প্রতীকী ছবি।
৪জি চালুর অপেক্ষায় একের পর এক বছর ঘুরেছে বিএসএনএলের গ্রাহকদের। লাভ হয়নি। শেষ পর্যন্ত বিএসএনএল-কে চাঙ্গা করার পরিকল্পনা হিসেবে তার জন্য প্রয়োজনীয় স্পেকট্রাম দেওয়ার আশ্বাস দেয় কেন্দ্র। কিন্তু তার পরেও পেরিয়েছে বছরখানেক। স্পেকট্রাম মেলেনি। উল্টে সীমান্ত সংঘর্ষের জেরে চিনা যন্ত্রাংশে নিষেধাজ্ঞা বসায় বাতিল হয়েছে ৪জি পরিষেবা চালুর জন্য যন্ত্রাংশ কেনার দরপত্র প্রক্রিয়া। এই অবস্থায় প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে অন্য শাখা (সার্কল) সংস্থাগুলির মতো বিকল্প পথে নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় সীমিত ৪জি মোবাইল পরিষেবা চালুর পরিকল্পনা নিয়েছিল রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিকম সংস্থা বিএসএনএলের ক্যালকাটা টেলিফোন্সও (ক্যাল-টেল)। কলকাতা সংলগ্ন তিনটি জেলার একাংশে যা চালু হচ্ছে আগামী শুক্রবার।
প্রতিদ্বন্দ্বী বেসরকারি টেলি সংস্থাগুলি বহু আগেই ৪জি এনে যোজন এগিয়ে গেলেও, ২জি ও ৩জি-তে আটকে বিএসএনএল। তবে তাদের কিছু সার্কল ৩জি স্পেকট্রাম ব্যবহার করে সীমিত ভাবে গ্রাহকদের সেই পরিষেবা দিচ্ছে। এর ফলে ৩জি প্রযুক্তি বন্ধ হয়েছে সেখানে। তবে ২জি চলছে। ওয়েস্ট বেঙ্গল সার্কলও গ্যাংটকে একই পথে হেঁটেছে। এ বার তা অনুসরণ করবে ক্যাল-টেল।
ক্যালটেলের সিজিএম বিশ্বজিৎ পাল মঙ্গলবার জানান, কলকাতার মতো শহরে যেখানে টাওয়ারের ঘনত্ব বেশি, সেখানে ৩জি স্পেকট্রাম দিয়ে ৪জি চালুর প্রযুক্তিগত কিছু সমস্যা রয়েছে। তাই হাওড়া, হুগলি ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার কিছু এলাকাতেই শুধু ১০৭টি ৪জি টাওয়ার বসিয়ে ওই পরিষেবা আনছেন তাঁরা। কারণ, ওই সব এলাকায় এই পদ্ধতিতে এগোনো সহজ। কিন্তু স্পেকট্রাম না-পেলে সর্বত্র এ ভাবে ৪জি দেওয়া সম্ভব নয়। স্পেকট্রাম পাওয়ার আশায় ক্যাল-টেল আগেই এ জন্য কিছু যন্ত্রাংশ কিনেছিল। সেগুলিও এ বার সীমিত পরিষেবা দিতে কাজে লাগানো হচ্ছে।
পরিষেবা শুরু শুক্রবার
• উলুবেড়িয়া, গঙ্গারামপুর, সাঁকরাইল, অঙ্কুরহাটি, ডোমজুর, কুলগাছি, সিঙ্গুর, ডানকুনি, গোবরা, আমতলা, জুলপিয়া, বিবিরহাট, শিরাকোল, নোদাখালি, বিষ্ণুপুর পাথরবেড়িয়া, বজবজের মতো এলাকায় সীমিত ভাবে বিএসএনএলের শাখা ক্যালকাটা টেলিফোন্সের ৪জি পরিষেবা চালু হবে।
• ৩জি স্পেকট্রামের মাধ্যমেই তা দেওয়া হবে।
• ব্যবহৃত হচ্ছে আগে কেনা যন্ত্রাংশ।
• গ্রাহকদের নিখরচায় ৪জি সিম দিচ্ছে ক্যাল-টেল।
• ৩জি পরিষেবা বন্ধ হলেও, ২জি চালু থাকবে সেখানে।
• গোড়ায় কলকাতার গ্রাহকদেরও ৪জি পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ৩জি স্পেকট্রাম দিয়ে শহরে তা চালুর ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত সমস্যা রয়েছে।
বাধার মুখে ৪জি
• বাজারে প্রতিযোগীরা ৪জি পেরিয়ে ৫জি চালুর প্রস্তুতি নিলেও দৌড়ে যোজন পিছিয়ে বিএসএনএল।
• সংস্থার পুনরুজ্জীবন প্রকল্পের অঙ্গ হিসেবে কেন্দ্র স্পেকট্রামের আশ্বাস দেওয়ার পরে বছর ঘুরলেও তা মেলেনি।
• কেন্দ্র চিনা যন্ত্রাংশ ব্যবহার বন্ধের নির্দেশ দেওয়ায় বাতিল করতে হয়েছে প্রায় চূড়ান্ত হয়ে যাওয়া ৪জি-র যন্ত্রাংশ কেনার দরপত্র প্রক্রিয়া।
• অথচ দেশীয় যন্ত্রাংশে প্রয়োজনীয় মাপকাঠি সব ক্ষেত্রে মিলছে না।
• কেন্দ্র কবে বিএসএনএল-কে ৪জি স্পেকট্রাম ও যন্ত্রাংশ কেনার অনুমতি দেবে, ইঙ্গিত নেই কিছুরই।
যদিও প্রশ্ন উঠেছে, এমন বিক্ষিপ্ত ও সীমিত ৪জি পরিষেবা এনে সংস্থার কতটা লাভ হবে? বিশ্বজিৎবাবুর জবাব, আংশিক হলেও গ্রাহকেরা সংস্থার এই পরিষেবা যাচাইয়ের সুযোগ পাবেন। সব জটিলতা কাটিয়ে পুরোদস্তুর ৪জি চালুর আগে একে প্রস্তুতিও বলা যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy