গাড়ির ইঞ্জিন চালু হলেই পাক দিয়ে ওঠে পেট। বাসে, গাড়িতে চেপে যাত্রা করার প্রশ্ন উঠলেই বিপাকে পড়তে হয়। প্লাস্টিক, ওষুধ, জোয়ান নিয়ে বসলেও বিব্রত হতে হয় বার বার। সফর-সুখ উপভোগ করা থেকে বঞ্চিত হতে কারই বা ভাল লাগে? চটজলদি সমাধান খুঁজতে অনেকেই ভরসা করেন সমাজমাধ্যমের উপর। সেখানে নানা ধরনের টোটকার পরামর্শ দেওয়া হয়। সমাজমাধ্যমে ঘুরে বেড়ানো বেশ কিছু ‘রিল’-এ এই জাতীয় সমস্যার সমাধানের মধ্যে যোগাসনের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। দাবি, গাড়িতে উঠে বমি বমি পেলে শূন্য মুদ্রা (হাতের মধ্যমাকে নিয়ে এসে বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠের নীচের অংশে চেপে ধরার মুদ্রা) অভ্যাস করলেই নাকি উপকার মিলবে। কিন্তু আদৌ কি এই তত্ত্বে কোনও সত্য রয়েছে?
আনন্দবাজার ডট কম-কে যোগাসন প্রশিক্ষক অনুপ আচার্য জানালেন, সার্বিক ভাবে এই ধরনের টোটকা কখনওই কার্যকর নয়। শূন্য মুদ্রার উপকার অবশ্যই রয়েছে, কিন্তু তা কখনওই এমন ভাবে কাজ করে না।

খাবার হজম না হলে গাড়িতে বা বাসে উঠলে বমি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ছবি: সংগৃহীত।
যোগাসন প্রশিক্ষকের কথায়, ‘‘চলমান যানে উঠলেই অনেকের বমি পাওয়ার প্রবণতা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে অবশ্যই যোগ বেশ কার্যকরী। কিন্তু তার নির্দিষ্ট উপায় ও প্রশিক্ষণের প্রয়োজন রয়েছে। গাড়িতে উঠে অস্বস্তি বোধ হতেই হাতে যোগমুদ্রা করলে সব ঠিক হয়ে যাবে, এমন ভাবনা মোটেও সঠিক নয়। অনেক দিনের অনুশীলন, অভ্যাস, সাধনার পর এই টোটকা কার্যকরী হতে পারে, এক দিনে নয়। চটজলদি উপকার যোগাসনে নেই।’’
অনুপ আচার্য জানালেন, শূন্য মুদ্রা ছাড়াও আরও বেশ কয়েকটি উপায় রয়েছে, যার মাধ্যমে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। ভ্রামরী প্রাণায়ামেও মন ও শরীর শান্ত হয়। চন্দ্রভেদী প্রাণায়ামও এ ক্ষেত্রে উপকারী। পাশাপাশি, বদহজমের সমস্যাকে দূর করলেও অনেক ক্ষেত্রে সুবিধা হতে পারে। তাই যোগাসন প্রশিক্ষকের পরামর্শ, খাওয়াদাওয়ার পরে ২০০-৩০০ পা হেঁটে আসতেই হবে। না হলে খাবার হজম হবে না। বজ্রাসন, পবনমুক্তাসন করলেও হজমের সমস্যা থাকবে না। খাবার হজম না হলে গাড়িতে বা বাসে উঠলে বমি তো হবেই। এই প্রবণতা যাঁদের নেই, তাঁদেরও সমস্যা হতে পারে। আর যাঁরা এই সমস্যায় ভোগেন, তাঁদের জানালার ধারে বসানো উচিত।