ঐতিহাসিক: সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে লেজ়ার শো। ফাইল চিত্র —ফাইল চিত্র।
নির্বাচনের আগে বাংলার ঐতিহ্য রাজনৈতিক ক্ষেত্রে যতটা প্রাসঙ্গিক, বাস্তবেও কি ততটা?— সোমবার কেন্দ্রীয় বাজেট পেশের পর থেকে এমন চর্চাই শুরু হয়েছে বিভিন্ন মহলে।
বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, ঐতিহ্যের উত্তরাধিকার নিয়ে রাজনৈতিক দড়ি টানাটানি রয়েছে। কিন্তু যেটা নেই, তা হল ঐতিহ্য সংরক্ষণের উদ্যোগ। না হলে কেন কেন্দ্রীয় বাজেটে বাংলার ঐতিহ্য সংরক্ষণের জন্য একটি বাক্যও উচ্চারিত হবে না? যেখানে ধারাবাহিক ভাবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, স্বামী বিবেকানন্দ, সুভাষচন্দ্র বসু-সহ বাংলার মনীষীরা বার বার চলে আসছেন রাজনৈতিক আলোচনার বৃত্তে। এমনকি, গত সপ্তাহে সফরের সময়সূচি ঠিক হওয়ার শেষ মুহূর্তে নেতাজি ভবন জায়গা করে নেয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কলকাতা-সফরে। তার পরে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালেও সুভাষচন্দ্রকে নিয়ে বিশেষ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকেন তিনি। সেই অনুষ্ঠানে অবশ্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু তার পরেও বাজেটে বাংলার ঐতিহ্য ‘উহ্য’ থাকায় স্বাভাবিক ভাবেই তার মধ্যে রাজনৈতিক ‘অভিসন্ধি’ খুঁজে পাচ্ছেন অনেকে। এক রাজনৈতিক বিশ্লেষকের কথায়, ‘‘সুভাষ-জয়ন্তীর অনুষ্ঠানে জয় শ্রীরাম ধ্বনি দিয়ে ঐতিহ্য-সংস্কৃতিকে একদম বেআব্রু করে রাজনৈতিক বৃত্তে টেনে আনা হয়েছে। এ দিনের বাজেট সেটা আবারও প্রমাণ করল। সে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী যতই বাজেট-বক্তৃতায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উদ্ধৃতি ব্যবহার করুন না কেন!’’
যদিও সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫তম জন্মবার্ষিকীর সূচনার কারণে গঠিত কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তথা বিজেপি নেতা চন্দ্রকুমার বসু বলেন, ‘‘এটা তো দেশের বাজেট। সেখানে আলাদা করে বাংলার প্রসঙ্গ কেন আসছে, বুঝতে পারছি না।’’ কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন শাসক দলের প্রতিনিধিদের একাংশের আবার বক্তব্য, গত বছরই তো কলকাতা সফরে এসে ভারতীয় জাদুঘরের সংস্কারের কথা ঘোষণা করেছিলেন মোদী। সেই মতো ২০২০-’২১ অর্থবর্ষের বাজেটে জাদুঘর সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনও।
এ বারের বাজেট প্রসঙ্গে ন্যাশনাল কাউন্সিল অব সায়েন্স মিউজ়িয়ামের ডিরেক্টর জেনারেল তথা ভারতীয় জাদুঘরের ভারপ্রাপ্ত অধিকর্তা অরিজিৎ দত্তচৌধুরী বলেন, ‘‘বাজেটে উল্লেখ না থাকলেও আমরা কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের কাছে যা যা দাবি জানিয়েছি, তার পুরোটাই পূরণ হবে বলে আমাদের আশা।’’ জাদুঘর সূত্রের খবর, উন্নয়নের কাজের জন্য প্রায় ১৬ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে মন্ত্রকের কাছে। একই কথা বলছেন ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের কিউরেটর-সেক্রেটারি জয়ন্ত সেনগুপ্তও। তাঁর কথায়, ‘‘ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের শতবার্ষিকী উপলক্ষে যা যা অনুষ্ঠান হচ্ছে, সবই তো সংস্কৃতি মন্ত্রকের বরাদ্দকৃত অর্থেই।’’ যদিও রাজ্য হেরিটেজ কমিশনের চেয়ারম্যান শুভাপ্রসন্ন বলেন, ‘‘ঐতিহ্য রক্ষার জন্য সংবেদনশীলতা প্রয়োজন। কিন্তু কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন শাসক দলের প্রতিনিধিদের মধ্যে সংবেদনশীলতা কম। তাই বাংলার ঐতিহ্য রক্ষায় তাঁদের নির্দিষ্ট কোনও পরিকল্পনাও নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy