% হওয়ার কথা। জিএসডিপি-র অনুপাতে ঋণ নেওয়ার হার ২০১০-১১ সালে যেখানে ছিল ৪০.৬৫%, সেখানে এখন তা ৩৪.২৩%। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আর্থিক অনুশাসন রাখছি বলেই এই উন্নতি।’’
এ দিন কন্টিনজেন্সি ফান্ডের সংশোধনী বিলও পাশ করেছে রাজ্য। এই খাতে আচমকা জরুরি খরচ ধরে রাখা হয়। মন্ত্রী বলেন, ১৯৮১ থেকে এ পর্যন্ত সেই তহবিলে ২০ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। সংশোধন করে তা-ই ২০০ কোটি করা হয়েছে। অর্থ কর্তাদের দাবি, এতে প্রশাসনিক কাজে সুবিধা হবে। ওড়িশায় এই তহবিলের অঙ্ক ২০০০ কোটি, মহারাষ্ট্রে ১৬৫০ কোটি, উত্তরপ্রদেশে ৬০০ কোটি এবং কর্নাটকে তা ৫০০ কোটি টাকা বলে জানান মন্ত্রী নিজেই।
২০১৮ সাল থেকেই কৃষি আয়কর মকুব করে রেখেছে রাজ্য। এখন চা চাষেও এই নীতি কার্যকর হচ্ছে। আগামী অর্থবর্ষের জন্য এই প্রস্তাবে বিধানসভার ছাড়পত্র নিল তারা। এতে বছরে ৯-১০ কোটি টাকা রাজস্ব ক্ষতি হতে পারে। এ ছাড়া, এখন থেকে রাজ্য সরকারই নির্দেশিকা দিয়ে প্রফেশনাল কর সংক্রান্ত মূল্যায়নের সময় বাড়াতে পারবে। রাজ্যকে ভ্যাট আইনের আওতায় সমস্যা মেটাতে নির্দিষ্ট আপিল কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হতে হয়। এ বার ১ কোটি টাকা পর্যন্ত সমস্যাগুলি মেটানোর আবেদন করা যাবে চলতি মাস শেষ হওয়ার আগে পর্যন্ত। এত দিন তা ছিল ২০ লক্ষ টাকার কম।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy