প্রতীকী ছবি।
প্রথমে অর্থনীতির দীর্ঘ ঝিমুনি, তার পরে করোনা। আর এই দুইয়ের ধাক্কায় গাড্ডায় পড়া গাড়ি শিল্প যখন বিক্রি বাড়ানোর রাস্তা হাতড়াচ্ছে, তখন পুরনো গাড়ি বাতিলের নীতি (স্ক্র্যাপেজ পলিসি) আনার কথা ঘোষণা করা হল বাজেটে। যে নীতির পক্ষে দীর্ঘ দিন ধরে সওয়াল করছিল সংস্থাগুলি। কিন্তু তার পরেও যতটা খুশি হওয়া উচিত ছিল ততটা হতে পারল না তারা। বরং দ্বিধা আর সংশয় রয়েই গেল। অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন সোমবার বাজেটে বলেছেন, পুরনো গাড়ি বাতিলের বিস্তারিত নীতি জানানো হবে পরে। সরকারের এ দিনের ঘোষণাকে স্বাগত জানালেও শিল্পের দাবি, এতদিন ধরে কমতে থাকা চাহিদার ক্ষত সারিয়ে নতুন গাড়ি বিক্রির পথ করে দিতে কিছু আর্থিক উৎসাহের দরকার ছিল। তার সুলুকসন্ধান এ দিন অন্তত দিতে পারেননি নির্মলা। আগামী দিনেও যে পারবেন, তার নিশ্চয়তাও আসেনি তেমন ভাবে। কারণ, নির্মলা পুরনো গাড়ি বাতিলের ‘স্বেচ্ছামূলক’ নীতি আনার কথা বলেছেন। কিন্তু আর্থিক সুবিধা না-থাকলে স্বেচ্ছায় এমন পদক্ষেপের ডাক কতটা নতুন গাড়ি কেনার আগ্রহ বাড়াবে, তা অনিশ্চিত।
গাড়ি শিল্পের একাংশের যুক্তি, একেই পুরনো গাড়ি বাতিলের নীতিটি ঠিক কী, তা এ দিন স্পষ্ট হয়নি। তার উপরে সম্প্রতি কিছু পুরনো গাড়ির ক্ষেত্রে দূষণ কর (গ্রিন ট্যাক্স) চাপানোর প্রস্তাব দিয়েছে কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রক। তাদের মতে, এ ধরনের শাস্তিমূলক পদক্ষেপে নতুন গাড়ি কেনার চেয়ে শাস্তির খাঁড়া এড়ানোই প্রাধান্য পায় গাড়ির মালিকের কাছে। ফলে তাঁরা নতুন গাড়ি কেনার উৎসাহ বোধ করতে না-ও পারেন।
কিছু দিন আগে সড়ক পরিবহণ মন্ত্রক বলেছে, দূষণ কমাতে কিছু গাড়িতে কর চাপানো হোক। ১৫ দিনের মধ্যে পুরনো গাড়ি বাতিলের নীতি আসবে বলেও জানান সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী নিতিন গডকড়ি। বলেন, এই নীতির আওতায় পড়বে এক কোটিরও বেশি গাড়ি। এই নীতির ফলে ১০ হাজার কোটি টাকার লগ্নি আসবে। ৫০ হাজার কর্মসংস্থান তৈরি হবে।
বাজেটে গাড়ি বাতিলের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন সংস্থাগুলির সংগঠন সিয়ামের প্রেসিডেন্ট কেনিচি আয়ুকায়া ও ডিলারদের সংগঠন ফাডার প্রেসিডেন্ট ভিঙ্কেশ গুলাটি। তবে প্রকল্প বিস্তারিত ভাবে না-দেখে এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
১৯৯০ সালকে ভিত্তিবর্ষ ধরে হিসেব কষে ফাডার দাবি, দেশে প্রায় ৩৭ লক্ষ বাণিজ্যিক এবং ৫২ লক্ষ যাত্রী গাড়ি পুরনো গাড়ির তালিকায় থাকার কথা। সেগুলির মধ্যে আবার ১০% বাণিজ্যিক আর ৫% যাত্রিবাহী গাড়ি রাস্তায় এখনও চলাচল করার সম্ভাবনা। তবে সিয়াম কর্তার দাবি, গাড়ির ‘ফিটনেস’ পরীক্ষা আরও আগে এবং ঘনঘন হওয়া দরকার।
শিল্পের একাংশের মতে, এ দিন ব্যক্তিগত ও বাণিজ্যিক গাড়ির ক্ষেত্রে অর্থমন্ত্রী যে সময়সীমার কথা বলেছেন, তা নতুন কিছু নয়। কিন্তু কীসের টানে একজন ক্রেতা সেই পথে হাঁটবেন তার ইঙ্গিত নেই। তা ছাড়া, পুরনো গাড়ি বাতিলের নীতি স্বেচ্ছামূলক না-হওয়াই ভাল। তাতে নতুন কেনার বাধ্যবাধকতা থাকে না। বাজেটে রাস্তা তৈরি এবং নতুন বাস কেনার প্রস্তাবে অবশ্য ব্যবসার সম্ভাবনা দেখছে তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy