দেশের বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের মধ্যে আর্থিক ও সামাজিক বৈষম্য ভয়াবহ ভাবে বাড়ছে। প্রতীকী ছবি।
ব্রিটেনকে পিছনে ফেলে সম্প্রতি বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতির জায়গা নিয়েছে ভারত। চোখ আপাতত ৫ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতি গড়ার লক্ষ্যে। কিন্তু তা সত্ত্বেও দেশের বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের মধ্যে আর্থিক ও সামাজিক বৈষম্য যে ভয়াবহ ভাবে বাড়ছে, তা-ও ফুটে উঠেছে উপদেষ্টা ও গবেষণা সংস্থাগুলির নানা সমীক্ষায়। সোমবার অক্সফ্যাম ইন্ডিয়ার রিপোর্টে জানানো হয়েছে, ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ, শ্রেণি এবং ভৌগোলিক এলাকার নিরিখে এই বৈষম্য উদ্বেগজনক ভাবে প্রতিফলিত হচ্ছে ডিজিটাল ক্ষেত্রেও।
২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত উপদেষ্টা সংস্থা সিএমআইই-র সমীক্ষা বিশ্লেষণ করে ‘ইন্ডিয়া ইনইকুয়ালিটি রিপোর্ট ২০২২: ডিজিটাল ডিভাইড’ তৈরি করেছে অক্সফ্যাম ইন্ডিয়া। ব্যবহার করা হয়েছে কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান মন্ত্রকের ন্যাশনাল স্যাম্পল সার্ভের রিপোর্টও। রিপোর্টে জানানো হয়েছে, ডিজিটাল প্রযুক্তির সুফল বেশিরভাগটাই পৌঁছচ্ছে পুরুষ, শহুরে নাগরিক, উচ্চ শ্রেণি এবং আর্থিক ভাবে সম্পন্ন মানুষ এবং পরিবারের কাছে। যেমন, সারা দেশে পুরুষদের মধ্যে ৬১% মোবাইল ফোন ব্যবহার করলেও, মাত্র ৩১% মহিলার হাতে তা পৌঁছেছে। তাঁরা ইন্টারনেটও ব্যবহার করেন পুরুষদের তুলনায় কম। সাধারণ শ্রেণির মানুষদের মধ্যে ৮ শতাংশের বাড়িতে কম্পিউটার রয়েছে। আর তফসিলি জাতি এবং জনজাতির ক্ষেত্রে তা যথাক্রমে ২% এবং ১%। গ্রামাঞ্চলে কম্পিউটার ব্যবহারের উপরে বিরূপ প্রভাব ফেলেছে অতিমারিও। রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, করোনার আগে গ্রামের ৩% নাগরিকের কম্পিউটার ছিল। তিন ঢেউ পার করে তা এখন নেমেছে ১ শতাংশে। উল্টো দিকে, শহরাঞ্চলের ৮% মানুষের বাড়িতে তা রয়েছে। এই প্রযুক্তির সুবিধা পাওয়া না পাওয়ার সঙ্গে আর্থিক অবস্থার যে প্রত্যক্ষ সম্পর্ক রয়েছে, তা-ও স্পষ্ট হয়েছে রিপোর্টে। স্থায়ী চাকরি করা বেতনভুক নাগরিকদের মধ্যে ৯৫ শতাংশের মোবাইল ফোন আছে। কর্মহীনদের মধ্যে তা ৫০%।
সম্প্রতি জি-২০ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, জিডিটাল প্রযুক্তির উন্নতি করতে হবে। তবে তার সুফল যেন অল্প সংখ্যক মানুষের মধ্যে আটকে না থাকে। এ দিন অক্সফ্যামের রিপোর্ট দেখে অনেকে বলছেন, সমস্যাটা হচ্ছে ঠিক সেখানেই। অক্সফ্যাম ইন্ডিয়ার সিইও অমিতাভ বেহর জানাচ্ছেন, মোবাইল ফোন না থাকা মানুষেরা অনেকাংশেই শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং সরকারি পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ডিজিটাল প্রযুক্তির সুবিধা পাওয়া মানুষদের থেকে পিছিয়ে পড়ছেন আরও। এই দুষ্টচক্রের আবসান হওয়া প্রয়োজন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy